যুদ্ধবিরতি হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করায় ফিলিস্তিনিকে পিটিয়ে হত্যা

প্রচ্ছদ » আন্তর্জাতিক » যুদ্ধবিরতি হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করায় ফিলিস্তিনিকে পিটিয়ে হত্যা
মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩



---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

হামাস এবং ইসরাইলের মধ্যে বন্দী বিনিময় চলছে। এই চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরাইলি জেল থেকে মুক্ত হওয়া ফিলিস্তিনি শিশুরা দাবি করেছে, বন্দী অবস্থায় তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিল এবং তাদের বেশ কয়েকজন সহবন্দীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

সোমবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে তৃতীয় বন্দী বিনিময় হয়। এদিন ইসরাইলের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়া ৩৯ ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কিশোররা রয়েছে। একইসাথে হামাস গাজায় বন্দী ১৩ ইসরাইলিকে মুক্তি দেয়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে খলিল মোহাম্মদ বদর আল-জামাইরা (১৮) ছিলেন। ইসরাইলি বাহিনী যখন তাকে আটক করেছিল তখন তার বয়স ছিল ১৬।

খলিল মোহাম্মদ বদর বলেন, ইসরাইলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীদের সাথে দুর্ব্যবহার ও মারধর করা হয় এবং শিশুদের প্রতি আলাদা কোনো আচরণ করা হয় না।

খলিল মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘তারা বৃদ্ধ এবং তরুণের মধ্যে পার্থক্য করে না’।

তিনি আরো বলেন, ‘দু’জন কিশোরকে ওফার কারাগার থেকে পাঁজর ভাঙ্গা অবস্থায় সেখানে স্থানান্তর করা হয়েছিল এবং তারা নড়াচড়া করতে অক্ষম ছিল।’

একইভাবে, ওমর আল-আতশান নামে এক মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি কিশোর বলেন যে- মুক্তির আগে তাকে নাকাব কারাগারে রাখা হয়েছিল। ওই কারাগারে তার সাথে দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন করা হয়েছিল।

রোববার অধিকৃত পশ্চিম তীরে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের আগমনের একটি লাইভ কভারেজের সময় তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘তাদের যে নির্যাতন করা হয়েছে তা অবর্ণনীয় ছিল।’

তিনি বলেন যে- কারাগারে পানি ও খাবারের অভাব ছিল এবং সেখানে তাদের নিয়মিত মারধর ও অপমান করা হতো।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সুখ সম্পূর্ণ হয়নি কারণ এখনো আটকে থাকা অনেক বন্দী রয়েছে’।

এ সময় আবু আসাব নামে এক বন্দীর নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাকে কারাগারে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

ওমর আল-আতশান বলেন, আবু আসাবকে অত্যধিক মারধর করা হয়েছিল। আমরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিলাম। দেড় ঘণ্টা পর যখন ডাক্তার আসেন তার আগেই নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান আসাব।

যুদ্ধবিরতি হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করাই আবু আসাবকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি প্রশ্নের কারণে আবু আসাবকে নির্যাতন করা হয়েছিল, তিনি ওয়ার্ডেনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যুদ্ধবিরতি হয়েছে কিনা। তারপর তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।’

এদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ১৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৮ হাজারেরও বেশি শিশু এবং নারী। আহত হয়েছে ২৮ হাজার ২০০ জনেরও বেশি।

গত মাস থেকে অবরুদ্ধ ছিটমহলে ইসরাইলের অবিরত বিমান ও স্থল হামলায় হাসপাতাল, মসজিদ এবং গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ইতোমধ্যে ১ হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেছে বলে ঘোষণা করে। এর প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরাইল।

এক বিবৃতিতে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ বলেন, গত শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে ইসরাইলে পাঁচ হাজার রকেট বর্ষণের মাধ্যমে ‘অপারেশন আল-আকসা স্ট্রম’ শুরু হয়েছে। এ সময় ইসরাইল গাজা থেকে অনুপ্রবেশের কথা স্বীকার করে।

বস্তুত, ১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে।

সূত্র : মিডল ইস্ট আই

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪২:৪৬   ১০৩ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


অষ্ট্রেলিয়া ডে পুরষ্কার পেলেন নেহাল নাফসি রুপাই
অষ্ট্রেলিয়া ডে পুরষ্কার পেলেন নেহাল নাফসি রুপাই
গাজায় প্রতি ঘণ্টায় দুজন মায়ের মৃত্যু: জাতিসংঘ
গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ১৬৫ ফিলিস্তিনি
বিদ্রোহীদের হামলা: ভারতে পালাল মিয়ানমারের ৬০০ সেনা
এবার ইরানকে যে হুশিয়ারি দিলেন নেতানিয়াহু
রাশিয়ার জন্য নতুন ড্রোন বানাল ইরান, ব্যবহৃত হবে ইউক্রেনে
‘গাজায় জীবন বাঁচানোর কোনো কিছু নেই’
‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির চেয়েও গাজার ধ্বংসযজ্ঞ বড়’
গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে জাতিসঙ্ঘের জরুরি সভা



আর্কাইভ