সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ প্রণোদনার চাল পায়নি ভোলার জেলেরা

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ প্রণোদনার চাল পায়নি ভোলার জেলেরা
শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২২



মোকাম্মের মিশু ॥
সাগরে মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়েছে এক সপ্তাহ আগে অথচ এখনো ভোলার জেলেরা তাদের প্রণোদনার চাল পায়নি। আদৌ পাবে কিনা সে বিষয়েও সংশয় রয়েছে জেলেদের।
শুধু ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা নয়, ইলিশের প্রজনন মৌসূমসহ সবক’টি নিষেধাজ্ঞায়ই ভোলায় জেলেদের চাল নিয়ে চালবাজির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ মৎস্য সংগঠনের নেতাদের। এ অবস্থার অবসান চান জেলে এবং জেলেদের সংগঠনগুলো।

---

২০ মে থেকে ২৩ জুলাই ৬৫ দিন সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় দুর্দিন যাচ্ছিলো ভোলার সমুদ্রগামী জেলেদের। এত লম্বা একটা সময় ধরে ধার-দেনা করে সংসার চালানো ছিলো তাদের কাছে বড় কষ্টের বিষয়। এসময় জেলেদের জন্য সহায়তা হিসাবে জনপ্রতি ৮৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ ছিলো। প্রথম কিস্তিতে ৫৬ কেজি চাল দেযা হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে গেলেও এখনো দ্বিতীয় কিস্তির ৩০ কেজি চাল পায়নি তারা।
দৌলতখান মৎস্য ঘাটের জেলেরা জানিয়েছে, তাদের জন্য বরাদ্দকৃত ৮৬ কেজি চালের মধ্যে প্রথম দফায় তারা ৫৬ কেজি চাল পেয়েছে। কেউ কেউ এর চেয়ে অনেক কম পেয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতি ভোলার সভাপতি মোঃ এরশাদ জানিয়েছেন, শুধু ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা নয়; অন্যান্য নিষেধাজ্ঞায়ও জেলেরা সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চাল পায় না। তাদের অভিযোগ এবারের ৬৫ দিনেও সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে জেলেদের চাল বিতরণ করা হয়নি।
চাল বিতরণে অনিয়ম এবং ধীরগতির কথা স্বীকার করে দৌলতখান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজুল হাসনাইন বলেছেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার জন্য ভোলার জেলেদের মাঝে ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৫ শত ৮২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরো ১ হাজার ৯ শত ২০ মেট্রিকটন চাল বিতরণ কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। চালগুলো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ আসে। শিঘ্রই যাতে জেলেরা চাল পেতে পারে সেজন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বিতরণ করা সম্ভব হবে। জেলায় ১ লাখ ৪৪ হাজার ১ শত ৮৩ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এরমধ্যে সমুদ্রগামী জেলের সংখ্যা হচ্ছে ৬৩ হাজার ৯ শত ৫৪ জন।
গণমাধ্যমকর্মী অ্যাডভোকেট নজরুল হক অনু বলেন, হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা আসে না। নিষেধাজ্ঞার আগে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং মৎস্য বিভাগ একটা প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তারা সভা, সমাবেশ ও পোস্টার, লিফলেট, ফেস্টুনের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। কিন্তু প্রস্তুতি পর্বে কিভাবে চাল বিতরণ করা হবে সে বিষয়ে কোন প্রস্তুতি থাকে না। যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হতো, জেলেদের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতো, তাহলে প্রস্তুতি পর্বেই চাল বিতরণের আদেশ দিয়ে দিতে পারতো এবং দিলে জেলেরাও সঠিক সময়ে চাল পেতো। এখন মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, মৎস্যবিভাগ, খাদ্য বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে চাল বিতরণ করা হয় বিধায় কোন সময়ই আমলাতান্ত্রিক লাল ফিতা থেকে সহজে বিতরণের আদেশ বের হতে পারে না। জেলেরাও সঠিকভাবে চাল পায় না। এছাড়া চাল বিতরণে অনিয়ম এখন একটি স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বানও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৩:৫১   ৩৪১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


‘নকশী কাঁথা’ সেলাই করে ঘুরে দাঁড়ালেন ভোলার আমেনা খানম
ভোলায় ওমানিয়ান টুপি সেলাই প্রশিক্ষনের সার্টিফিকেট বিতরন
ভোলায় প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী ও উদ্যোক্তাদের মেলা অনুষ্ঠিত
ভোলায় অনুষ্ঠিত হলো প্রাণী প্রদর্শনী মেলা
চরফ্যাশনে দিনব্যাপী প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী
বোরহানউদ্দিনে ফুটপাতে ঈদের জমজমাট কেনাকাটা
পথে পথে চাঁদাবাজি, ভোলার তরমুজচাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে
ভোলায় ব্যবসায়িক অগ্রগতি পর্যালোচনা সম্মেলনে রূপালী ব্যাংক পিএলসিকে সর্ব শীর্ষে নিয়ে যাবার অঙ্গীকার
ভেজাল মসলা তৈরি: ভোলায় ২ কারখানাকে জরিমানা
ভোলায় বেড়েছে আলু ও কাঁচা মরিচের দাম



আর্কাইভ