ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি ॥
চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর ফ্যাশন গ্রামের কলেজ ছাত্রী ধর্ষিতা ও খুনের চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে অপরাধিরা উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে ফ্রিস্টাইলে পুলিশের সামনে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। ধর্ষিতা ও তার পরিবারবর্গকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে ধর্ষিতা ও তার পরিবারের লোকজন অসহায় অববস্থায় দিনযাপন করছেন।
জানা গেছে, পল্লী চিকিৎসক হরিশ চন্দ্র দাসের মেয়ে (ভিকটিম) ভোলা কলেজের বোটানী অনার্স (২য় বর্ষ) পরীক্ষা শেষ করে নিজ বাড়ী যাওয়ার পর একই এলাকার লম্পট রাজিম বিয়ের প্রস্তাব দেয়। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ১১ এপ্রিল-২০১৭ লম্পট রাজিম তার সঙ্গী মীল সায়েদ, বিল্লাল মটরসাইকেল যোগে রাতের বেলা ভিকটিমের বাড়ি পৌঁছে ঘরের পাশে ওৎ থাকে। ভিকটিম প্রকৃতির ডাকে সারা দিয়ে ঘরের বাহির হলে রাজিম ও তার সঙ্গীরা ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে পার্শ্ববর্তী বাগানে নিয়ে যায়। এসময় রাজিম ভিকটমিকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে রাজিম ও তার সঙ্গীরা ভিকটিমকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে আহত করে এবং গলায় ফাঁস লাগিয়ে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। এসময় ভিকটিমের আত্মচিৎকার শুনে তার মা ও আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনিত ঘটলে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়। বর্তমানে ভিকটিমকে ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে চরফ্যাশন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৬ জিআর ৮৫/১৭। আবদুল মালেক ভূইয়া গংরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভিকটিমের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। মামলা তুলে না নিলে প্রাণে মেরে ফেলারও একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে, ধর্ষক লম্পট রাজিমের পিতা আবদুল মালেক ভূইয়া নিজেদের অপরাধ এরানোর জন্য প্রকৃত ঘটটনাকে আড়াল করে ভিকটিমের পিতা, মাতা, কাকা, আত্মীয়স্বজনসহ সাক্ষীদেরকে আসামী করে চরফ্যাশন থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় ভিকটিমের পিতা, মাতাসহ অন্যান্য আসামীরা হাইকোর্ট থেকে জামিন লাভ করেন। উক্ত মামলার ৫/৬নং আসামী রঞ্জন দাস (৬৫), নিল রতন দাস (৭০) ধর্ষনের ঘটনার ১ সপ্তাহে পূর্বে চিকিৎসার জন্য ঢাকা যান। এবং ৮ এপ্রিল-১৭ ঢাকা থেকে পাসপোর্ট ভিসা করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে চলে যান। অথচ ১১ এপ্রিল ঘটটনার তারিখে তাদেরকেও আবদুল মালেক ভূইয়া ৫/৬নং আসামী করেন। মামলার আসামী পলাশ চন্দ্র দাস, তার স্ত্রী নিলিমা দাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ঘটনাস্থল থেকে ১১ কিলোমিটার দুরে চরফ্যাশন সদরে বসবাস করেন। ঘটনার তারিখ ও সময়ে পলাশ চন্দ্র দাস শিক্ষক সমিতিতে সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মিটিং এ ছিলেন। অথচ পলাশ চন্দ্র দাস ও তার স্ত্রীকে আসামী করে আবদুল মালেক ভূইয়া মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই দুই শিক্ষককে আসামী করায় চরফ্যাশন উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। যা বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, উক্ত মামলার আসামী শিক্ষক পুলিন চন্দ্র দাস ঘটনাস্থল থেকে ১১ কিলোমিটার দুরে চরফ্যাশন সদরে সহপরিবারে বসবাস করছেন। তাকেও ওই মামলায় আসামী করা হয়। অন্যান্য আসামীদেরকেও হয়রানী করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে আবদুল মালেক ভূইয়া আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওইসব পরিবারের লোকজন আবদুল মালেক ভূইয়া গংদের দায়ের করা এই মিথ্যা মামলা ও হুমকি ধামকি থেকে রেহাই পেতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৮:১৬ ৩৯০ বার পঠিত