মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ॥ ২ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও প্রণোদনার চাল পায়নি ভোলার জেলেরা

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ॥ ২ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও প্রণোদনার চাল পায়নি ভোলার জেলেরা
বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২



মোকাম্মেল মিশু ॥
দেশের নদ-নদীতে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বেকার হয়ে পড়েছে ভোলার তিন লাখেরও বেশি জেলে। আয়-রোজগার থেকে বঞ্চিত এসব জেলেরা তাদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনার চাল নিষেধাজ্ঞার দু’সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়ার পরও পায়নি। ২/১টি ইউনিয়নে চাল বিতরণ শুরু হলেও অধিকাংশ ইউনিয়নে এখনো চাল পৌঁছায়নি।
বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাবে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে এসব জেলেদের। অন্যদিকে নিবন্ধনের আওতায় আসতে না পারায় লক্ষাধিক জেলে চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। মৎস্য বিভাগ বলছে, নির্ধারিত জেলেদের মাঝে শীঘ্রই চাল পৌঁছে দেয়া হবে।

---

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসূমে মা ইলিশ যাতে অবাধে ডিম ছাড়তে পারে সেজন্য ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য ইলিশসহ সকল মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলছে। আইন অমান্য করে যারা মাছ শিকার করছে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। দেয়া হচ্ছে কারাদ-, অর্থদ- কিংবা উভয়দ-। বেকার জেলেদের সংসার নির্বাহের জন্য মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রণোদনা হিসাবে বরাদ্দ করা হয়েছে জেলে প্রতি ২৫ কেজি চাল। কিন্তু সেই চাল না পেয়ে নিতান্ত পেটের দায়ে নদীতে নামতে বাধ্য হচ্ছে অনেক জেলে। জেলেরা বলছে, ২২ দিনের মতো দীর্ঘ একটা সময় আয়-রোজগার না থাকার পাশা-পাশি সময়মতো সরকারের প্রণোদনা না পাওয়ায় দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে তাদের সংসার জীবন।
জেলেদের অভিযোগ, শুধু এবারই নয়; প্রতিবারই স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং মৎস্য বিভাগের উদাসীনতার কারণে তারা সঠিক সময়ে চাল পাননা। জেলেবৃত্তি ছাড়া অন্য কোন কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রতিবছরই তাদেরকে এমন দুর্বিষহ কষ্টের শিকার হতে হয়। সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নেয়া হলে এমন পরিণতি হয় না বলেও মন্তব্য জেলেদের।
জেলে মো. নূরে আলম বলেন, অনেকদিন ধরে অভিযান চলতেছে। সরকার আমাদেরকে কোন সাহায্য-সহযোগিতা করেনি। কোন চাউল বা বিছুই দেয়নি, তাই আমরা খুব অভাবে আছি। সরকার অন্তত চাউলটা দিলেও তো আমরা বাড়ি গিয়ে অন্তত ভাত খাইতে পারতাম।
জেলে মোঃ মনির বলেন, সরকার ২২ দিনের যে অভিযান দিছে, এই অভিযানের আগেই চাউল টা দিলে আমাদের জেলেদের অনেক ভালো হইতো। চাউলটা তো দিলো না। তাই বউ-বাচ্চা, পরিবার নিয়ে আমারা এখন না খেয়ে মরণ ছাড়া আর কোন উপায় নাই। এছাড়া ঋণের কিন্তু আছেই। তাই সরকার যদি আমাদের দিকে একটু দৃষ্টি দিতো তাইলে ভালো হইতো।
ভোলা সদরের সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। শীঘ্রই সব ইউনিয়নের নির্ধারিত জেলেরা চাল পেয়ে যাবে। নিবন্ধন না থাকায় সকল জেলেকে চাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরবর্তীতে সকল প্রকৃত জেলেদেরকে নিবন্ধনের আওতায় এনে চাল দেয়া হবে।
ভোলায় ৩ লাখেরও বেশি জেলে মৎস্য শিকারের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এদের মধ্য থেকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩ শত ৭২ জনকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়েছে। এবার ১ লাখ ৩২ হাজার জেলের জন্য প্রণোদনার চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০:৫৫:০৪   ৩৬৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অর্থনীতি’র আরও খবর


বোরহানউদ্দিনে ৪৮ জেলের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণ
মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় বাগদার রেণু শিকারের মহোৎসব
ভোলায় লাজফার্মা মডেল ফার্মেসির উদ্বোধন
ভোলা মহাজনপট্টিতে স্বপ্ন আউটলেটের শাখা উদ্বোধন
লালমোহনে ১২৬ কোটি টাকার বোরো ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা
ভোলার গ্যাস উৎপাদন: কূপ খননে আরও চড়া দাম চায় গাজপ্রম
ভোলায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই
নদীতে মিলছে না কাংখিত ইলিশ, হতাশ জেলেরা
কাঁচের চুড়ি তৈরিতে ব্যস্ত বোরহানউদ্দিনের শ্রমিকরা
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ শিকারে প্রস্তুত জেলেরা



আর্কাইভ