শনিবার, ১১ মে ২০২৪

ব্লকবাঁধ নির্মাণ দাবি ॥ বোরহানউদ্দিনে তেঁতুলিয়ার ভাঙনে মানুষের কান্না

প্রচ্ছদ » জেলা » ব্লকবাঁধ নির্মাণ দাবি ॥ বোরহানউদ্দিনে তেঁতুলিয়ার ভাঙনে মানুষের কান্না
শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১



বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি ॥
ভোলার বোরহানউদ্দিনে গত দুই বছরে তেঁতুলিয়া নদীর তীব্র ভাঙনে প্রায় এক হাজার ২০০ শত মানুষ বসতভিটা হারিয়েছে। বর্তমানে ওই নদীর মূল বেড়িবাঁধ ভেঙে রিং বেড়িবাঁধও বেশ কয়েকটি স্থানে ধসে গেছে। এতে নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে তিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের বসতিসহ ৭৫ বছর বয়সি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জনপদ রক্ষায় ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী দ্রুত ব্লকবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

---

সরেজমিন দেখা যায়, একসময় মূল বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার হওয়া গঙ্গাপুর ইউনিয়নের জয়া ভায়া মৌলভির হাট টু খাঁয়ের হাট পাকা সড়কটি কুতুবা ইউনিয়নের ২ ও ৩নং ওয়ার্ড এলাকা থেকে দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের চার নাম্বার ওয়ার্ড হয়ে গঙ্গাপুর ইউনিয়নের এক ও দুই নাম্বার ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক কাম বাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হওয়ার প্রায় আড়াই বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্মিত রিং বেড়িবাঁধটিও ৬-৭টি স্থানে ধসে গেছে। ফলে অতি জোয়ার বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে অনায়াসে লোকালয় প্লাবিত হবে।
কুতুবা ইউনিয়নের তিন নাম্বার ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান, মিরাজ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, ওবায়দুল হক বলেন, দ্রুত ব্লকবাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা না নিলে আমরা ভিটেমাটি হারাব। একই ইউনিয়নের দুই নাম্বার ওয়ার্ডের মাওলানা নেছারউদ্দিন, হাফেজ জাফর শরীফ, আশরাফ ফারুক জানান, নদীর সে াত রিং বেড়িবাঁধ ভেঙে ফেলেছে। আমরা অসহায়ের মতো ভাঙন দেখছি আর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। দুই নাম্বার ওয়ার্ডে অবস্থিত ৭৫ বছর বয়সি ছোটমানিকা ফাজিল মাদ্রাসা।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সাইফুল্যাহ জানান, মাদ্রাসায় ৬৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী। নদী থেকে মাদ্রাসার দূরত্ব মাত্র ২০-২৫ ফুট। অবিলম্বে ব্লকবাঁধ নির্মাণ না করলে মাদ্রাসা নদীগর্ভে চলে যাবে। এলাকার শিক্ষার্থীরা গভীর সংকটে পড়বে।
কুতুবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান জোবায়েদ জানান, গত দুই বছরে এক ও দুই নাম্বার ওয়ার্ডের প্রায় ৫ শতাধিক পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে ব্লকবাঁধ নির্মাণ না করলে এ সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।
গঙ্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রিয়াজ জানান, গত দুই বছরে তার ইউনিয়নে প্রায় ৭৫০ পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। তিনি খাঁয়ের হাট লঞ্চঘাট থেকে নয়নের খাল পর্যন্ত ব্লকবাঁধ স্থাপনের মাধ্যমে তিন ইউনিয়নের জনপদসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে গঙ্গাপুর লঞ্চঘাটের পর থেকে দক্ষিণে সাড়ে ৪ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ ব্লকবাঁধের জরিপ স¤পন্ন হয়েছে। জরিপ শেষে ডিজাইন (নকশা) সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১২:১৫   ৪৬৫ বার পঠিত