॥ মুহাম্মদ শওকাত হোসেন ॥
পরিশেষে সাংবাদিকতা সমাজসেবা এবং সংগঠন বিষয়ে একটি কথাই সকলের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, তা হচ্ছে এই তিনটি বিষয়ই আমাদের সমাজ সভ্যতার অগ্রগতির অন্যতম সহায়ক শক্তি। একটি উন্নত আদর্শ সমাজ সভ্যতার নাগাল পেতে হলে সেখানে মুক্ত সাংবাদিকতা থাকতে হবে। সমাজ সেবা করার মতো কিছু মানুষ নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সমাজ ও মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবে। সমাজের নেতৃত্বে যারা থাকবেন বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন তাদেরকে অবশ্যই সেবনের নয়, সেবার মানসিকতা সম্পন্ন হতে হবে। মানুষের সেবা ও কল্যাণ এর কর্মসূচি সমূহ বাস্তবায়ন করার জন্য শক্তিশালী সাংগঠনিক নেটওয়ার্কের প্রয়োজন রয়েছে।
তবে যারা এ কাজগুলো করবে প্রথমত তাদের মন মানসিকতা চিন্তা-চেতনা এর উপযোগী হতে হবে। অর্থাৎ তার মধ্যে একটি ইতিবাচক সুন্দর সুশীল মন থাকতে হবে। যেমন মানুষের দুঃখ কষ্ট দেখলে মন কেঁদে উঠে, চিন্তা-চেতনায় সমাজ এবং মানুষের ভাল-মন্দ মুখ্য থাকে। নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে অন্যের উপকার করে। সর্বোপরি সৃষ্টির সেবার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আকুল বাসনা থাকবে। কারণ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বহুভাবে এসব সেবা ও কল্যান কাজ করার জন্য গুরুত্ব সহকারে নির্দেশনা দিয়েছেন। কোরআনের বাণী রয়েছে যে, কোনো সত কাজই বৃথা যায় না। অর্থাৎ একজন মানুষ সৎ উদ্দেশ্যে তার শক্তি সামর্থ্য দিয়ে একটি ভালো কাজ করতে গিয়ে যদি আমাদের দৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়, তথাপিও তার সৎ উদ্দেশ্যের জন্য এবং তার ত্যাগের বিনিময়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অবশ্যই তাকে পুরস্কৃত করবেন। শুধু তাই নয় এই সমাজের মানুষগুলো অনেক সত কাজকে প্রথমে গ্রহণ করতে পারে না, কিন্তু পরবর্তীতে মানুষ তাদের ভুল বুঝে যায়। যারা এসব সত কর্মের করেছে তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
সৎ কাজে প্রতিবন্ধকতা আসে, অনেক সময় সহযোগী পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে “তোমার ডাকে কেউ যদি না দেয় সাড়া, তবে একলা চলো…….” হলেও চালিয়ে যেতে হবে। বন্ধ করা যাবে না। কারণ আজকে আপনি সৎ উদ্দেশ্যে কল্যাণের যে বীজ বপন করেছেন, একদিন তা বিশাল ফলবান বৃক্ষ পরিণত হবে। যার ফল দেশজনতা উপভোগ করবে। সব শেষ কথা হচ্ছে যারা সমাজ কর্ম করবে, সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা, বিচারকার্য, কিংবা সামাজিক নেতৃত্তের মত মহৎ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকবে, তাদেরকে অবশ্যই ইতিবাচক মানসিকতা সম্পন্ন হতে হবে। রাস্তার উপর একটি কলার বাকল পেলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেটাকে নিরাপদ স্থানে ফেলে দিতে হবে। কারণ এর মাধ্যমে কারো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কাজেই ছোটখাটো থেকে শুরু করে প্রতিটি ভালো কাজে থাকার জন্য একটি সুন্দর মন থাকতে হবে। যারা এখনো এই নষ্ট-ভ্রষ্ট সমাজের মধ্যে থেকেও ভালো কিছু আশা করেন, সমাজসেবা, মানুষের কল্যাণ অথবা এজাতীয় কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে চান, আমি তাদেরকে অনুরোধ করব, এগিয়ে আসুন। কেউ যদি না থাকে আপনি একাই শুরু করুন। দেখবেন সহোযোগী পাবেন, সুফল পাবেন। দুনিয়া এবং আখেরাতে এর বিশাল প্রতিদান আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। কবির কবিতা দিয়ে এ প্রসঙ্গের সমাপ্তি করতে চাই। “উদয়ের পথে শুনি কার বাণী- ভয় নাই ওরে ভয় নাই, নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান, ক্ষয় নাই ওরে ক্ষয় নাই।”
##
লেখকঃ মুহাম্মদ শওকাত হোসেন
সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক আজকের ভোলা
সভাপতি, ভোলা রিপোর্টার্স ইউনিটি
বাংলাদেশ সময়: ১৮:১৯:৩৮ ৪৪৮ বার পঠিত