বিশেষ প্রতিনিধি ॥
শীতের শেষে দেশে চলছে বসন্ত। এই বসন্ত প্রকৃতিতে যেন অপরূপ সৌন্দর্য ঢেলে দেয়। বসন্তের মনকাড়া সাজে রূপ নেয় প্রকৃতি। গাছের পাতা ঝরা এবং নতুন পাতা জন্মানোর পাশাপশি গাছে গাছে ফুঁটতে থাকে বাহারি রঙের ফুল।
ভোলার লালমোহন উপজেলাতেও লেগেছে বসন্তের ছোঁয়া। বসন্তের শুরু থেকেই এ উপজেলার আমগাছগুলোতে দেখা দিয়েছে স্বর্ণালী রঙের মুকুল। এসব আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরে উঠেছে আম গাছের আশপাশ।
আমের মুকুলে দল বেঁধে ছুটছে মৌমাছিরা। মুকুল থেকে সংগ্রহ করছে মধু। এমন দৃশ্য এখন লালমোহন উপজেলার প্রতিটি গ্রাম-গঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি ও বাগানে রোপণ করা আমগাছগুলোতে। যা দেখে মুহূর্তেই শীতল হয় মন-প্রাণ।
লালমোহনের গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতেই অন্যান্য গাছের সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে রোপণ করা আছে আম গাছ। সে সব গাছে এ বছর প্রচুর পরিমাণে মুকুল দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউপির চরমোল্লাজি এলাকার মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের বাগানে অন্যান্য গাছের সঙ্গে প্রায় ৩০টির মতো আম গাছ রয়েছে। এ বছর বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমের মুকুল অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। যে গাছগুলোতে আগে মুকুল এসেছে সেগুলোতে এখন গুঁটিগুঁটি ফল আসা শুরু করেছে।
অন্যদিকে উপজেলার রমাগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠের আঙিনায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি আম গাছ। যেগুলোতে শোভা পাচ্ছে স্বর্ণালী রঙের আমের মুকুল। এ দৃশ্য দেখলে মুহূর্তের জন্য মনে হবে সোনালী আর সবুজ রঙের মহামিলন। মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে আমগাছগুলো। মুকুলের সুবাসিত মৌ মৌ গন্ধে মাতাল হয়ে উঠেছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ক্যা¤পাস।
রমাগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য বর্ধণের জন্যই অন্যান্য গাছের সঙ্গে আম গাছগুলো রোপণ করা হয়েছে। প্রতি বছরই গাছগুলোতে আম ধরে। তবে এ বছর গাছগুলোতে অনেক মুকুল এসেছে। সব কিছুঠিক থাকলে আশা করছি আগের বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি ফলন হবে।
লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাড়ে চার হেক্টরের মতো জমিতে আম গাছ রয়েছে। এর মধ্যে কেউ কেউ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে চাষাবাদ করছেন। তবে অনেকেই পারিবারিক চাহিদার জন্য আম গাছ লাগিয়েছেন।
লালমোহনে রয়েছে স্থানীয়, আম্রপালি, বারি-৪, বারি-৮ এবং বারি-১১ জাতের আম। তবে আম্রপালি জাতের আমই বেশি এ উপজেলায়।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবু হাসনাইন বলেন, এসব আম চাষিদের বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলার আম গাছগুলোতে অনেক বেশি মুকুল এসেছে। তবে ঝড়-বন্যায় অনেক আম ঝরে যায়। আবহাওয়া ঠিক থাকে এ বছর লালমোহন উপজেলার আম চাষিরা ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০:০৫:৫৩ ১২৭ বার পঠিত