স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলা হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসেন চরফ্যাশন কালিয়াকান্দি সরকারি প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষক হাসিনা বেগম ( ২৮)। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন। অনেক স্থানে রক্ত জমে গেছে। স্বামী জাহাঙ্গীর আলম গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায়, সুপারি গাছের বাগা দিয়ে পিটিয়ে এমন জখম করেন। ১১ বছরের বিবাহিত জীবনে জাহাঙ্গীরের এমন নির্যাতন নতুন নয়। চরফ্যাশন পৌর এলাকার কলেজ রোডে জমি কিনে, বাড়ি করার সব টাকার যোগান দেন হাসিনা বেগমের পিতা আবুল বাশার চৌধুরী। ওই বাড়ির আসবাবপত্র, ব্যবহার্য মালামালও কিনে দিতে হয়েছে হাসিনার পরিবারকে। তবুও নির্যাতন বন্ধ হয় নি জাহাঙ্গীরের। চাহিদা মাফিক টাকা, দামি মালামাল, শ্বশুর বাড়ি থেকে না এলেই জাহাঙ্গীর অগ্নিমূর্তি ধারন করেন। গতকাল হাসিনা বেগম জানান, ১১ বছর সংসার জীবনে জাহাঙ্গীর অন্তত ৩২ বার মেরে জখম করেছে। তার দু সন্তান। বড় সন্তানেরন বয়স ৮। ছোটটির ২। সন্তানদের সামনেই জাহাঙ্গীর ও তার ছোটভাই হাফিজ মারধর করে। চরফ্যাশন নীল কমল ইউনিয়নের মোঃ হাসিমের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম চরফ্যাশন হাসপাতালের অফিস সহকারী হওয়ায়, ওই হাসপাতালেও চিকিৎসা নিতে পারেন নি হাসিনা। গতকাল ভোলা জেলা সদরে এসে প্রথমে একটি কিনিকে পরে দুপুরে ভর্তি হন সদর হাসপাতালে।
এদিকে জাহাঙ্গীর জানান, সব মিথ্যা ঘটনা। তিনি তার স্ত্রীকে কোন ধরনের মারধর করেন নি। শরীরে যে চিহ্ন তা ও (হাসিনা) তৈরী করে নিয়েছে। গতকাল হাসিনা তার বাবার বাড়ি রওনা হয়ে গেছে। তিনি আরো অভিযোগ করেন, হাসিনার পরিবার তার টাকা লুটে নেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়। ওই পরিবার তার কাছ থেকে বহুবার টাকা নেয়। হাসিনার মামা কলেজ শিক্ষক মোঃ শাজাহান সেন্টু জানান, জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে টানা আনার বিষয় অবাস্তব। কেননা হাসিনা পরিবারের এক মাত্র মেয়ে। বাবা পটুয়াখালি জেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের হেড কাক। দুই ভাই। বড় ভাইও সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে চাকুরি করেন। মেয়ের শান্তির জন্য জাহাঙ্গীর জখন যা চেয়েছে তাকে তাই দিয়েছেন আবুল বাশার চৌধুরী। তার পরও জাহাঙ্গীরের নির্যাতন বন্ধ হয় নি।
এদিকে এ বিষয়ে ভোলার সিভিল সার্জন ডাঃ রথীন্দ্র নাথ মজুমদার জানান, হাসতাপালের কোন স্টাফ পারিবারিক জীবনেও কোন অনৈতিক কাজ করতে পারবেন না। তিনি ঘটনা জেনে ব্যবস্থা নেবন বলেও জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৬:২৯ ৩৬২ বার পঠিত