বাজার স্থিতিশীল রাখতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিন

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » বাজার স্থিতিশীল রাখতে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিন
শনিবার, ৭ নভেম্বর ২০২০



করোনাভাইরাসের মহামারীর পূর্বেই বাজারের ঊর্ধ্বমূখী গতি ছিল। করোনা পরিস্থিতিতে সেই গতি যেন পালে হাওয়া পেয়েছে। ক্রমাগত বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়। বাজারে পণ্যমূল্য একেবারেই নিয়ন্ত্রণে নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী। অক্টোবরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যম্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬.৪৪ শতাংশ। আর খাদ্যসূচকে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ ছাড়িয়ে ৭.৩৪ শতাংশে পৌঁছেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এত বেশি হারে বাড়েনি। বাজারে আলুর দাম বাড়তে বাড়তে প্রচলিত বাজারমূল্যের দ্বিগুণ হয়ে গেছে। শীত চলে এলেও বাজারে শাক-সবজির দাম এখনও অতিরিক্ত। ভোজ্য তেলের দাম চড়ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, খুচরায় খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১০৫ টাকা লিটার এবং পাম ১০০ টাকা লিটার দরে। বোতলজাত তেলের দামও লিটারে পাঁচ টাকা বেড়েছে। চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজসহ কয়েকটি নিত্যপণ্যের দাম আগেই রেকর্ড ভেঙেছে। বাজারে চলতি সপ্তাহেও বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছে চাল। সাধারণ মানের এক কেজি মিনিকেট চাল কিনতে লাগছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা। একটু ভালো মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল কিনতে লাগছে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। ব্রি আটাশ চালের দাম গত সপ্তাহে বেড়ে কেজিপ্রতি ৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল। এখনো সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া স্বর্ণা, পাইজামসহ মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকার ওপরে।
আগাম সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। চাহিদা ও জোগান নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো বিশ্বের অন্যান্য দেশ কিভাবে সামাল দেয়, সে ধারণাও সামনে রাখতে হবে। পর্যাপ্ত মজুদের বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। বাজারে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে পারত একটি বিকল্প বাজারব্যবস্থা। টিসিবিকে আরো সক্রিয় করার কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। গ্রামপর্যায়ে বিকল্প বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা কি খুবই কঠিন কোনো কাজ? কিন্তু সংশ্লিষ্টদের সেদিকে কোনো দৃষ্টি আছে বলে মনে হয় না। খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের লাভ ও লোভের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা গেলেও বাজার হয়তো এভাবে ঊর্ধ্বমুখী হতো না। কিন্তু বাজারে নিয়মিত নজরদারি ও তদারকি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে যেন অনীহা যথাযথ কর্তৃৎপক্ষের। বাজার স্থিতিশীল রাখা, ভোক্তাস্বার্থ সংরক্ষণ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। ঊর্ধ্বমুখী বাজারদরের কারণে সাধারণ মানুষের একপ্রকার নাভিশ^াস উঠে গেছে। করোনার কারণে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে, অন্যদিকে আয় কমে গেছে অধিকাংশ মানুষের। স্বল্প আয়ে টেনেটুনে সংসার চালাতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নি¤œমধ্যবিত্তদের। এরই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট নতুন ব্যয়। তাই মানুষের হিমশিম খাওয়া এই পরিস্থিতিতে আমরা আশা করি, পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকার দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৯:৪১   ৪৫৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ