ভোলায় ভাষার মাসে বিদ্যালয় রাতেও উড়ছে জাতীয় পতাকা

প্রচ্ছদ » অপরাধ » ভোলায় ভাষার মাসে বিদ্যালয় রাতেও উড়ছে জাতীয় পতাকা
বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২



স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলায় ভাষার মাসে জাতীয় পতাকার অবমাননার ঘটনা ঘটেছে। সরকারি নিয়ম অনুসারে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকেও নিয়ম ভঙ্গ করে দেখা গেছে ভোলা সদর উপজেলার এক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মাসে রাতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উড়ার ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টায় সরজমিনে ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ২০১ নং শিবপুর কালিকীর্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

---

স্থানীয় মো.আলামিন হোসেন বলেন, গতকাল ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এসে বিদ্যালয়ের পোলাপান দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তলন করে ফুলদিয়ে কিছু ছবি তুলে পতাকা না নামিয়ে তারা চলে যায়। গতকাল রাতেও বিদ্যালয়ের পতাকা উরেছে এবং আজ রাত ১১ বাজে এখনো পতাকা উড়ছে। দুই রাতের বেলা জাতীয় পতাকা উরলেও বিদ্যালয় কতৃপক্ষ পতাকা নামানোর কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
একই রকম স্থানীয় আব্দুর রহমান বলেন, ৩০ লাখ শহীদ ও ৩ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা পেয়েছি। এই পতাকার অবমাননা মেনে নেওয়া যায় না। স্কুল চলাকালীন সময়ের বাইরে রাতের বেলা জাতীয় পতাকা উড়ছে এটা কতৃপক্ষের আবহেলা।
ভোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব আদিল হোসেন তপু বলেন, জাতীয় পতাকার অবমাননার করার অর্থ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। স্বাধীন বাংলাদেশকে অস্বীকার করা। শিক্ষকরা যদি জাতীয় পতাকার সম্মান নষ্ট করেন তাহলে তাদের কাছ থেকে আমরা নতুন প্রজন্ম কী শিখবো? দেশবিরোধী একটি চক্র সবসময় আমাদের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা অবমাননা করায় লিপ্ত রয়েছে। ওই বিদ্যালয়ে যারা নির্দিষ্ট সময়ে পতাকা না নামিয়ে রাতের আধারে উত্তোলন করেছেন তারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা তদন্ত করে বের করা উচিত।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়শা বেগমের সাথে একাধিক বার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে ওই বিদ্যলয়ের সহকারি শিক্ষিকা ফাহামিদা সুলতানা জানান, সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। তবে গত ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান হয়। যেহেতু আমাদের বিদ্যালয়ে কোন পিয়ন নেই তাই আমরা নিজেরাই বিদ্যালয়ের পতাকা উওলন ও নামিয়ে থাকি। ওই দিন স্থানীয়  একজনকে পতাকা নামানো জন্য বলা হয়েছে। সে হয়তো পতাকা নামাতে ভুলে গেছে। এ ঘটনায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
আর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শিরিন সুলতানা জানান, সদর উপজেলার ২০১নং শিবপুর কালিকীর্তি  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রাতে জাতীয় পতাকা উড়ছে এমন খবর পেয়ে জাতীয় পতাকা নামানোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পাশাপাশি আগামীকাল বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জাতীয় পতাকা উড়ানোর নিয়ম রয়েছে। রাতে বিদ্যালয়ে পতাকা উড়ার বিষয়টি অবমাননার সামিল। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের আইন ভঙ্গ করা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ। জাতীয় পতাকার সম্মান অক্ষুণœ রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১:১২:৩০   ৪৪৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


চরফ্যাশনে অন্যের জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাসেলের বিরুদ্ধে
বাপ্তায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে এতিম সন্তানের উপর হামলা
‘টাকা পেলেই ভাতা করার দায়িত্ব নেন দফাদার’
চরফ্যাসনে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
ভোলায় ১ হাজার পিচ ইয়াবাসহ আটক ১
দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ॥ আহত-৩০
ভোলায় অন্যের ভোগদখলীয় জমির গাছ কেটে দখলের চেষ্টা
পুলিশ চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রতারণা, অবশেষে আটক
তারা কখনো জিন বাবা- কুফরি বাবা, আবার কখনো কালী বাবা
পশ্চিম ইলিশায় অন্যের কবরস্থানে জেলা পরিষদের নেমপ্লেট লাগিয়ে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা : বাধা দেয়ায় ১জনকে পিটিয়ে জখম



আর্কাইভ