রিভার ফায়ার স্টেশন না থাকায় অগ্নিকান্ডের ঝুঁকির মুখে ভোলা নৌ-পথ ও চরঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ

প্রচ্ছদ » জেলা » রিভার ফায়ার স্টেশন না থাকায় অগ্নিকান্ডের ঝুঁকির মুখে ভোলা নৌ-পথ ও চরঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ
রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১



আদিল হোসেন তপু ॥
নদী বেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলায় কোন রিভার ফায়ার স্টেশন না থাকায় অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি মুখে জেলার ফেরী ঘাট ও চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। প্রায়ই নদীর মাঝ খানে ফেরীতে ঘটছে অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা। ফলে  নষ্ট হচ্ছে ব্যবসায়ীদের কোটি টাকার সম্পদের। শুধু তাই নয় বিভিন্ন চরাঞ্চলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে গতানগতিক পদ্ধতিতে আগুন নিয়ন্ত্রনে হিমশিম খেতে হয় দমকল বাহিনীকে। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থল কাম নদী ফায়ার স্টেশন দাবি জানিয়ে আসলেও এর বাস্তবায়ন হয়নি এখনও।
তবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ-পরিচালক জানায়, অগ্নিঝুঁকি ও নৌ-দুর্ঘটনা হ্রাস করার জন্য ভোলায় ৪টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নিমার্ন করার জন্য অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

---

চারদিকে নদী বেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলা। এই জেলা যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নৌ-রুট ও ফেরী সার্ভিস। সম্প্রতি ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে মেঘনা নদীর মাঝখানে ‘এমভি কলমীলতা’ নামে একটি ফেরিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পণ্যবাহী ট্রাকসহ নয়টি গাড়ি পুড়ে গেছে। আগুনে লেগে প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। শুধু স্থল ফায়ার সার্ভিস দিয়ে আগুন নেভানো সম্ভব হচ্ছে না। মাঝ নদীতে আগুন লাগলে সড়ক পথে ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। তাই ব্যবসায়ীদের দাবী জেলায় রিভার ফায়ার স্টেশন থাকলে আগুন লাগার ঘটনা শুনার সাথে সাথে আগুন লাগার স্থানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
নাগরকি সমাজের প্রতিনিধি এডভোকেট নজরুল হক অনু জানায়, ঢাকা থেকে বিভিন্ন মালামাল ট্রাকে করে আসলে তখন ফেরীতে করেই আসতে হয়। কিন্তু ফেরীতে যদি আগুন লাগে তখন তাৎক্ষনিক আগুন নেভানোর কোন সুযোগ থাকে না। সম্প্রতি কলমীলতা ফেরীতে আগুন লাগাই তার দৃষ্টান্ত উদাহরণ। ভোলা শহর থেকে ফায়ার সার্ভিসের টিম নদী পথে মাঝ নদীতে আগুন নিভাতে যে সময় লাগে এরই মধ্যে সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। তাই আমি মনে করি নদী পথে অগ্নিদুর্ঘটনা এড়াতে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরী ঘাটে একটি ভাসমান রিভার ফায়ার স্টেশন নিমার্ণ করা দরকার। যদি নির্মাণ করা নাহয় তবে নৌ-পথে ব্যবসায়ীরা মালামাল আনা নেয়া একটা ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যাবে। তাই ব্যবসায়ীদের পন্য আনা নেয়ার সময়  অগ্নিঝুঁকি নিরসন করার জন্য অতিদ্রুত সরকারের এখানে রিভার ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা উচিত।
পূর্ব ইলিশা যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ভোলায় দুটি ফেরীঘাট সহ বিভিন্ন চরাঞ্চল রয়েছে। সেখানে আগুন লাগলে তাতক্ষনি গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার ক্ষেত্রে অনেক সময় লেগে যায়। সম্প্রতি মেঘনা নদীর মাঝখানে ফেরীতে আগুন লাগার কারনে ফায়ার সার্ভিস দেড়িতে পৌঁছানোর কারণে ৯টি মালবাহী গাড়ী পুড়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে গেছে। ভোলা যে ফায়ার স্টেশন আছে তা নদীতে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা অনেক কষ্ট সাদ্য হয়ে পরে। তাই সরকারের কাছে দাবী করছি এই অঞ্চলের মানুষের গুরুত্বের কথা চিন্তা করে এখানে রিভার ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা হউক।
বিআইডব্লিউটিসির বিভাগীয় প্রধান মো: ইমরান হোসেন জানান, ভোলা সহ ২১ জেলার পন্যবাহী ট্রাক চলাচল করে ভোলা-লক্ষীপুর-ভোলা-বরিশাল ফেরী সার্ভিস হয়ে। ফলে প্রতিনিয়ত অগ্নিকান্ডের ঝুঁকির মধ্যে থাকেই এই রুটে ব্যাবসায়ীরা পন্য আনা নেয়া করে থাকেন। তাই ইলিশা ফেরী সার্ভিস এর পাশেই অগ্নিকান্ডের ক্ষয়ক্ষতি ফেরী লঞ্চকে অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে এখানে রিভার ফায়ার স্টেশন (নৌ-ফায়ার সার্ভিস) নির্মাণ  করার আহবান জানায়।
আর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভোলা এর উপ-পরিচালক মো: ফারুক হোসেন সিকদার জানায়, ভোলা একটি নদী মাত্রিক এলাকা। এখানে নৌ-পথে ও চরাঞ্চলে প্রচুর অগ্নকিান্ডের ঘটনা ঘটে থাকে। তাই অগ্নিঝুঁকি ও নৌ-দুর্ঘটনা হ্রাস করার জন্য ভোলায় ২টি স্থল কাম নদী ফায়ার স্টেশনসহ ৪টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ করার জন্য অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ভোলার ইলিশায় একটি অন্যটি চরফ্যাশনের বেতুয়া নদীতে স্থল কাম নদী ফায়ার স্টেশন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এগুলো  নির্মাণ করা হলে আশা করি ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতি পরিমান কমে আসবে।
এছাড়া জেলার বিচ্ছিন্ন ছোট বড় মিলে ৭০টির মতো চরঞ্চল রয়েছে। সেখানে দ্রুত গতিতে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন পৌঁছাতে হলে অবশ্যই পানি পথে যেতে হবে। সেই কারণেই নৌ-ফায়ার স্টেশন (রিভার ফায়ার স্টেশন) খুবই জরুরি। জেলায় বর্তমানে ৭ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২:২৪:৪৩   ৪০৮ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোলায় সমাবেশ
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে
ভোলায় ৬ দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের স্মারকলিপি
ভোলায় তীব্র তাপদাহে অস্থির জনজীবন
ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদানে অনিশ্চয়তা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: ভোলায় তিন উপজেলার ৩৮ প্রার্থীর সকলের মনোনয়নপত্র বৈধ
ভোলায় কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ঘুষ ছাড়া কাজ হয়না ভোলার বিএমইটি অফিসে॥ প্রতিদিন ঘুষের আয় প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা!!
আপনাদের আমানত ভাল পাত্রে জমা রাখবেন: চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুছ মিয়া
ভোলায় ফিল্মি স্টাইলা অপহরণ ॥ কতিপর উদ্ধার



আর্কাইভ