নিয়মকানুন মেনে ভোলাসহ উপকূলীয় নৌ-যোগাযোগ চালু করা হোক

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » নিয়মকানুন মেনে ভোলাসহ উপকূলীয় নৌ-যোগাযোগ চালু করা হোক
রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১



---

দেশব্যাপী কঠিন লকডাউন ঘোষণা করার পরে আস্তে আস্তে সবকিছু ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। প্রথমে শিল্প কারখানা থেকে শুরু করে দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবকিছুই এখন সমানে চলছে। দূরপাল্লার বাস ও দু’এক দিনের মধ্যে ছেড়ে দেয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু উপকূলীয় অঞ্চলের একমাত্র যোগাযোগ, ভোলার মত বিচ্ছিন্ন নদীবেষ্টিত অঞ্চলের একমাত্র বাহন লঞ্চ চালু সম্পর্কে কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না।
লকডাউনের শুরু থেকে ঢাকা ভোলার লঞ্চ যোগাযোগসহ উপকূলীয় অঞ্চলের নৌ-চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। দূরপাল্লার বাস ট্রেন বন্ধ থাকলেও কেটে কেটে আন্তঃউপজেলা আন্তঃজেলা বাস ও অন্যান্য যানবাহনের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ঠিকই চলেছে। মানুষের যাতায়াতে একটু ভোগান্তি ও কষ্ট হলেও বন্ধ হয়নি। কিন্তু দেশের মূল ভূখন্ড থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জেলা ভোলার লঞ্চ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলার সাথে ভোলার যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে রয়েছে। কিছু মালবাহী ট্রাক ও সীমিত আকারে ফেরি চলাচলের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে ট্রাক আসা যাওয়া থাকলেও মানুষের তথা যাত্রীদের চলাচল বন্ধ রয়েছে। এবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রাইভেটকার কিংবা মাইক্রোতে এক স্থান থেকে আসা যাওয়া সম্ভব ছিল না। ভোলার অনেক নারী, শিশু, অসুস্থ ঢাকায় গিয়ে আটকে পড়েছে। তারাও লঞ্চ যোগাযোগ বন্ধ থাকার কারণে আসতে পারেনি। ফলে বহু পরিবার নানাভাবে ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। এমনিতেই করোনা মহামারীতে সবাই চিন্তা ভাবনা ও নানা টেনশন এর মধ্যে রয়েছে। আর যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার ফলে পরিবারের সদস্যদের দূরে রেখে অনেক পরিবারই এখন নানা ধরনের টেনশন ও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে বাস্তবে হিসাব করলে দেখা যাবে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো না কোনোভাবে চালু থাকলেও ভোলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। অর্থাৎ ভোলার তথা উপকূলের মানুষই এই লকডাউনে সবচেয়ে বেশি অচলাবস্থার মধ্যে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এখন আস্তে আস্তে সবকিছু ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। তবে এখনও লঞ্চ সম্পর্কে সরকার, প্রশাসন কিংবা কোনো পক্ষ থেকে কিছুই বলা হচ্ছে না। ফলে উপকূলবাসীরা এক ধরনের টেনশন ভোগ করছেন। আমরা মনে করি যেহেতু সীমিত আকারে সবকিছুই ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় লঞ্চ বন্ধ করে দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলের মানুষদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখাটা যুক্তিসঙ্গত নয়। এমতাবস্থায় ভোলাসহ দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের নৌ-যোগাযোগ চালু করা একান্ত প্রয়োজন। একটি বিষয় এখন আমাদের সামনে পরিষ্কার যে করোনাকে সাথে নিয়েই জীবন যাপন করতে হবে। এ মুহূর্তে করণা নির্মূল করা সম্ভব নয়। কাজেই করোনার অস্তিত্ব থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করে নিজেদের দৈনন্দিন কাজ সমূহ চালিয়ে যেতে হবে। তাই লঞ্চসহ জলযান সমূহ কিভাবে চলবে, তাদের প্যাসেঞ্জার কতটুকু দূরত্ব রেখে বহন করবে, মাস্ক-স্যানিটাইজারসহ প্রয়োজনীয় প্রটেকশন বাধ্যতামূলক করে এসব যানবাহন চালু করার জন্য সরকারের কাছে আমরা বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। তবে যানবাহন চালু করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে সচেতন থাকতে হবে। যাতে সামাজিক দূরত্ব এবং করোনা প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা সমূহ পরিপূর্ণভাবে যাত্রীরা মেনে চলতে বাধ্য হয়। পরিবহন সংস্থাগুলোকেও এজন্য কঠিন নির্দেশনা ও মনিটরিং এর মধ্যে রেখে অবিলম্বে লঞ্চসহ নৌযোগাযোগ চালু করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫০:১৮   ৩৩৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ