দর্জিপাড়ায় সুই-সুতার বিরামহীন যুদ্ধ

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » দর্জিপাড়ায় সুই-সুতার বিরামহীন যুদ্ধ
সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪



---

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

ঘনিয়ে আসছে ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে দর্জিপাড়ায়। ভোলার লালমোহন উপজেলার দর্জির দোকানগুলোর কারিগররা সবাই ব্যস্ত। কেউ সেলাই, কেউ বোতাম লাগানোয়, কেউ কাপড় কাটায়, আবার কেউবা ইস্ত্রি (আয়রন) করে অর্ডার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তৈরি জামা-কাপড় সাজিয়ে রাখছেন। যেন কারোর দম ফেলানোর সময় নেই।

প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে ভোর রাত পর্যন্ত দর্জিপাড়ায় চলছে কাজ। দর্জিপাড়ার এমন চিত্র দেখলে মনে হবে এ যেন সুই-সুতার বিরামহীন যুদ্ধ। লালমোহন পৌর শহরসহ উপজেলার সব হাট-বাজারেই এখন দর্জি কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার ভীষণ ব্যস্ততা। তাদের এ ব্যস্ততা থাকবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত।

সরেজমিনে লালমোহন পৌর শহরের কয়েকটি দর্জির দোকান ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষ্যে নতুন পোশাক কিনে তৈরির জন্য দর্জির দোকানগুলোতে ভিড় করছেন মানুষজন। মানুষজনের পোশাক তৈরি করতে বিরামহীনভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দর্জিরা। দর্জিদের এখন লক্ষ্য কেবল অর্ডার অনুযায়ী পোশাক তৈরি করে হস্তান্তর করা। তাইতো ক্লান্তি উপেক্ষা করে নিজেদের কাজে মনযোগী দর্জিরা। দর্জিদের কাছে পুরুষদের চেয়ে নারীদের পোশাক তৈরির অর্ডার সবচেয়ে বেশি।

বর্তমানে দর্জির দোকানগুলোতে প্রতি পিস প্যান্ট ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় সেলাই করা হয়, শার্ট ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, পায়জামা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, লেহেঙ্গা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, থ্রি-পিস প্রকারভেদে ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা, প্রকারভেদে সেলোয়ার-কামিজের মজুরি নেয়া হয় ৮০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকা, ব্লাউজ ও পেটিকোট ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, বাচ্চাদের পোশাক সেট অনুযায়ী ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মজুরিতে সেলাই করা হয়।

কর্মব্যস্ততা নিয়ে কথা হয় লালমোহন পৌর শহরের নাফিসা টেইলার্সের কারখানার কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে। ওই কারখানায় একজন মাস্টারসহ মোট ৬ জন কারিগর কাজ করেন। যাদের মধ্যে একজন মো. রাসেল। তিনি বলেন, প্রায় নয় বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। গত বছরের ঈদের চেয়ে এ বছরের ঈদে কাজের অনেক চাপ। সকাল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। এতে দৈনিক ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মতো আয় হয়। এই আয় দিয়েই চলে আমার সংসার। তবে বছরের অন্যান্য সময় কাজ কিছুটা কম থাকে। তখন দৈনিক গড়ে পাঁচশত টাকার মতো আয় হয়।

ওই কারখানার আরেক কারিগর মো. হানিফ জানান, বিগত ২২ বছর ধরে এই পেশায় আছি। ঈদ আসলে আমাদের কাজ বাড়ে। এই ঈদেও ব্যাপক কাজ হাতে রয়েছে। এতে করে দৈনিক ৮০০ থেকে ১০০০ হাজার টাকার মতো আয় হয়। এই আয়ের টাকায় স্বামী-স্ত্রীসহ তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছি। এই কাজ করে সবাইকে নিয়ে ভালো আছি।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি (তদন্ত) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য আমাদের থানা পুলিশের কয়েকটি টিম নিয়মিত কাজ করছে। বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় আমরা সচেষ্ট রয়েছি। এরপরও যদি কোথায়ও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদেরকে জানানোর জন্য সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১:০১:০৯   ১৫৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


লালমোহনে বেপরোয়া ইঁদুরে দিশেহারা কৃষক
ভোলায় শুরু হলো ‘গবাধিপশু পালন’ বিষয়ক ১০১তম ব্যাচের প্রশিক্ষণ
ভোলায় পুষ্টি নিরাপত্তায় মডেল গ্রাম গড়তে কৃষক প্রশিক্ষন
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় ইলিশ ধরার উৎসবে জেলেরা
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ, জেলেদের চলছে প্রস্তুতি
পেঁপে চাষে প্রথমবারেই কৃষক ইসমাইলের সাফল্য
ভোলায় বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে জিজেইউএস
নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশনের পরিচালক বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
ভোলায় পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর উদ্বোধন
চাঁদপুর নয়, ইলিশের বাড়ি ভোলা: মৎস্য ও প্রানী সম্পদ উপদেষ্টা



আর্কাইভ