চরফ্যাশনে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় পুলিশকে দায়ি করছে স্থানীয়রা

প্রচ্ছদ » অপরাধ » চরফ্যাশনে নির্বাচনী সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় পুলিশকে দায়ি করছে স্থানীয়রা
রবিবার, ২৭ জুন ২০২১




বিশেষ প্রতিবেদক ॥

ভোলার চরফ্যাশনের হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নে ২১ জুন নির্বাচনী সহিংসতায় নিরীহ ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য  স্থানীয়রা পুলিশকেই দায়ী করছেন। তাদের মতে পুলিশ জনগণের জান মাল রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া  একজন প্রার্থীর পক্ষে নগ্নভাবে কাজ করেছে। যে কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। অনেকে সরাসরি পুলিশের গুলিতেই ঐ ব্যক্তি মারা গেছে বলে দাবী করছেন। তবে  বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এই ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেছেন,দোষী সে যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

---

নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত মনির হোসেনের চরফ্যাশন উপজেলার চর ফকিরা পাঁচ কপাট এলাকার  বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম। ৫ সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনাক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে  দিশেহারা স্বজনরা। তাদের দাবি মনির পেশায় একজন জেলে। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। নেহায়েত সংঘর্ষের কথা শুনে মাকে উদ্ধার করতে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলেন। মাকে বাঁচাতে গিয়ে ছেলের এমন নির্মম মৃত্যুতে হতবাক এলাকাবাসীও। তাদের অভিযোগ পুলিশ একজন প্রার্থীর পক্ষ নেয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাওয়ায় পুলিশ তাদের এবং জনগণের জানমাল রক্ষায় গুলি করে। এতে প্রাণ যায় মনিরের। শিশু ও নারীসহ আহত হয় অন্তত ৩০ জন । তবে অন্য কোন পক্ষের গুলিতেও মনির মারা যেতে পারে বলে মনে করেন কেউ কেউ। খুনি সে যেই হোক তদন্ত করে তাদের বিচার করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছেন এলাকাবাসী স্থানীয় জসিম, নূর উদ্দিন, মনজুসহ স্থানীয় আরো বেশ কয়েক জনের সাথে কথা বললে তারা জানান, ভোটের দিন সকালে ইউছুফ ও ইয়াছিন দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পুরুষ কেন্দ্রে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এরপর চর ফকিরা কো-এইড প্রাথমিক বিদ্যালয় মহিলা কেন্দ্রে মেম্বার প্রার্থী ইয়াছিনের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্র দখলের করতে গেলে পুলিশ বাধ্য হয়ে জীবন ও কেন্দ্রের ভোট সুরক্ষির রাখতে গিয়ে গুলি ছুড়েন। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মনির। আলাউদ্দিন নামের আরো একজন গুলিবিদ্ধ বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে রয়েছে। যদিও পুলিশ ও প্রিজাইডিং বলছেন পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন। তাদের গুলিতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এর পরে পুলিশ ইউসুফ শিকদারের ছেলে রিয়াজকে সু কৌশলে পুলিশ কেন্দ্র থেকে দড়ে নিয়ে মনির হত্যা মামলার প্রধান আসামি করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলা বলে অভিহত করেন স্থানীয়রা।
এদিকে ভোলার একজন এডভোকেট নজরুল হক অনু বলেন, পুলিশ এই ঘটনার জন্য কতটুকু দায়ি সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সুরত হাল ও পোস্ট মর্টেম রির্পোট বিবেচনায় আনার পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করার দাবি এই আইনজীবীর।
পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস.এম আক্তারুজ্জামান সম্প্রতি নিহতের বাড়ী এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শণ শেষে সাংবাদিকদের জানান, এমন মৃত্যুর জন্য দু:খ প্রকাশ করে নিহত পরিবারকে পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে ঘটনার সার্বিক বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ইউসুফ সিকদার ও ইয়াসিন মাঝির সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়ে। মনির গুলি বিদ্ধ হয়ে মারা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৫:৩২   ৫০১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


নেয়ামতপুর চরে ভূমি মালিকদের উপর ভূমিদস্যুদের হামলা ॥ গুরুতর আহত ২৫
চরফ্যাশনে অন্যের জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাসেলের বিরুদ্ধে
বাপ্তায় জমি সংক্রান্ত বিরোধে এতিম সন্তানের উপর হামলা
‘টাকা পেলেই ভাতা করার দায়িত্ব নেন দফাদার’
চরফ্যাসনে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
ভোলায় ১ হাজার পিচ ইয়াবাসহ আটক ১
দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ॥ আহত-৩০
ভোলায় অন্যের ভোগদখলীয় জমির গাছ কেটে দখলের চেষ্টা
পুলিশ চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রতারণা, অবশেষে আটক
তারা কখনো জিন বাবা- কুফরি বাবা, আবার কখনো কালী বাবা



আর্কাইভ