বিশিষ্ট সমাজসেবী কর্নেল (অব:) সামসুদ্দিন আহমেদ মানিক মিয়া আর নেই

প্রচ্ছদ » জেলা » বিশিষ্ট সমাজসেবী কর্নেল (অব:) সামসুদ্দিন আহমেদ মানিক মিয়া আর নেই
শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০২২



---

আজকের ভোলা রিপোর্ট ॥
বিশিষ্ট সমাজসেবী, বহু স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক ডিজিএফআইয়ের ও মেঘনা লাইফের সাবেক পরিচালক, ভোলা প্রতিবন্ধী স্কুলের (বিসিএসবি) এর ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ, ভোলা ডায়াবেটিক সমিতির উপদেষ্টা, সাদা মনের মানুষ আলহাজ্ব সামসুদ্দিন আহমেদ মানিক  মিয়া আর নেই। শুক্রবার ভোররাত ৪টায় তিনি ঢাকায় সিএমএইচ-এ ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রাবর বাদ জুমায়া ঢাকার বারিধারা ডিওএইচএস মসজিদ প্রাঙ্গনে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ (২৩ জুলাই) বেলা ১১টায় ভোলা যুগীরঘোল ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘদিনের সামাজিক কার্যক্রমের নিবেদিত মানুষ কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত শামসুদ্দিন আহমেদ মানিকের মৃত্যুতে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু, ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর, জেলা পরিষদ প্রশাসক আলহাজ্ব আবদুল মমিন টুলু, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নিজাম উদ্দিন আহমেদ, বিশিষ্ট সমাজসেবী আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া জাহাঙ্গীর, সরকারি ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর রুহুল আমিন জাহাঙ্গীর, দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ ইউনুছ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আসিফ আলতাফ, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল হক অনু , চরনোয়াবাদ মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এম এ তাহের, দৈনিক নয়াদিগন্ত ও এসএটিভি জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট সাহাদাত হোসেন শাহিন, ভোলা প্রতিবন্ধী স্কুলের (বিসিএসবি) এর পরিচালক মোঃ জাকিরুল হক ও আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম ভোলালা শাখার দাফন বিভাগের পরিচালক হাফেজ বনি আমিন গভীর শোক প্রকাশ করেন। তারা শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং পরম করুণাময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
উল্লেখ্য, মরহুম কর্নেল সামসুদ্দিন আহমেদ মানিক মিয়া চাকরি জীবনেও আন্তরিকতা যোগ্যতা ও মেধা দিয়ে সকলের আস্থা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন। চাকরি থেকে অবসরে গেলেও তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-ের মাধ্যমে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। নীরবে নিভৃতে বিশাল সামাজিক কর্ম সম্পাদন করছেন এ মানুষটি। এককভাবে তিনি পাঁচটি স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ পরিচালনা করেছেন নিজের ব্যক্তিগত অর্থে। ১৯৪৫ সালের ৯ মার্চ সামসুদ্দিন আহমেদ মানিক দৌলতখানের মেদুয়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী মিয়া রাজ মীর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম লুৎফুর রহমান আসাম বাংলা বিভাগের কর্মকর্তা ছিলেন। মাতা মরহুমা জাহেদা খাতুন, দুই ভাই, চার বোন। চিটাগাং সরকারি কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিএসসি পাস করেন এরপর কিছুদিন ভোলা কলেজে ডেমোনেস্ট্রেটর হিসেবে চাকরি করেন। এসময় মেঘনার করালগ্রাসে পৈত্রিক ভিটা মাটি বিলীন হয়ে যায়। ১৯৬৭ সালে ৪ একর জমি ক্রয় করে বাস টার্মিনালের কাছে নতুন বাড়ি নির্মান করেন। ১৯৬৮ সালে সামসুদ্দিন আহমেদ মানিক পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ‘৬৯ সালে সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত হন। পশ্চিম পাকিস্তানের ঝিলাম শহরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ঝুঁকির মধ্যে কাটাতে হয় ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানি বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে দেশে আসেন। ১৯৮৩ সালে ডিজিএফআই-এর পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ৯২-৯৩ সালে জাতিসংঘ মিশনে কুয়েতে সেনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকা, চীনসহ বিভিন্ন দেশে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২০১২ সালে সস্ত্রীক হজ্ব সমাপন করেন। ১৯৯৬ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন। পরে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কর্নেল সামসুউদ্দিন আহমেদ মানিক ১৯৭৪ সালে ভোলা শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী আজহার উদ্দিন তালুকদার (আলতাজের রহমান তালুকদারের ভাই) এর কন্যা খালেদা খানম মিমির সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। তাদের দুই পুত্র, এক কন্যা। জ্যেষ্ঠপুত্র সাইফুদ্দিন আহমেদ অপু লন্ডন থেকে ব্যবসা প্রশাসনে পড়াশুনা করে এখন মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কো¤পানির পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, কনিষ্ঠপুত্র রাশেদ উদ্দিন আহমেদ তপু বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী তরুণ প্রজন্মের খুবই জনপ্রিয় তারকা। একমাত্র কন্যা আয়েশা আহম্মেদ পাপ্পু পেশায় চিকিৎসক, স্বামী লেফটেন্যান্ট কর্নেল জামিল আলম জোয়ারদার নৌবাহিনী একজন পদস্থ কর্মকর্তা।
কর্নেল সামসুদ্দিন আহমেদ মানিক মিয়া অবসরের পরে দেশে এসে ভোলার চরাঞ্চলে বিশেষ করে ভেলুমিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য বেশ ক’টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। যার মধ্যে ‘মানিক মিয়া আইডিয়াল কলেজ’, ‘খালেদা খানম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়’, ‘জায়েদা খাতুন হাফিজিয়া মাদ্রাসা’, ‘ফরিদ মিয়া কওমি মাদ্রাসা’, ‘লুৎফুর রহমান কওমি মাদ্রাসা’। এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তিনি গঠন করেছেন ‘মানিক মিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’। এছাড়াও তিনি ভোলা সমিতি, ‘নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন’, ‘ভালা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুল (বিসিএস ট্রাস্টি)সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তার হঠাৎ মৃত্যুতে পরিচিত সকলের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৮:২৭   ৪৬৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


ভোলার গ্যাস উৎপাদন: কূপ খননে আরও চড়া দাম চায় গাজপ্রম
রাজাপুরে উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারেফ হোসেনের উঠান সভা
ভোলায় মাসব্যাপী সাঁতার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের উদ্বোধন
সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুছের সংবাদ সম্মেলন
ভোলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণবিধি নিয়ে আলোচনা সভা
আশরাফ হোসেন লাভু ছিলো আ’লীগের নিবেদিত প্রাণ: তোফায়েল আহমেদ
দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ॥ আহত-৩০
আমাকে মটর সাইকেল প্রতীকে আপনাদের মুল্যবান ভোটটি দিবেন: চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ইউনুছ
নদীতে মিলছে না কাংখিত ইলিশ, হতাশ জেলেরা
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুস-পলাশ এর মতবিনিময় সভা



আর্কাইভ