প্রসঙ্গঃ কিশোর গ্যাং অপরাধী চক্রের নতুন নাম

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » প্রসঙ্গঃ কিশোর গ্যাং অপরাধী চক্রের নতুন নাম
সোমবার, ২১ জুন ২০২১



রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা এমনকি উপজেলা পর্যায়ে নতুন নামে অপরাধ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ‘কিশোর গ্যাং’ হিসেবে খ্যাত এরা সুসংগঠিতভাবে অপরাধ চালায়। তাদের বয়স ১৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে। প্রায় সবাই কিশোর। এরা সংগঠিতভাবে বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ন ভিন্ন ধরনের অপরাধ কার্যক্রম সংঘটিত করছে। পুলিশের তদন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকা শহরে ৭৮ কিংবা তারও বেশী ‘কিশোর গ্যাং’ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মিরপুর থানা এলাকায়। শুধু মিরপুরেই আঠারোটি কিশোর গ্যাং এর অস্তিত্ব পুলিশের তদন্তে উল্লেখিত রয়েছে। এদের অপরাধ কার্যক্রম এত ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে যে সারা দেশের মানুষ দিন দিন এদের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাই, মোবাইল ছিনতাই, মানি ব্যাগ ছিনতাই থেকে শুরু করে নানা ধরনের কার্যক্রম মারপিট মানুষকে আহত করা, এমনকি খুন খারাবী পর্য্যন্ত কিশোর কিশোর গ্যাং দের দ্বারা সংগঠিত হচ্ছে। এরা অনেকেই মাদকাসক্ত এবং মাদক সরবরাহ এরা ভূমিকা রাখছে বলে জানা গেছে। অপরাধ কার্যক্রমে এরা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রো ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকে। সব এলাকায়ই এরা কোনো না কোনো ‘ভাই’ দ্বারা পরিচালিত হয়। অর্থাৎ এলাকার কোনো রাজনৈতিক মুরুব্বি দ্বারা পরিচালিত হয়। রিং লিডার হিসেবে ‘ভাই’ তাদেরকে বিভিন্ন অপরাধের কাজে ব্যবহার করে। কোন কোন জায়গায় এদের দ্বারা জমি দখল, কাউকে আহত-নিহত করা, লুটপাট ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কাজ সংঘটিত হয়।
করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে যেসব শিশু-কিশোররা স্কুলে সময় কাটাতো তারা এখন নানাভাবে এ ধরনের কিশোর অপরাধ তথা কিশোর গ্যাং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত করছে। ফলে গত বছর দুয়েক যাবত এদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বেড়েই চলছে। আগে যা শুধু রাজধানী ঢাকায় সীমিত পর্যায়ে ছিল, এখন সারা দেশেই কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি হচ্ছে এবং বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।
আমরা মনে করি এই কিশোর অপরাধী চক্র আরো বিস্তৃত ও ভয়াবহ হওয়ার আগেই এদেরকে নির্মূল করা প্রয়োজন। অপরাধকারীরা যেহেতু নতুন আঙ্গিকে, নতুন অবয়বে আসছে সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তা মোকাবিলার জন্য ও সঠিক সমাধানের রাস্তা বের করা। শুধু ধরপাকড় আর জেল দিয়ে এসব অপরাধ দূর করা যাবে না। বরং জেলে গিয়ে এরা আরো দাগি আসামি হয়ে বের হয়ে ভবিষ্যতে সমাজ-সভ্যতার আরো ক্ষতি বেশী ক্ষতি করবে। তাই এদেরকে অপরাধমুক্ত করার জন্য এবং মূল ধারার সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা প্রয়োজন। এসব অপরাধের জন্য একদিকে কঠোর শাস্তি অন্যদিকে অপরাধীদের সংশোধন দুটাই থাকা উচিত। সে জন্য কি করা দরকার সরকারকেই সেটা বের করতে হবে। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। এইসব বখে যাওয়া ছেলেদেরকে সুপথে আনার জন্য সরকার তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৭:৩৫   ৪০৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ