রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ধারবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে
সোমবার, ২ নভেম্বর ২০২০



বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশার কথা যে, বৈশ্বিক নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি চরম সংকটে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা চাকরি হারিয়েছে। অনেকের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। এক লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা হয়েছিল, এ বছর প্রবাসী আয়ে বড় রকমের ধস নামতে পারে। কিন্তু না, সব আশঙ্কা অমূলক প্রমাণিত হয়েছে। তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবাহ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫৩.৫ শতাংশ বেড়েছে। গত শুক্রবার বিশ্ব রেমিট্যান্স পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘কোভিড-১৯ ক্রাইসিস থ্রো মাইগ্রেশন লেন্স’ শীর্ষক হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে প্রবাসী আয় আসতে পারে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগের বছরের তুলনায় বাড়বে ৮ শতাংশ। এ ছাড়া প্রবাসী আয় প্রাপ্তির দিক থেকে বাংলাদেশ এ বছরও অষ্টম স্থানে থাকবে।
কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের শ্রমবাজারগুলো নানা ধরনের সংকট মোকাবেলা করে আসছিল। বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। জ¦ালানি তেলের অব্যাহত দরপতনের কারণে সেসব দেশে শ্রমশক্তির চাহিদা কমেছে, অনেকে চাকরিও হারিয়েছে। আরেকটি প্রধান শ্রমবাজার মালয়েশিয়া একাধিকবার শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। আর করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক দেশ থেকেই বাংলাদেশিরা দলে দলে ফিরে আসতে শুরু করে। তার পরও প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়া সত্যিই আমাদের আশাবাদী করে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনীতির শ্লথগতির কারণে যাঁরা টাকা পাঠাননি, তাঁরা যেমন তৃতীয় প্রান্তিকে টাকা পাঠিয়েছেন, তেমনি মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে টাকা পাঠানোর প্রবণতা বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার প্রবাসী আয় গত বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ কমতে পারে। আর ২০২১ সালে কমে যেতে পারে ১১ শতাংশ। বিদেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে প্রতিবছর প্রতারকদের কাছে শত শত যুবক সর্বস্ব হারাচ্ছে, এমনকি প্রাণও দিতে হচ্ছে। এই যুবকদের সঠিক পথে বিদেশে পাঠাতে সরকারের প্রয়াস আরো জোরদার করতে হবে। দুনিয়াব্যাপী দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা যেমন বেশি, তাদের উপার্জনও বেশি। তাই আমাদের চেষ্টা করতে হবে বিদেশ গমনেচ্ছু তরুণ-যুবাদের কারিগরি দক্ষতা বাড়ানোর। পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে টাকা পাঠানোর পথ আরও সহজ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৯:৩৪   ৪০৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ