বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন ভাগাড়: দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ রোগী ও স্বজন

প্রচ্ছদ » অপরাধ » বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন ভাগাড়: দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ রোগী ও স্বজন
শনিবার, ৭ আগস্ট ২০২১



বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি ॥
ভোলার বোরহানউদ্দিনের ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে জনবল সংকটের কারণে প্রায় ২ লাখ লোকের যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা মিলছে না। ১ সপ্তাহে প্রায় ১০০ করোনা রোগী শনাক্ত হলেও হাসপাতালে কোভিড বিশেষায়িত ইউনিট নেই। আশঙ্কাজনক রোগীদের ভোলা সদর হাসপাতাল বা বরিশালে পাঠানো হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সহসাই পুরুষ ওয়ার্ডটিকে কোভিড রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৩টি অকসিজেন সিলিন্ডার তাদের কাছে মজুত আছে।
হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, সংক্রমণের সময় ৪ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ৭-৮ জন নার্স ও ৮-৯ জন স্টাফ আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসাবে তাদের অনুকূলে সরকারিভাবে কোনো প্রণোদনা আসেনি। হাসপাতালে প্রায় ১০ বছর আগে পাওয়া এক্স-রে মেশিন রেডিওগ্রাফারের অভাবে সেবা দেওয়ার আগেই মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে।

---

প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে তিনজন টেকনোলোজিস্টদের মধ্যে কাগজে-কলমে আছে একজন। তাও তিনি প্রেসণে (ডেপুটেশনে) ভোলা সদর হাসপাতালে পিসিআর ল্যাবে কর্মরত। প্যাথলজিক্যাল ল্যাব একজন ল্যাব এসিস্ট্যান্ট দিয়ে করোনা শনাক্তের পাশাপাশি রোগীদের নিয়মিত পরীক্ষা কোনো রকমে চলছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ পাশে দ্বিতল হাসপাতাল ভবনের সঙ্গে লাগোয়া উঁচু ময়লার ভাগাড় থেকে ময়লা উপচে পড়ছে। ওই স্থানে ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের অ্যা¤পুল, স্যালাইনসহ অন্যান্য বর্জ্য। ওই সময় আশপাশে বেশ কয়েকজনকে প্রশ্রাব করতেও দেখা যায়। ভবনের দ্বিতীয় তলায় শিশু ইউনিট। ওই ইউনিটের বাথরুমের পাইপ নিচের সেপটি ট্যাংকির থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিচে মলমূত্র পড়ছে। পাশের সার্ভার রুম, ইমার্জেন্সি রুম, স্টোর রুমের কর্মকর্তারা দুর্গন্ধে জানালা বন্ধ করে কাজ করছেন। শিশু ও মহিলা ইউনিটের ভর্তি রোগীরা জানান, একটু বাতাস হলে মলমূত্রের দুর্গন্ধে পেটের নাড়িভূড়ি উলটিয়ে আসে।
এছাড়া পুরুষ, মহিলা ও শিশু ইউনিটের বারান্দায় ময়লা ফেলার বাক্সের ওপর ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ, স্যালাইন ফেলে রাখতে দেখা যায়।
অন্যদিকে একই ব্যক্তিকে একই রুমে করোনার এন্টিজেন কীট টেস্টসহ অন্যান্য পরীক্ষা করতেও দেখা যায়। এতে করোনা নেগেটিভ রোগীদের একই জায়গায় জড়ো হওয়ায় সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। জনবল কাঠামো অনুযায়ী হাসপাতালে ২১জন ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে ৯ জনসহ মোট ৩০ জন এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা। ইউনিয়ন পর্যায়সহ হাসপাতালে কাগজে-কলমে বর্তমানে ১১ জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। এর মধ্যে একজন ডাক্তারের বরগুনা জেলায় ডেপুটেশনের অর্ডার হয়েছে। অন্যান্য পদেও রয়েছে তীব্র জনবল সংকট।
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডা. তপতী চৌধুরী বলেন, ময়লা, বর্জ্যরে বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশল শাখায় চিঠি দেওয়া হচ্ছে। একই স্থানে করোনার টেস্ট ও সাধারণ টেস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা হওয়া উচিত না, তবে জায়গার অভাবে কি আর করার আছে। তিনি বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমিত জনবল নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৮:৩২   ৪১৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


ভাইয়ের প্রতারণার শিকার হয়ে প্রতিবন্ধী উজ্জলের মানবেতর জীবন
সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোলায় সমাবেশ
ভোলায় পোস্ট অফিসে আইসক্রিমের ব্যবসা
লালমোহনে আবাসনের ঘর জবর দখলের অভিযোগ
ভোলায় যাত্রীবাহী লঞ্চ থেকে ৮৫ মণ মাছ জব্দ
ঘুষ ছাড়া কাজ হয়না ভোলার বিএমইটি অফিসে॥ প্রতিদিন ঘুষের আয় প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা!!
ভোলায় ফিল্মি স্টাইলা অপহরণ ॥ কতিপর উদ্ধার
ফুঁক দিয়েই সব সমস্যার সমাধান করেন ফরিদ!
প্রেমিকের সঙ্গে ‘বিয়ে’ রফাদফায় এসে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে ধরা তরুণী, অতঃপর…
ভোলায় যৌতুকের মামলা দেওয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিলো স্বামী ॥ শিশু সন্তান নিয়ে দুশ্চিতায় হাফছা



আর্কাইভ