নতুন শ্রমবাজারের সন্ধান জরুরি

প্রচ্ছদ » সম্পাদকীয় » নতুন শ্রমবাজারের সন্ধান জরুরি
সোমবার, ২ নভেম্বর ২০২০



দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করোনা মহামারীর কারণে বিভিন্ন খাতের মতো এ খাতও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনিশ্চয়তা কাটিয়ে এ খাত আবার কবে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে-সেদিকে তাকিয়ে আছে দেশের লাখ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। এ সংকটে প্রবাসী কর্মীদের অনেক পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। মহামারী শুরু হওয়ার আগে প্রতিমাসে দেশ থেকে অন্তত ৫০ হাজার কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশ যেতেন। এখন কর্মীদের বিদেশ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে গত ৭ মাসে কয়েক লাখ কর্মী বিদেশ যাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আবার ছুটিতে যারা দেশে এসেছিলেন, তাদের অনেকে যেতে পারেননি। অনেকে বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেও মহামারীর কারণে যেতে পারছেন না। এদিকে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের কারণে মহামারী দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে এ সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকার মনে করছে, মহামারীর উন্নতি না হলে বিদেশে নতুন করে কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদেশফেরত কর্মীদের দেশে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে সরকার। জানা গেছে, সরকার বিদেশফেরতদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে স্বল্পসুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এজন্য পর্যাপ্ত তহবিলও আছে। এর বাইরে যারা বিদেশ থেকে বিভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরছেন, তাদের সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সনদপত্র দেয়া হবে। এ সনদপত্র ভবিষ্যতে বিদেশে তাদের কাজে লাগবে।
এখনও যেসব দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়নি সেসব দেশে দ্বিতীয় ঢেউ যাবে কি না, তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। মধ্যপ্রাচ্যসহ দেশের প্রধান প্রধান শ্রমবাজারে দ্বিতীয় তরঙ্গ না গেলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। এ ছাড়া শীত মৌসুম শেষ না-হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের অবস্থা কোনদিকে যাবে, তাও বোঝা যাচ্ছে না। মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি হলে নতুন শ্রমবাজার খোঁজা সম্ভব হবে। বস্তুত সবকিছুই নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। বর্তমান সংকটের কারণে আগামীতে অর্থনীতির ওপর যে প্রভাব পড়বে, তা মোকাবেলায় এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবাসী কর্মীদের নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের সেসব সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশ্বজুড়ে করোনার বেশকিছু টিকা ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ১০টি তৃতীয় বা চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষায় আছে। আশা করা হচ্ছে, শিগগির কার্যকর ও নিরাপদ টিকা বিশ্ববাসীর হাতে আসবে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে যে পরিমাণ টিকা পাওয়া যাবে, তা সবার জন্য সহজলভ্য করা সম্ভব হবে না। টিকা সহজলভ্য করতে ২০২১ সালের কয়েক মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এটা স্পষ্ট যে, করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে যে অনিশ্চয়তা ও সংকট সৃষ্টি হয়েছে, শিগগির তার সমাধান সম্ভব হচ্ছে না। সংকট কেটে গেলে বিশ্বজুড়ে নতুন করে শুরু হবে কর্মযজ্ঞ। তখন বিদেশে কর্মী পাঠাতে যাতে কোনো রকম সমস্যা সৃষ্টি না হয়, আগে থেকেই তার প্রস্তুতি নিতে হবে। নানা কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো সংকটে আছে। এ জন্য মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন শ্রমবাজার খুঁজতে হবে। একইসঙ্গে বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানোর ওপর গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৬:১৩   ৩২১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ডলার বাজারে অব্যাহত অস্থিরতা
ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে প্রতারণা
রাজনৈতিক সংলাপের তাগিদ : সমঝোতার বিকল্প নেই
বাজারে কারসাজি
নৌ দুর্ঘটনা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করুন
চিকিৎসক ধর্মঘট: রোগীদের জিম্মি করে কর্মসূচি অনৈতিক
নৌযানে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নিন
ফিটনেসহীন নৌযান: ভোলা নৌপথে দ্রুত ব্যবস্থা নিন
চরফ্যাশনের ঢালচর বনের ঢাল কারা?
বাজারে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস : সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে না



আর্কাইভ