মনপুরা উপকূলের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর ও চোখের অসুখ

প্রচ্ছদ » প্রধান সংবাদ » মনপুরা উপকূলের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর ও চোখের অসুখ
বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২



আবদুল্লাহ জুয়েল, মনপুরা ॥
ভোলার বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপকূল প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর ও চোখের অসুখ। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এই সংক্রমন। উপকূলের এমন ঘর পাওয়া যাবে না যেখানে পরিবারের কোন সদস্য এই ছোঁয়াচে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। এতে করে প্রতিনিয়ত উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই থেকে তিন শত রোগির চিকিৎসা দিতে হিমশীম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
বৃহস্পতিবার এমন তথ্য জানান হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আশিকুর রহমান অনিক। হাসপাতালে থাকা এই রোগের ঔষধও শেষ পর্যায়ে বলে জানান তিনি। তবে আতংকিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
এছাড়াও তিনি সবাইকে পুকুরে গোসল না করে কলের পানিতে গোসল করার পরামর্শ দেন। তাছাড়াও স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে চলারও পরামর্শ দেন।
এদিকে উপজেলা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় একসঙ্গে ৪০ ছাত্রের জ্বর ও চোখের অসুখে কারণে ওই মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও উপজেলার প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এই ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানান প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজিরহাট সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফকিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, হাজিরহাট হোসাইনিয়া আলিম মাদ্রাসা, হাজিরহাট এতিম খানা মাদ্রাসা, চরফৈজুদ্দিন বহুমুখী মাদ্রাসার বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত।
এদিকে মনপুরা নাগরিক কমিটির সভাপতি এ.এফ.এম রিয়াদ অভিযোগের সুরে জানান, আগের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছোঁয়াচে রোগ বা ভাইরাস জনিত রোগরে লক্ষণ দেখা দিলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সর্তক করতে মাইকিং করাতো, হাট-বাজারে গিয়ে জনগণ রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়ার পরামর্শ দিতো। এখানকার স্বাস্থ্য কর্মকর্তাতো মনপুরায় থাকে না, তাই মনপুরা বাসিন্দাদের এত দুর্ভোগ। তবে মাঠ প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারতো।
জানা যায়, ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে চোখের রোগটির বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে কনজাংটিভাইটিস। স্থানীয় ভাষায় যার নাম চোখ ওঠা রোগ। এই রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ হচ্ছে চোখের সাদা অংশ লাল হয়ে যায়, চোখের পাতা ফুলে যায়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, দেখতে সমস্যা হয়, আলোতে কষ্ট হয়, চোখ জ্বালাপোড়া ও চুলকানি হয়, ঘুমতে ওঠার পর চোখের দুই পাতা একসঙ্গে লেগে থাকে।
এই রোগ প্রতিকার করতে চোখে হাত না দেওয়া, পুকুর বা নদী-নালায় গোসলের পরিবর্তে কলের পানিতে গোসল করা, চোখে কালো চশমা ব্যবহার করা, রুমালের পরিবর্তে টিস্যু ব্যবহার, ধুলাবালি, আগুন এবং রোদে কম যাওয়া ও বিশ্রামের পাশাপাশি চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
এই ব্যাপারে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, এই বিচ্ছিন্ন উপজেলার প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা জ্বর ও চোখ ওঠা রোগে ভুগছে। দ্রুত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রশাসন বাসিন্দাদের সর্তক ও রোগ প্রতিরোধে পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা না করলে রোগ মহামারি আকার ধারন করতে পারে। একই কথা বলেন সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সম্পাদক মোঃ আজাদ।
এই ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ তৈয়বুর রহমান না থাকায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আশিকুর রহমান অনিক জানান, প্রতিদিন দুই থেকে তিনশত রোগির চিকিৎসা দিতে হিমশীম থেতে হচ্ছে।
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশিষ কুমার জানান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে আলাপ করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৮:৫৬   ৩৪১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


ভোলায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত
ভোলায় গ্রেনেড-অস্ত্রসহ আটক ১
ভোলার ছেলে সুফিয়ান ঢাকায় খুন
ইতিহাস গড়ে জয় ট্রাম্পের
নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করলেন ট্রাম্প
‘খুব সম্ভবত’ ট্রাম্পই হচ্ছেন নতুন প্রেসিডেন্ট
ভোলায় বজ্রপাত এবং পানিতে ডুবে চারজনের মৃত্যু
ভোলায় নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে ৩২৬ জেলের জেল-জরিমানা
ভোলা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনাস্থা
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় ইলিশ ধরার উৎসবে জেলেরা



আর্কাইভ