চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥
শিক্ষকদের ভুলে বিপাকে পরেছে চরফ্যাশন উপজেলার হাজার, হাজার শিক্ষার্থী। দেশের তিন কোটির অধিক শিক্ষার্থীর জন্য ইউনিক আইডি কার্ড (একক পরিচয়) দিতে যাচ্ছে সরকার। প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর সকল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য ১০ বা ১৬ ডিজিটের শিক্ষার্থী শনাক্ত নম্বর থাকবে ইউনিক আইডিতে, যা পরবর্তীতে হবে ওই শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর। আর এ ইউনিক আইডি’র জন্য চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের নির্দেশনায় উপজেলার সকল শিক্ষার্থীদের তথ্য সংরক্ষণ করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইউনিক আইডির প্রফাইল প্রণয়নে পিতা মাতার জন্মনিবন্ধন, শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ, রক্তের গ্রুপসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র জমা নিচ্ছে। তবে শিক্ষা অফিস থেকে শিক্ষার্থীদের তথ্যাদি সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা নেয়ার বিষয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকলেও কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভুল সিদ্ধান্তে বিপাকে পরেছে হাজার,হাজার শিক্ষার্থী। সোমবার (২৪মে) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার একাধীক ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে শিক্ষার্থীরা রক্তের গ্রুপ পরিক্ষা ও রিপোর্ট নেয়ার জন্য দলাদলি করে হুমরি খেয়ে পড়ছে বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলোতে। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ৪শতাধীক শিক্ষার্থী রক্তেরগ্রুপ পরিক্ষার করার জন্য একটি ডায়াগণস্টিক সেন্টারে সকাল থেকেই ভিড় জমায়। একাধীক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের নির্দেশে রক্তেরগ্রুপ পরিক্ষার জন্য ডায়গণস্টিক সেন্টারগুলোতে ভিড় করেছে এসব শিক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্যবিধি বা কোনরকমের শৃঙ্খলাও ছিলোনা ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলোতেও।
একাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ শিক্ষকরা দুই দিনের মধ্যে রক্তের গ্রুপের রিপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দিলে পরবর্তীতে কাগজ পত্র জমা নেয়া হবেনা বলে জানিয়েছেন। এ কারণে শিক্ষার্থীরা ডায়াগণস্টিক সেন্টারে ভিড় জমিয়েছেন বলে দাবী করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রক্তেরগ্রুপসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা না দিলে স্কুলে রাখা হবেনা বলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রক্তেরগ্রুপ পরিক্ষা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এসব শিক্ষার্থীরা চেয়ারম্যানহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়,হাজারীগঞ্জ ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা,চরফকিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্যান্য স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসার বিভিন্ন শ্রেণীতে অধ্যায়নরত বলে জানান।
এ বিষয়ে ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মামুন হোসেন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, দুই দিনের মধ্যে কাগজপত্রসহ প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেয়ার বক্তব্যটি সঠিক নয়। সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ট থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত (১১থেকে ১৭ বছর) প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থীকে দেয়া হবে এই ইউনিক আইডি। এবিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার খলিলুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে শিক্ষার্থীদের সকল ডাটা সংরক্ষণে রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলেও নির্দিষ্ট কোন তারিখ দেয়া হয়নি। খুব শিগ্রই যে সকল প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার রয়েছে সে সকল প্রতিষ্ঠানে ট্রেনিং এর মাধ্যমে উপজেলার সকল শিক্ষার্থীর ইউনিক আইডির তথ্য সাবমিট করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন জানান, এবিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা দেয়া নেই। শিক্ষার্থীদের কোনোরকম বিভ্রান্তীকর পরিস্থিতিতে যেন পড়তে না হয় এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বলা হবে। এবং ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলো যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে এজন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০:২৭:৪২ ৫৬৮ বার পঠিত