আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোকে অমানবিক উল্লেখ করে দেশটির কড়া নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস। হামাস বলেছে, ওয়াশিংটনের ভেটো পদক্ষেপকে অনৈতিক ও অমানবিক বলে মনে করে তারা।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য ইজজাত এল-রেশিক বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গণহত্যা ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি অংশ নিয়েছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলছেন- জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো বিপর্যয়কর ডেকে আনবে। এদিকে অবরুদ্ধ গাজার দক্ষিণ খান ইউনুসে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। সেখানে হামলায় বেশ কয়েকজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উত্থাপিত প্রস্তাবটির সহপৃষ্ঠপোষক ছিল অন্তত ৯৭টি দেশ। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রস্তাবটি তোলা হয়েছিল।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ১৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। ভোটদানে বিরত ছিল যুক্তরাজ্য। শেষ পর্যন্ত ভেটো ক্ষমতাধর যুক্তরাষ্ট্র বিপক্ষে ভোট দিলে প্রস্তাবটি আটকে যায়।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের ভেটো (আমি মানি না) ক্ষমতা রয়েছে। এ দেশগুলোর কোনো একটি বিপক্ষে ভোট দিলে প্রস্তাব পাস করা যায় না।
প্রস্তাব আটকের পক্ষে যুক্তি হিসেবে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত রবার্ট উড বলেন, ‘প্রস্তাবটি ভারসাম্যপূর্ণ নয়। এতে বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়নি।’
তবে গাজা ইস্যুতে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদকে অকার্যকর করে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছে রাশিয়া। এর ফলে গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি।
গাজা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ আবারও ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত নিকোলাস দে রিভিয়েরে। তিনি বলেন, গাজায় সংঘটিত মানবিক দুর্যোগের বিষয়ে ফ্রান্স অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
অবশ্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আটকে দিয়ে ইসরায়েলের পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে দেশটি। ভোটাভুটির পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের দূত গিলাদ এরদান টুইট (বর্তমান এক্স) করে এ ধন্যবাদ জানান।
জাতিসংঘ বলছে, গাজার জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বাইরে চলে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত সাহায্য পাচ্ছে না। সেখানে কঠিন মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
গাজায় হামাসের কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলের হামলায় ৭ হাজার শিশুসহ মোট ১৭ হাজার ১৭৭ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা করেছিল। এতে ১২০০ ইসরায়েলি নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ২৪০ জনকে জিম্মি করেছিল হামাস যার মধ্যে কিছু জিম্মিকে সাময়িক যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:০৯:৫৫ ১১৮ বার পঠিত