স্টাফ রিপোর্টার ॥
বেশ কয়েক বছর ধরে ভোলার লালমোহন পৌরসভার প্রায় সবকয়টি সড়কই জরাজীর্ণ হয়ে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে করে নিত্যদিনের দুর্ভোগ সঙ্গী করে চলতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। তবে সেই দুর্ভোগ লাঘবে আশার কথা জানিয়েছেন লালমোহন পৌরসভার মেয়র হাজী এমদাদুল ইসলাম তুহিন। তিনি জানান, নাগরিকদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে পৌরসভার যেসব জরাজীর্ণ বেহাল সড়ক রয়েছে তা প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিগগিরই এসব সড়ক মেরামত ও পুনর্নির্মাণে কাজ শুরু করা হবে।
জানা যায়, ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে প্রতিষ্ঠা পায় লালমোহন পৌরসভা। তবে বর্তমানে এ পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ড রয়েছে। সবমিলিয়ে লালমোহন পৌরসভার আওতায় পাকা সড়ক রয়েছে ৪০ কিলোমিটার এবং কাঁচা সড়ক রয়েছে ২৬ কিলোমিটার। তবে বছরের পর বছর এসব সড়ক পুনর্নির্মাণ বা মেরামত না করায় পায়ে হাঁটাও চরম দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে পৌরসভার বাসিন্দাদের। তবে গত ২২-২৩ অর্থবছরে পৌরসভার সুগন্ধা সড়ক ও ২৩-২৪ অর্থবছরে চান মিয়া সওদাগর সড়কসহ প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ করা হয়েছে বলে দাবি পৌর কর্তৃপক্ষ।
পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ানীগ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, প্রায় এক যুগ হয়েছে এ ওয়ার্ডের অধিকাংশ সড়কের কোনো মেরামত করা হয়নি। ওয়ার্ডের অনেক সড়ক পাকা হলেও উঠে গেছে পিচ ঢালাই। যার ফলে তৈরি হয়েছে খানাখন্দকের। এখন পাকা সড়কগুলোও কাঁচা সড়কের থেকে খারাপ অবস্থায় আছে। যার জন্য বেড়েছে যানবাহনের ভাড়াও।
পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা মো. জহিরুল হক সেলিম জানান, অনেক বছর এ ওয়ার্ডের অধিকাংশ সড়কেরই কোনো ধরনের উন্নয়ন হয়নি। এর ফলে এ ওয়ার্ডের অনেক এলাকাতেই যানবাহন যাতায়াত কমে গেছে। কারণ এ এলাকার সড়কগুলোতে আসলে যানবাহনের ক্ষতি হয় বলে দাবি করেন চালকরা। এছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের ওপর হাঁটু সমান পানি জমে যায়। যার ফলে পায়ে হাঁটাও ব্যাপক কষ্টের হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব কারণে এ এলাকায় ভাড়াটিয়ারা বাসা ভাড়া নিতে চান না। যার জন্য সড়কগুলো মেরামত জরুরি।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্ণালি সড়কের বাসিন্দা মো. আব্দুল হান্নান বলেন, বৃষ্টি হলে এ ওয়ার্ডের পাকা সড়কগুলোতে পানি জমে খালে পরিণত হয়। বছরের পর বছর এভাবে চরম দুর্ভোগ সঙ্গী করেই এ ওয়ার্ডের অধিকাংশ মানুষকে দিন পার করতে হচ্ছে। মানুষের চরম দুর্ভোগ, তবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। অনেক সময় শুনি সড়কের কাজ হবে, তবে কবে কাজ শুরু হবে তাই ঠিক মতো জানতে পারছি না। তবে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কগুলো পুনর্নির্মাণ বা মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
লালমোহন পৌরশহরের অটোরিকশা চালক মো. তোফায়েল ও মো. আজগর জানান, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে পৌরসভার আওতায় ভেতর আমরা রিকশা চালাই। যাত্রী বা মালামাল নিয়ে পৌরসভার যেদিকে যাই সেদিকেরই সড়ক ভাঙাচোরা। এতে রিকশা চালাতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। যাত্রীরাও রিকশায় উঠে কষ্ট পাচ্ছেন। সড়কগুলো ভাঙাচোরা হওয়ায় নিত্যদিনই নষ্ট হয় রিকশার মালামাল। এ জন্য প্রতি সপ্তাহেই রিকশা মেরামত করাতে হয়। এর ফলে আগে যেখানের ভাড়া ১০ টাকা নিতাম, এখন সেখানের ভাড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা করে নিতে হয়। না হয় আমাদের পোষায় না। আমাদের দাবি খুব শিগগিরই যেন পৌরসভার সড়কগুলো মেরামত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১:০৩:০৯ ২০৬ বার পঠিত