মোঃ বেল্লাল নাফিজ ॥
দালালদের প্রত্যারণায় পা দিয়ে মালেশিয়ায় দীর্ঘদিন বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চার প্রবাসী যুবক। তাদের জীবন এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। পড়াশোনা শেষে দেশে যখন বেকার সময় কাটাচ্ছেন ঠিক তখন অসচ্ছল পরিবারের অর্থনৈতিক হাল ধরতে বিদেশে পারি জমান। গত ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে দালালের মাধ্যমে মালেশিয়া যাওয়ার জন্য ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে টাকা প্রদান করে। কিন্ত দালালরা ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেওয়ার পরেও বিভিন্ন খাত দেখিয়ে কাগজপত্র আটকিয়ে প্রায় ৬ লাখ পযর্ন্ত হাতিয়ে নেয়। দালালরা পেট্রোল পা¤েপর কাজ এবং মোটা অঙ্কের বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় একবুক স্বপ্ন নিয়ে আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা ও বাড়ীর জমি বন্ধক রেখে টাকা দিয়েছে পরিবারগুলো। কিন্তু দালালদের প্রতারণায় অনিশ্চয়তায় তাদের আগামী ভবিষ্যৎ। দীর্ঘদিন একটি রুমে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন বলে জানান তাদের মাধ্যে থাকা নোমান নামের এক ভুক্তভোগী প্রবাসী।
তিনি আরো জানান, চরফ্যাশন উপজেলার দালাল সোহাগ তালুকদার পেট্রোল পা¤েপ কাজ দিবে বলে মালয়েশিয়ায় আনেন। প্রথমে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা যুক্তি হলেও ৬ লাখ টাকা নেওয়ার পরেও মালেশিয়ায় আনার ৬ মাসের মধ্যে কোন কাজ দিতে পারেননি। এবং পাসপোর্ট আটক থাকায় অন্যত্র কাজও করতে পারেনি। ফলে বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে খেতে হয়েছে তাদের। ৬ মাস পরে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে এক মাসে ১৬ দিন কাজ দিলেও বেতন বাতা দেয়নি। বেতন চাইলে শারীরিক নির্যাতন ও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এই ভুক্তভোগী আরো জানান, বর্তমানে কোন কাজ না থাকায় ছোট্ট একটি রুমে ৪০ জন প্রবাসীকে বন্দী করে রেখেছে মালেশিয়ায় থাকা দালালদের এক জিম্মাদার। বর্তমানে থাকা খাওয়াসহ ভীষণ বিভীষিকাময় জীবন অতিবাহিত করছেন তারা। মাথার নিছে ইট দিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে তাদের। এদিকে তাদের পরিবারের ধারদেনার টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় মানসিক দুর্শ্চিন্তায় ঘরবাড়ী ছাড়া পরিবার। পরিবার থেকে দালালদেরকে চাপ দিলে মালেশিয়ায় এই চার যুবককে মেরে ফেলার হুমকি, শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন করার অভিযোগ করেন তারা। এজন্য ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
অন্যান্য ভুক্তভোগীরা হলেন, নোমান দিদার, মোঃ মাকসুদর রহমান, মোঃ শাখাওয়াত হাওলাদার ও মোঃ সিরাজ হোসেন। তারা সবাই চরফ্যাশন উপজেলার বাসিন্দা।
অভিযুক্ত দালাল সোহাগ তালুকদার চরফ্যাশন উপজেলার চেয়ারম্যান বাজার হাজারীগঞ্জ ৩নং ওয়ার্ডের সেলিম তালুকদারের ছেলে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত দালাল সোহাগ তালুকদার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বর্তমানে মালেশিয়ার প্রবাসীদের কাজের সংকটের কারণে তাদের কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাদের শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি এড়িয়ে ফোন কেটে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১:৩৮:৪৪ ২২৮ বার পঠিত