বিশেষ প্রতিনিধি ॥
ভোলার লালমোহন উপজেলায় শেষ মুহূর্তে আলু ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এ উপজেলার কৃষক ঘরে তুলতে পারবেন তাদের চাষাবাদকৃত আলু। এজন্য সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কৃষক ক্ষেতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নিয়ম করে খোঁজ নিচ্ছেন ক্ষেতে কোনো পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়েছে কিনা।
জানা যায়, এ বছর লালমোহনে চারশ’ পঁচিশ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। যেখানে রয়েছে ডায়মন্ড ও সানসাইন জাতের আলু। তবে অধিকাংশ চাষি ডায়মন্ড জাতের আলু চাষ করেছেন। এ বছর উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ, লর্ডহার্ডিঞ্জ, বদরপুর ও ফরাজগঞ্জ ইউপির কৃষকরা সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ করেছেন। আগামী ২০ দিনের মধ্যে কৃষক তাদের চাষাবাদকৃত আলু পুরোপুরিভাবে ঘরে তুলতে পারবেন।
লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউপির পাঙাশিয়া গ্রামের আলু চাষি মো. বাবুল বলেন, গত বছর এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছি। গত বছর ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর জমির পরিমাণ বাড়িয়েছি। এ বছর এক একর জমিতে আলুর চাষ করেছি। এসব আলু ক্ষেত থেকে তোলা পর্যন্ত প্রতি ৮ শতাংশ জমিতে আট থেকে ১০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে। তবে আশা করছি, খরচের দ্বিগুণ টাকায় আলু বিক্রি করতে পারবো। এতে করে এ বছর মোটামুটি ভালোই লাভবান হবো।
ঐ ইউনিয়নের শিমুলতলা এলাকার আলু চাষি মো. মোতাহার জানান, বাজারে আলুর অনেক চাহিদা। দামও অনেক ভালো। যার জন্য এ বছর এক একর জমিতে আলুর চাষ করেছি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ক্ষেত থেকে আলু তুলতে পারবো। আল্লাহর রহমতে এবার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। শেষ সময়ে ক্ষেতের ব্যাপক পরিচর্যা করছি। প্রতিদিন দেখি; কোনো পোকা-মাকড় আক্রমণ করেছে কিনা। এবার আলু থেকে ভালো লাভবান হওয়ার আশা রয়েছে।
ঐ এলাকার মো. আব্দুল গণি নামে আরেক চাষি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই আলু চাষ করছি। বিগত কয়েক বছর ধরে বাজারে আলুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গত বছর দেড় একর জমিতে আলু চাষ করলেও এ বছর বাড়িয়েছি জমির পরিমাণ। এবার দুই একরের মতো জমিতে আলুর চাষ করেছি। প্রতি আট শতাংশ জমিতে আলু তোলা পর্যন্ত বীজ, শ্রমিক, চাষাবাদ এবং ওষুধসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রায় ৯ থেকে ১১ হাজার টাকার মতো ব্যয় হবে। তবে বাজারে বিক্রি করলে ব্যয়ের দ্বিগুণ মূল্যে আলু বিক্রি করতে পারবো। ক্ষেতে ফলন ভালোই দেখছি, সবকিছু ঠিক থাকলে আল্লাহর রহমেত আশানুরূপ লাভবান হবো।
লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু হাসনাইন জানান, এ বছর কৃষকদের ক্ষেতে আলুর ভালো ফলন হয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষকরা পুরোপুরিভাবে পরিপক্ব আলু ঘরে তুলতে পারবেন। আমরা শুরু থেকেই এসব আলু চাষিদের নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তাদের কোনো সমস্যায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে এ বছর লালমোহন উপজেলার আলু চাষিরা ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৬:০৮ ১৪৬ বার পঠিত