চরফ্যাসনে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

প্রচ্ছদ » অপরাধ » চরফ্যাসনে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু
সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১



চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥
চরফ্যাসনের মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল গ্রামে গৃহবধূ আসমা (১৯)’র মৃত্যু নিয়ে ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা এই প্রশ্নে দুই পরিবারের মধ্যে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। রোববার দুপুরে শ^শুড় বাড়ির নিজ শয্যাকক্ষে গৃহবধু আসমার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রোববার বিকালে পুলিশ চরফ্যাসন হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে গতকাল সোমবার ভোলা মর্গে প্রেরন করেছেন। লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ ৩ জনকে আটক করলেও  প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দিয়েছেন।
জানা যায়, চর আফজাল গ্রামের আবুল কালাম মাঝির মেয়ে আসমা বেগম। একই গ্রামের সাত্তার তালুকদারের ছেলে  আবদুল কাদেরের সাথে ৪ মাস আগে তার বিয়ে হয়। পেশায় রাজমিস্ত্রি স্বামী আবদুল কাদের ঢাকায় কাজ করেন এবং ঘটনার দিনও তিনি ঢাকায় ছিলেন।

নিহত আসমার জা নাজমা জানান, ৮দিন বাবার বাড়িতে থেকে শনিবার আসমা শ^শুর বাড়ি আসেন। পরদিন রোববার দুপুরের খাবার রান্না করে নিজ ঘরের বিছানায় শুয়ে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে শ^শুর সাত্তার তালুকদার বাহির থেকে ফিরে ঘরে এসে পুত্রবধূ আসমাকে ডাকাডাকি করেন। কোন সাড়া না পেয়ে অপরাপর পুত্রবধূরাসহ আসমার কক্ষে ঢুকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত তাকে চরফ্যাসন হাসপাতালে নেয়া হয়।
চরফ্যাসন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক জাহিদ হোসেন জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে চরফ্যাসন থানা পুলিশ বিকেলে লাশ উদ্ধার করেন।
নাজমা আরো জানান, সাত্তার তালুকদারের ৫ ছেলে। প্রত্যেক ছেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পৃথক ঘরে থাকেন। বাবা-মা থাকেন কাদেরের ঘরে। কাদের ঢাকায় কাজে থাকায় ঘটনার দিন শ^শুর শাশুরি এবং আসমাসহ ৩জন ঘরে থাকার কথা। শাশুড়ি মেয়ের বাড়িতে যাওয়ায় ঘরে ছিলেন শ^শুর এবং আসমা। ঘটনার সময় শ^শুর বাজারে ছিলেন। ঘরে ছিলেন একমাত্র আসমা। দুপুরের রান্না শেষ করার পর নিজ বিছানায় আসমার মৃতুদেহ পড়ে থাকার ঘটনা রহস্যের সৃষ্টি করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আসমার একাধিক স্বজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভাসুর ইউসুফ আসমাকে উত্যক্ত করে আসছিল। আসমা ঘনিষ্টজনদের বিষয়টি জানিয়েছিল। ঘটনার দিন শাশুরি মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। শ^শুর ছিলেন বাজারে। আসমা একাই ঘরে ছিলেন। দুপুরের রান্না শেষে বিশ্রামের উদ্দেশ্যে আসমা বিছানায় গেলে সুযোগ বুঝে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ভাসুর ইউসুফ। পরবর্তীতে গোটা পরিবার মিলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে আসমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে দাবী করে। ঘটনার পর থেকে ভাসুর ইউসুফ আত্মগোপন করেছে। ইউসুফ পলাতাক আত্মগোপনে থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
চরফ্যাসন থানার ওসি (তদন্ত) রিপন কুমার সাহা জানান, মৃতদেহের গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসমার জা নাজমা, রিনা ও ননদ মাজেদাকে আটক করা হলেও মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৮:৫৯   ২৮৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতির দৌলতখানে দাবিতে মানববন্ধন
মনপুরায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই জেলে ট্রলার ও জাল, ১০ লাখ টাকার ক্ষতি
ভোলায় ডিবির অভিযানে অস্ত্রসহ ৩ দস্যু আটক, অপহৃতরা উদ্ধার
তজুমদ্দিনে রাস্তা চওড়া করার নামে কাটা হবে ৮৫৬টি গাছ, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ
ইডেন ছাত্রীর বিয়ের দাবীতে মিথ্যা অপপ্রচার থেকে মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
সাময়িক বরখাস্ত হলেন বিএমইটি ভোলার সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেন
মাদ্রাসাছাত্রীকে তালাবন্ধ করে পরিবারসহ প্রেমিক লাপাত্তা
বেনজীরের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ভোলায় সুজনের সমাবেশ-স্মারকলিপি
জমিজমা বিরোধ কেন্দ্র করে ভাই ও ভাইর স্ত্রীর উপর হামালার অভিযোগ কমিশনার কবিরের বিরুদ্ধে
ভাইয়ের প্রতারণার শিকার হয়ে প্রতিবন্ধী উজ্জলের মানবেতর জীবন



আর্কাইভ