প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ইলিশ উৎসবে জেলেরা

প্রচ্ছদ » চরফ্যাশন » প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ইলিশ উৎসবে জেলেরা
মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৩



---

চরফ্যাসন প্রতিনিধি ॥

মৎস্য প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে মেঘনা ও তেঁতুলীয়ায় মা ইলিশ শিকারের উৎসব করছে জেলেরা। চরফ্যাশন উপজেলার নদীগুলোতে দিনে ও রাতে আড়ালে আবডালে উৎসবমুখরভাবে মা ইলিশ শিকারের চিত্র অহরহ দেখা গেলেও নিরব ভূমিকা পালন করছে মৎস্য প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তাদের নির্ধারিত হারে ঘুষ পরিশোধ করে রাতে মাছ শিকারের ‘অনুমতি’ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলেরা। রাতের শেষভাগে স্বল্প সময়ের জন্য মেঘনা পাড়ের জমে উঠা মাছঘাট গুলোতে হানাদিয়ে পুলিশের লোকজনও জেলেদের শিকার করা মাছে ভাগ বসাচ্ছে বলেও জানায় জেলেরা।

সরজমিন ঘুরে সোমবার রাতে তেঁতুলীয়া ও মেঘনার বেতুয়া নতুন ¯¬ুইজঘাট, সেন্টারের ঘাট এবং ডাকতারের ঘাট গাছির খাল ও সামরাজ এলাকার মৎস্যঘাট গুলোতে মা ইলিশ শিকার ও রাতের আঁধারে ক্রয়-বিক্রয়ের উৎসব দেখাগেছে। যদিও এসময় মেঘনা নদী বা সংলগ্ন মৎস্য ঘাটগুলোতে প্রশাসনের কোন লোকজনের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

সূত্রে জানা যায়, চরফ্যাশনে প্রশাসনের কর্তারা মেঘনা ও তেঁতুলীয়ার মৎস্য ঘাটের দালালদের মাধ্যমে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে নিষিদ্ধ সময়ে মাছ শিকারের সুযোগ দিয়েছে। এজন্য প্রতি দিন রাতের মেঘনা ও তেঁতুলীয়ায় মা ইলিশ শিকারের উৎসব চলছে। নদীতে নিষেধাজ্ঞার সময়ে মা ইলিশ শিকারের খবরে গত রোববার রাতে মেঘনা ও তেঁতুলীয়ার নতুন ¯¬ুইজ, সেন্টারেরঘাট এবং ডাকতারের ঘাট ও গাছির খাল, সামরাজ ঘাট এলাকায় গেলে দেখা যায় দিনে ও মধ্যরাতে জাল ফেলার সময় হলে জেলেরা জাল নৌকা নিয়ে মেঘনা ও তেঁতুলীয়ায় নেমে যাচ্ছে। রাত ৩টার পর থেকে জেলেরা নৌকাভর্তি মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরতে থাকে। কিন্ত সংবাদকর্মীদের ‘অপ্রত্যাশিত’ উপস্থিতির খবর পেয়ে জেলেরা ঘাট ছেড়ে দ্রুত অন্যত্র চলে যেতে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুন স্লুইজঘাট ও গাছির খাল ঘাটের জেলেরা জানান, মৎস্য অফিসের সাথে আতাঁত করে একটি দালাল চক্র প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য জেলেদের থেকে নির্দিষ্ট হারে টাকা নিয়েছে। যেসব জেলেরা টাকা দিয়েছে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় প্রত্যেক রাতেই কেবল সেই সব জেলেরা মাছ ধরতে পারছে।

গাছির খাল ঘাটের জেলে মহসিন জানান, রাতের মেঘনা ও তেঁতুলীয়ায় শিকার করা মাছের একটা অংশ প্রতি রাতে দালালদের থেকে পুলিশ বুঝে নিচ্ছে। আর দালালরা ৫ হাজার টাকা মূল্যে ৮০ পিস করে (এক পোন) ইলিশ জেলেদের থেকে কিনে নেয়। পরে এই মাছ দালালরা সাড়ে ৭ হাজার টাকা পোন মূল্যে (৮০ পিস) বাছাইকৃত স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে।

নুরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিরাতেই মা ইলিশ শিকারে মেতে থাকে জেলেরা। দুলারহাট থানার গাছিরখাল বেড়ির মাথায় ভোর রাতে বসছে ইলিশের হাট। মৎস্য বিভাগ ও থানা পুলিশকে জানালেও গুরুত্ব দিচ্ছে না কেউ।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার জানান, মৎস্য বিভাগের টিম মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় টহল দিচ্ছে। এছাড়াও কোষ্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের অভিযানিক দলের টহল চলমান রয়েছে। দুটি নদীর দুরত্ব হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। মাছ ধরতে দেয়ার জন্য কারা টাকা নেয় এবং ঘাটে ঘাটে মা ইলিশ বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪২:৩০   ১২১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

চরফ্যাশন’র আরও খবর


চরফ্যাশনে অটোরিকশার চাপায় নিথর পথচারী
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত
চরফ্যাশনে ভূমিদস্যু মুছার নেতৃত্বে নারী ও শিশুর ওপর সন্ত্রাসী হামলা
দালালদের খপ্পড়ে পড়ে নিঃস্ব জীবন ॥ চরফ্যাশন উপজেলার পাচঁ প্রবাসীর আর্তনাদ!
চরফ্যাশনে চুরি ও ডাকাতি থেকে মুক্তি ও অপরাধীদের শাস্তির দাবীতে জেলেদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
চরফ্যাশনে ব্যবসায়ীকে হাত পা বেধেঁ মারধরের অভিযোগ
চরফ্যাশনে পলিথিন পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে জ্বালানি তেল
চরফ্যাশনে অন্যের জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রাসেলের বিরুদ্ধে
চরফ্যাসনে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
ইডেন ছাত্রীর বিয়ের দাবীতে মিথ্যা অপপ্রচার থেকে মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন



আর্কাইভ