মানুষের প্রয়োজনে দোকানপাট খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পর ভোলা শহরের সার্বিক অবস্থা আজ সরেজমিনে ঘুরে দেখলাম। সদর রোড সহ প্রধান প্রধান সড়ক সময়ে যারা আছেন তাদের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মাস্ক পরিধান করেছে, তবে এই মাস্ক পরা লোক গুলোর মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ নাক এবং মুখ খুলে থুতনিতে মাস্ক লাগিয়ে রেখেছে। মার্কেট সমূহের ভেতরে খুব কম লোকই মাস্ক পরিধান করে। দোকানদারদের অনেকেরই মাস্ক নেই। যাদের আছে তাদের অধিকাংশেরই থুতনিতে নামানো। নাক-মুখ দুইটাই খোলা।
এই সংক্ষিপ্ত জরিপে দেখা গেছে মার্কেট সমূহের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগের মাস্ক আছে কিন্তু এদের মধ্যে ৭০ ভাগ মাছ থুতনিতে নামানো। অর্থাৎ সবমিলিয়ে মার্কেট সমূহের ভেতরে ২০ ভাগের বেশি মানুষ পরিপূর্ণভাবে মাস্ক পরিধান করে না। অনেক দোকানে ৮/১০ জন কর্মচারী তাদের সবাই মাস্ক ছারা এবং ২৫/৩০ জন কাস্টমারের ভিড়। সেখানে তাদের মধ্যে হয়তো একজন বা দুইজনের মাস্ক আছে। এটা হচ্ছে ভোলার বাজারের আজকের অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল তারিখের বাস্তব চিত্র।
করণা প্রতিরোধে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত রয়েছে। তবে করণা প্রতিরোধে নিজেকে ও অন্যকে সেফ রাখার জন্য মাস্ক পরিধান করার বিষয়ে সবাই একমত। মাস্ক টা কেমন হবে তা নিয়ে একাধিক মত থাকতে পারে। কিন্তু মাস্ক পড়তে হবে, এটার ব্যাপারে পৃথিবীর সকল বিশেষজ্ঞরা এক মত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে এই বোধ পরিপূর্ণভাবে নেই। যারা মুখে বলেন মাস্ক পরা উচিত তারাও কার্যত দেখি বেশিরভাগ সময় মাস্ক থুতনিতে নামিয়ে রাখে। মাস্ক যদি থুতনিতে নামিয়ে রাখে সেই মাস্ক পড়া আর না পড়ার মধ্যে তো কোনো পার্থক্য নেই। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের দেশে করোনা পরিস্থিতি আরও মারাত্মক অবনতি হওয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। পার্শ্ববর্তী ভারতের অবস্থা দেখে আমরা সেটা পুরোপুরি উপলব্ধি করি এবং শিউরে উঠি।
তাই করোনা পরিস্থিতির বর্তমান ভয়াবহ অবস্থাটা আমাদের মন থেকে উপলব্ধি করা উচিত।
আমাদের দৈনন্দিন কাজ ও করতে হবে। কারণ কাজকর্ম ছাড়া মানুষের জীবন অচল হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে মাস্ক পড়ে যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করে আমাদের জীবনের প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। আর মাস্ক পরতে হবে মন থেকে, অন্তর থেকে। আমার জীবন বাঁচানোর জন্য ,অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য ,কাউকে ক্ষতির মধ্যে না ফালানোর জন্য এবং নিজে ক্ষতির মধ্যে না পরার জন্য একটু কষ্ট হলেও মাস্ক পড়তে হবে। আমি যখনই বের হবো ঘর থেকে তখনই মাস্ট পরিধান করে বের হবো। এটাই হওয়া উচিত।
পাশাপাশি প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের নজরদারী আরো বাড়ানো উচিত। মাস্ক পড়া নিশ্চিত করার জন্য প্রতিনিয়ত পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের মনিটরিং একান্ত প্রয়োজন।
আমরা সর্বস্তরের সকল মানুষের কাছে মন থেকে নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য এবং অন্যদেরকে রক্ষা করার জন্য মাস্ক সঠিকভাবে পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। আসুন আমরা প্রয়োজনীয় সর্তকতা অবলম্বন করি এবং মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এই গজব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দোয়া করি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৪:৪২ ৩২০ বার পঠিত