আজকের ভোলা রিপোর্ট ॥
ভোলা-বরিশাল ব্রীজ নির্মাণ ও জেলায় গ্যাসভিত্তিক শিল্পায়নের আগে জেলার মজুদ এলএনজি করে সিলিন্ডারে আনতে দেয়া হবে না। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) নাগরিক সমাজের এক বৈঠকে এমন ঘোষণা দেয়া হয়। গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কোম্পানী সুন্দরবন ডিস্টিবিউশন লিমিটেড ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন কোম্পানীর গোপান চুক্তি বাতিলের দাবি জানানো হয় ওই বৈঠকে। সিলিন্ডারে গ্যাস নেয়ার জন্য ইতিমধ্যে ইন্ট্রাকো কোম্পানী ভোলার জেলা সদরের বেপারী বাজার ও ইলিশা এলাকায় দুটি স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে।
নাগরিক কমিটির সভায় এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। ভোলায় অনুষ্ঠিত ওই সভায় বরিশাল থেকে অংশ নেন দক্ষিণাঞ্চলের নাগরিক আন্দোলনের নেতা ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী। তিনি ভোলা-বরিশালের ব্রীজ নির্মাণের দাবি পূরণের মধ্য দিয়ে ভোলার গ্যাস দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের শিল্পায়নের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ চাই আন্দোলন কমিটির সভাপতি মোবাশে^র উল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন, প্রধান অতিথি ডাঃ মনিষা চক্রবর্তী, দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক মু. শওকাত হোসেন, ভোলা স্বার্থরক্ষা উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক প্রেসক্লাব সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু, প্রথম আলো প্রতিনিধি নেয়ামতউল্লাহ, গ্যাস সংযোগ ঠিকাদার সমিতির সম্পাদক আব্দুল জলিল, ওই সংগঠনের সহসভাপতি রবিউল আলম, ইমাম সমিতির সম্পাদক বনি আমিন, কলেজ শিক্ষক আব্দুল বাছেদ, বরিশাল বাসদের নেতা মানিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। পরে মজুদ গ্যাস দিয়ে ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের শিল্পায়নের দাবিতে লংমার্চ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে ২০১৮ সালে ভোলা-বরিশাল ব্রিজ নির্মানে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবি জানান হয়।
এই সময় বক্তারা জানান, ভোলা থেকে চট্টগ্রাম, মংলা, পয়রাবন্দরসহ ২১ জেলার সহজ যোগযোগ সুবিধা রয়েছে। ফলে মজুদ গ্যাস দিয়ে ভোলায় শিল্পায়ান হলে এর উৎপাদিত পণ্য সহজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নেয়া যাবে। এ জন্য ভোলা-বরিশাল ব্রীজ নির্মানের গুরুত্ব অনেকটা বেড়ে যাবে।
এদিকে বাপেক্স সূত্রে জানা যায়, ভোলা জেলায় বর্তমানে ৯টি কূপ খনন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মজুদ পাওয়া গেছে প্রায় পোনে দুই ট্রিলিয়ান ঘনফুট। নতুন করে আরো ৫টি কূপ খননের বিষয়টি প্রক্রিয়াধিন। এতে আরো দেড় ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনরা রয়েছে। ফলে বিপুল পরিমান গ্যাস দিয়ে জেলায় সহজেই শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান বাপেক্স কর্মকর্তারা।
এদিকে সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ভোলার দায়িত্বে থাকা ডিজিএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় ঢাকার শিল্পকারখানা সচল রাখতে সিলিন্ডারে গ্যাস নেয়ার জন্য ইন্ট্রাকো’র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় সুন্দরবন। এদিকে সুন্দরবনের এমন সিদ্ধান্তকে হটকারিতা বলে উল্লেখ করেন নাগরিক সমাজ। তারা মনে করেন ভোলায় গ্যাসের মজুদ থাকলেও ভোলাবাসীকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক নতুন কোন সংযোগ দেয়া হচ্ছে না। জেলায় ব্যবহারের সুযোগ না দিয়ে কোন গ্যাস কোথাও নিতে দেয়া হবে না। ওই সভায় সুন্দরবন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১:০৬:৫৭ ৫৪৯ বার পঠিত