ভোলায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে: বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » ভোলায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে: বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন
বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১



---

ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক ভাবে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভোলায় ২৪ ঘন্টায় ৩৪৪ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এসব আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভোলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেকসে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতাল সমূহে বেড সংকটের কারণে এদের অনেককে মেজে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অনেককেই সেলাইন দিতে হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। এমনিতেই বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেকসের অবস্থা আশানুরূপ নয়। তার উপরে রয়েছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নার্স ও স্টাফ এর অভাব। অন্যদিকে হাসপাতালসমূহে করোনা মহামারী নিয়েও যথেষ্ট ব্যস্ততা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এসব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সমূহে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসক-নার্স স্টাফরা হিমশিম খাচ্ছে।
উপকূলীয় এলাকা সমূহে ডায়রিয়া একটি প্রাচীনতম রোগ। অতীতকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাতো। ডায়রিয়া এবং কলেরায় এসব এলাকার শিশু, নারী এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল। বর্তমানে সে অবস্থা নেই। স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নয়নের ফলে ডায়রিয়া এখন নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে। এতদসত্ত্বেও ডায়রিয়াকে অবজ্ঞা করার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া বর্তমানে করণা সংকটের সময়ে করোনার একটি সিমটম হিসেবে ডায়রিয়া অনেক সময় দেখা দিতে পারে। তাই বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। আমরা জানি আমাদের হাসপাতালসমূহের চিকিৎসা খুব একটা মানসম্মত নয়।
তারপরও বিপদে পড়লে আমাদের সকলকেই হাসপাতালের শরণাপন্ন হতে হয়। বিশেষ করে জেলা শহর কিংবা উপজেলা শহর অথবা গ্রামের জনগণের প্রধান ভরসা হচ্ছে হাসপাতাল। রাজধানী কিংবা বড় বড় শহরে টাকার বিনিময়ে মানসম্মত ক্লিনিক অথবা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ভোলার মত জেলা কিংবা বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে জনগণকে ভালো চিকিৎসা নেই জেনেও হাসপাতালে যেতে হয়। আমরা জানি ভোলা সদর হাসপাতালে ২৫০ বেড এর হাসপাতাল এখনো উদ্বোধন হয়নি। চিকিৎসক, নার্স এবং স্টাফ সংকটের মধ্য দিয়ে নানা অব্যবস্থ্যা মধ্যে চলছে হাসপাতাল সমূহ। এমতাবস্থায় ডায়রিয়ার চাপ সামাল দেয়া যথেষ্ট কঠিন কাজ। আমরা আশা করবো ভোলা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তড়িৎ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতা নিয়ে ডায়রিয়া পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
শুধু ডাক্তার হাসপাতাল আর চিকিৎসকদের দিকে তাকিয়ে থাকলেই চলবে না। জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতার খুবই প্রয়োজন। ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ। বিশুদ্ধ পানি পান করা সবার একান্ত প্রয়োজন। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সর্তকতা ডায়রিয়া প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি দরকার। অতীতে চৈত্র বৈশাখ মাসেই ডায়রিয়া / কলেরা বেশি হতো।
তাই এ সময়ে খাওয়া দাওয়া পানাহারের বিষয়ে আমাদের সকলের সতর্ক হওয়া উচিত। কোনভাবে ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে ওর স্যালাইন খাওয়ানো প্রয়োজন। নিকটবর্তী চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করে তড়িত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজন বোধ করলে রোগীকে হাসপাতালে নেয়া উচিত। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও ডায়রিয়া পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্রসহ সকল ব্যবস্থা মজুদ রাখা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগ সমূহ বিশেষভাবে নজর দেবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৩:০৫   ৩১৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ