স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলা সদর উপজেলায় জমিজমা বিরোধের জের ধরে মো. আনসার আলী গাজী নামের অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা সদস্যকে (কর্পোরাল) পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত আনসার আলী গাজী উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের রুহিতা গ্রামের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ সেনা বাহিনীতে কর্পোরাল পদে কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে আলী নগর চৌমুহনী এলাকার গাজী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। তিনি বর্তমানে ভোলা সদর হাসপাতালের পুরুষ অর্থপেডিক ওয়ার্ডের ৫১ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আহত আনসার আলী গাজী অভিযোগ করে বলেন, তার সাথে একই বাড়ীর আব্দুল খালেক গাজী ও তার ছেলে মো. হুমায়ুন কবির গাজী এবং মো. মাসুদ গাজীর সাথে দীর্ঘ দিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জেরে হুমায়ুন কবির গাজীর নেতৃত্বে স্থানীয় সাহাবুদ্দিন, আব্বাছ, মফিজ ও বাহাউদ্দিনসহ ১০-১২ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী লাঠি, রড ও ছুরি নিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে ঘর থেকে বের করে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা আমাকে বেধম মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আমাকে উদ্ধার করে রাত ১টার দিকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তিনি আরো বলেন, এদের সাথে ১৯৯০ মাল থেকে আমাদের ভোগদখলীয় রুহিতা মৌজার বিভিন্ন খতিয়ানের প্রায় দুই একর পৌনে ৯৭ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে আব্দুল খালেক গাজী ১৯৯০ সালে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তিন বছর চলার পর ১৯৯২ সালে খারিজ হয়ে যায়। ওই বছরই আব্দুল খালেক গাজী আপিল করেন। পরে মামলাটি ২০১৭ সালে আমাদের পক্ষে রায় দেয় এবং নিষ্পত্তি হয়ে যায়। পুনরায় আব্দুল খালেক গাজী আপিল করেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এদের সাথে জমি নিয়ে আমার একাধিক মামলা থাকায় এই জমির উপর উচ্চ আদালত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে ছয় মাসের জন্য একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আব্দুল খালেক ও তার ছেলেরা জমির গাছকাটা, মাছধরাসহ বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমি মঙ্গলবার আদালতের সরনাপন্ন হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর এ হামলা চালায়। এমনকি তারা সন্ত্রাসী দিয়ে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।
সাবেক এ সেনা সদস্য আরো বলেন, আব্দুল খালেক গাজীর ছেলে হুমায়ুন কবির ও মো. মাসুদের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। তারা এলাকায় মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত। তাদের বড় একটি মাদকের সিন্ডিকেট রয়েছে। আর এ মাদক বিক্রির টাকা দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আমাকে মারধর ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত হুমাযুন কবির গাজীকে একাধিকবার মোবাইলে চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: এনায়েত হোসেন বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ গিয়ে আহত আনসার আলীকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনায় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও জমিজমার বিষয়টি নিয়ে ওই বাড়িতে কয়েক দফা পুলিশ গিয়েও তা মিমাংশা করা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৬:৪১ ৪৭২ বার পঠিত