নারায়ণগঞ্জে সেজান জুস ফ্যাক্টরীতে অগ্নিকাণ্ড: ভোলায় নিখোঁজ ৫ পরিবারের শোকের মাতম

প্রচ্ছদ » জেলা » নারায়ণগঞ্জে সেজান জুস ফ্যাক্টরীতে অগ্নিকাণ্ড: ভোলায় নিখোঁজ ৫ পরিবারের শোকের মাতম
শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১



আদিল হোসেন তপু ॥
নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জে সেজান সুজ ফ্যাক্টরীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ভোলার ৫ শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছে। দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হওয়া ওইসব শ্রমিকের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। নিখোঁজ হওয়া শ্রমিকদের গত ৩ দিনেও সন্ধান মেলেনি। তবে এ ৫ শ্রমিকের কারখানার চতুর্থতলায় কাজ করছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে তাদের পরিবার। নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধ্যান পেতে পরিবারের লোকজনের আহাজারীতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। তাদের সন্ধ্যানে ওই ফ্যাক্টরীর সামনে স্বজনকে খুজে বেড়াচ্ছে। সেদিন তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা এখনও জানেনা নিখোঁজদের পরিবার। তারা বেঁচে আছেন কিনা তাও জানা নেই উপজেলা প্রশাসনের। তবে উপজেলা প্রশাসন বিষয়টির সার্বিক খোজ-খবর নিচ্ছে।

---

নিঁখোজ ৫ শ্রমিক হলেন, চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামের গোলামের ছেলে মো. মহিউদ্দিন, মজিবনগর ইউনিয়নের চর কলমী গ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে শামীম, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের আমিনাবাদ গ্রামের ফজুলের ছেলে হাসনাইন (১২) এবং একই বাড়ির কবিরের ছেলে রাকিব (২৮) এবং এওজাহপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের আ: মান্নানের ছেরে নোমান। এরমধ্যে হাসনাইন এবং রাকিব সেমাই প্যাকেটজাত করনের কাজ করতো। আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আল এমরান প্রিন্স জানান, রাকিব ও হাসনাইন নিহত হয়েছে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা তখন (দুর্ঘটনার দিন) কারখানার চতুর্থতলায় কাজ করছিলেন। এদিকে নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিবারে চলছে কান্না-আহাজারি। ছেলের কথা বার বার মনে করে কান্না ভেঙ্গে পরছেন স্বজনরা।
দুর্ঘটনার পর থেকে ওই সব পরিবারে যেন চলছে শোকের মাতম। কেউ সন্তান, কেউ বা ভাই হারিয়েছেন। কারখানায় কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ শ্রমিকদের দরিদ্র পরিবারগুলো যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
নিখোঁজ মহিউদ্দিনের ভাই সালাহউদ্দিন জানান, আমার ভাই মহিউদ্দিন ও খালাতো ভাই শামীম ৫ বছর ধরে চট্টগ্রামের বনফুল ফ্যাক্টরীতে কাজ করতো। করোনার কারণে সেখান থেকে বাড়িতে চলে আসে। সেজান জুস ফ্যাক্টরীতে কর্মরত এক কলিকের পরিচয় ধরে দেড় মাস আগে এই ফ্যাক্টরীতে চাকরী নেয়। দুর্ঘটনার দিন তারা দুজন সেইখানে ২য় ও ৪র্থ তলায় কাজ করছিলো। আগুন লাগার ঘটনার দিন আমার ভাইকে ফোন দিলে সে ফোন রিসিভ করেনি। শামীমের ফোন বন্ধ ছিলো। এখনও তাদের কোন খোঁজ মেলেনি। ৩ দিন ধরে আমরা তাদেরকে খুজে বেড়াচ্ছি। কারখানা বন্ধ থাকায় এখনো আমার দুই ভাই বেচে আছে কি না মারা গেছে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।
নিখোঁজ হাসনাইনের বাবা ফজলু সেলফোনে জানান, তার ছেলে (হাসনাইন) ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো। কারিগর রাকিবের সহকারি হিসাবে ওই ফ্যাক্টরীর চতুর্থ তলায় কাজ করতো। দুর্ঘটনার দিনও তারা কারখানায় অবস্থান করেছিলো। কান্নাজড়িত কন্ঠে ফজলু বলেন, গত বুধবার ছেলের সাথে সেলফোনে শেষ কথা হয়েছিলো। সে বলেছিলো (হাসনাইন) বাবা ৬ দিন পরেই বাড়িতে চলে আসবো। কিন্তু আমি তাকে (হাসনাইকে) বলেছি লকডাউনের মধ্যে আসার দরকার নেই, তুমি তোমার মামার বাড়িতে থাকো। আমি সেখানে ফোন করে দিবো। এরপর আর ছেলে সাথে কথা হয়নি। আমার একমাত্র ছেলে। সে ৩ তৃতীয় শ্রেণীর পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। ছেলে তো আর ফিরে এলো না। আমি এখন কি নিয়ে থাকবো। আমার তো সব শেষ হয়ে গেছে।
জানতে চাইলে চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ৫ জনের নাম-ঠিকানা পেয়েছি, তারা সবাই চরফ্যাশন উপজেলা বাসিন্দা এবং দুর্ঘটনা কবলিত কারখানার শ্রমিক ছিলেন। তবে তাদের এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আমার ঢাকায় সার্বক্ষনিত যোগাযোগ রাখছি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২২:২৯   ৩৭৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


তজুমদ্দিনে সীমানা বিরোধের মামলায় ॥ ২১ বছর নির্বাচন বন্ধ মলংচড়া ইউনিয়নে
এবারও নির্বাচিত হলে আগের অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করবো: মোশারেফ হোসেন
জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ: মোহাম্মদ ইউনুস
ভোলায় দুর্যোগের সম্মুখিন হওয়া মানুষদের বাদ দিয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়: জেলা প্রশাসক
লালমোহনে ১২৬ কোটি টাকার বোরো ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা
আনারস ও চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোশারেফ- আজিজের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ
মটরসাইকেল ও উড়োজাহাজ মার্কায় ভোট চাইলেন ইউনুছ-পলাশ
ঝড়ে পড়ে যাওয়া মাদরাসা ঘর এক মাসেও মেরামত হয়নি
বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি সেলিম আর নেই
তজুমদ্দিনের মেঘনায় চিংড়ি মাছের রেনু আহরনের আড়ালে চলছে নানান প্রজাতির মাছের পোনা নিধন



আর্কাইভ