ভোলায় এবার পরিযায়ী পাখি কম

প্রচ্ছদ » জেলা » ভোলায় এবার পরিযায়ী পাখি কম
বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪



---

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

ভোলার বিভিন্ন নদ-নদী, চর ও সাগর মোহনায় এবার পরিযায়ী পাখি কম দেখা গেছে। বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের জলচর পরিযায়ী পাখিশুমারি দল গত ৯ দিনের শুমারি শেষে এমন তথ্য জানিয়েছে। বুধবার এই পাখিশুমারি শেষ হয়।

পাখিশুমারি দলের প্রধান সায়েম ইউ চৌধুরী বলেন, ২ থেকে ১০ জানুয়ারি ৯ দিনে তাঁরা ভোলায় ৬২ প্রজাতির ৩৪ হাজার ৩১২টি পাখি গণনা করেছেন। ২০২৩ সালের তুলনায় ভোলায় এ বছর অনেক কম পাখি চোখে পড়েছে। ২০২৩ সালে ৬৫ প্রজাতির ৫৪ হাজার ১৮০টি পাখি গণনা করা হয়। অবশ্য ২০২২ সালে পাখি পাওয়া গিয়েছিল প্রায় ৩৩ হাজার। গত ৩৬ বছর (১৯৮৭-২০২৪) ধরে এ শুমারি হয়ে আসছে। ৩৬ বছরে পাখি অনেক কমেছে বলেও শুমারি দলের ভাষ্য।

পাখিশুমারি দলটি ২ জানুয়ারি ভোলা খেয়াঘাট থেকে শুরু করে তেঁতুলিয়া, ইলিশা, মেঘনা, মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর সাগর মোহনা, বুড়া গৌরাঙ্গ নদ, আবার তেঁতুলিয়া নদী হয়ে ১০ জানুয়ারি খেয়াঘাটে ফিরে আসে। দলের সদস্যরা জানান, তাঁরা নদী ও সাগর মোহনার মাঝে জেগে ওঠা ৪৬টি চর, যেমন চর মোহাম্মদ, কানিবগা, ভোলারচর, চর বৈরাগী, মধুপুর, নেয়ামতপুর, হুজুরের খাল, চর জহিরুদ্দিন, কাজীরচর, মৌলভীরচর, ঢালচর, নিঝুম দ্বীপ, দমারচর, জাহাজিয়া সুবর্ণচর, গাঙুরিয়ার চর, চর কুকরি-মুকরি, আন্ডারচর, সোনারচর, রোজিনারচর, চর শাহজালাল, ট্যাগরারচরসহ ইত্যাদি চরে নেমে ৬২ প্রজাতির দেশি ও পরিযায়ী জলচর পাখি গণনা করেছেন।

---

এই দলে বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সায়েম উল চৌধুরীর পাশাপাশি আরও ছিলেন বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের (বিবিসি) সাবেক সাধারণ স¤পাদক পাখি পর্যবেক্ষক ও পর্বতারোহী এম এ মুহিত, বিবিসির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফয়সাল, পাখিবিশেষজ্ঞ নাজিম উদ্দিন খান প্রমুখ।

পাখিবিশেষজ্ঞ সায়েম উল চৌধুরী বলেন, তাঁরা ট্যাগরারচরে একটি দুর্লভ বৈকাল তিলি হাঁস দেখেছেন, যা অনেক বছর আগে এ অঞ্চলে দেখা যায়। এ ছাড়া এ বছর গাঙগুয়ারচরে মহাবিপন্ন চামচঠুঁটো বাটান নামক পাখি দেখা গেছে। দেখা গেছে, বিপন্ন বড় নট ও নিকট বিপন্ন দেশি গাঙচষা। সবচেয়ে বেশি পাখি দেখা গেছে স্বর্ণদ্বীপে, যার পরিমাণ ছিল ৩১ প্রজাতির ৪ হাজার ৫৭টি। এরপর দমারচর, আন্ডারচর ও ট্যাগরারচরে। পাখিরা হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ভোলার উপকূলে আসে খাবারের সন্ধানে। পরে তারা এখানে ডিম পাড়ে ও বাচ্চা ফোটায়। শীত কমে গেলে যাওয়ার সময় বাচ্চা নিয়ে উড়ে যায়।

দলের পাখিবিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশের মধ্যে ভোলায় সবচেয়ে বেশি জলচর পরিযায়ী পাখি আসে, যা মোট পাখির প্রায় ৬০ ভাগ। এ অঞ্চলে অনেক বিপন্ন-মহাবিপন্ন পাখি দেখা যায়। এ বছর পাখি কম দেখা গেছে, এর মানে পাখি কম এসেছে, এমন নয়। হয়তো দলের চোখে পড়েনি। আগামী বছর বেশিও আসতে পারে। তবে মোটের ওপর ৩৬ বছরে পাখি কমেছে। কমে যাওয়ার কারণ পাখির বিচরণক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

পাখি গণনার উদ্দেশ্যের বিষয়ে সায়েম ইউ চৌধুরী বলেন, পাখি পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শীতে এ দেশে আসা পরিযায়ী পাখির সংখ্যা দিয়ে বোঝা যায়, পৃথিবীতে এদের সংখ্যা কত, কোন পাখির অবস্থান কোন অঞ্চলে, তা নিরুপণ করা যায়। বাংলাদেশে যদি পাখি আসা কমে যায়, তাহলে মনে করতে হবে এখানে সমস্যা আছে। সমস্যা অনুযায়ী সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। এতে পাখিরও উপকার হবে, স্থানীয় মানুষের ও পরিবেশের উপকার হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৬:৪২   ১৪১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


ভোলা জেলা শ্রমিক লীগের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস পালিত
কাঁচের চুড়ি তৈরিতে ব্যস্ত বোরহানউদ্দিনের শ্রমিকরা
বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত, তবু লোডশেডিং
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ শিকারে প্রস্তুত জেলেরা
লালমোহনে তীব্র গরমে মুরগির খামারিদের বাড়ছে দুশ্চিন্তা
আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন: চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারেফ হোসেন
অটো চেয়ারম্যান হওয়ার দিন শেষ জনগনের ভোট লাগবে: চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ইউনুছ
ভোলায় পৃথক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু
ভোলায় ডিবির অভিযানে অস্ত্রসহ ৩ দস্যু আটক, অপহৃতরা উদ্ধার
আজকের ভোলার স্টাফ রিপোর্টার বাবু কান্তিলাল গাঙ্গুলী আর নেই



আর্কাইভ