চরফ্যাশনের ডাবল মার্ডার: ও চাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » চরফ্যাশনের ডাবল মার্ডার: ও চাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
বুধবার, ৫ মে ২০২১



---

অবশেষে চরফ্যাশনের ডাবল মার্ডার এর রহস্যের উদঘাটিত হয়েছে। মানুষ স্বার্থের জন্য, অর্থের জন্য কত নিচে নামতে পারে এবং কত নিকৃষ্ট ও নৃশংস হতে পারে তার একটি উদাহরণ চরফ্যাশনের আলোচিত ডাবল মার্ডার। এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে চরফ্যাশনে দুটি মস্তকবিহীন লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ এ লাশের মাথা উদ্ধার করতে না পেরে লাশ দুটি লাওয়ারিশ হিসেবে ভোলায় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তাদের পোস্টমর্টেমের পর লাশ দুটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কবরস্থানে ইসলামিক শরীয়ত মতে দাফন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে এই লাশ দুটির কাটা মাথার খোঁজ পাওয়ার পরেই ঘটনার প্রেক্ষাপট পাল্টে  যায়।
জানা যায়, লাশ দুটি চরফ্যাশন পৌরসভার তিন নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা উপেন্দ্রনাথ সরকারের ২ পুত্রের মরদেহ ছিল। অবশেষে আস্তে আস্তে রহস্যের জাল ছিন্ন হয় সম্প্রতি এই ডাবল মার্ডার এর ভাড়াটে খুনি শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে। ভাড়াটে খুনি শরিফুল ইসলাম চরফ্যাশনের বাসিন্দা। তবে সে চট্টগ্রামে গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছে। মাত্র দুই আড়াই লাখ টাকার লোভে সে এই দুই ভাইকে হত্যা করেছে। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী বেলাল, আবু মাঝি ও কাশেম আগেই গ্রেফতার হয়েছে। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ নিহত দুলাল সরকার ও তপন সরকার গত ৩ বছর যাবৎ ভারতে বসবাস করছে। চরফ্যাশনে তাদের ৪৬ শতাংশ জমি বেলাল গংদের কাছে বছরখানেক আগে ২০ লক্ষ টাকা দাম করে বিক্রি করে। মাত্র তিন লক্ষ টাকা দিয়ে বাকি টাকা গত এক বছর যাবত ধানাই-পানাই করে অবশেষে জমির মালিক দুই ভাইকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। তাদের এই পরিকল্পনা মোতাবেক ভাড়াটে খুনি হিসেবে শরিফুল ইসলামকে হায়ার করা হয়। তারা গত ৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় দুই ভাইকে টাকা দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে তাদেরকে নির্মমভাবে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে এবং হত্যার পর তাদের মৃতদেহগুলো পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। মস্তক দুটি কেটে কোন এক বাড়ির সেপটি ট্যাংক এর মধ্যে ফেলানো হয়। এত করেও তারা তাদেরকে রক্ষা করতে পারেনি। আল্লাহর অসীম রহমতে এই নিকৃষ্ট খুনিরা আইনের আওতায় এসেছে। এবং খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। এজন্য আমরা ভোলার পুলিশ সুপারসহ ও পুলিশ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। চরফ্যাশনের এই খুন আবারও আমাদের সাথে স্পষ্ট করে দিল যে, মানুষ স্বার্থের জন্য কতটা নিচে নামতে পারে। সামান্য কিছু টাকার জন্য মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করতে পারে! আমাদের নীতি-নৈতিকতা, মানবিকতা কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে তার উৎকৃষ্ট একটি উদাহরণ চরফ্যাশনের এই ডাবল মার্ডার। অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক আর অপরাধীরা যতই তাদের বুদ্ধি খাটায় সবার উপরে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সব কিছুই দেখেন জানেন। অপরাধ করে কোনো অবস্থায়ই কোন মানুষ পার পায়না। সেটাও এক ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণিত হলো।আমরা এই খুনের পরিকল্পনাকারী ৩ জন এবং খুনি শরিফুল ইসলাম এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির মাধ্যমে এটা প্রমাণ করা হোক যে, দেশের বিচার ব্যবস্থা কাউকে ছাড় দেয় না। এদেরকে যদি সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া না হয় তাহলে অন্যেরাও অপরাধ করতে উদ্বুদ্ধ হবে। তাই সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা দূর করার জন্য এই ঘৃণ্য খুনিদের কঠিন বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অপরিহার্য।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৩:৪৩   ৪২৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ