পশ্চিম ভোলায় ভাঙন: বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেই

প্রচ্ছদ » জেলা » পশ্চিম ভোলায় ভাঙন: বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেই
শনিবার, ৭ আগস্ট ২০২১



বিশেষ প্রতিনিধি ॥
তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে পশ্চিম ভোলা। নদীতীরের প্রায় আট কিলোমিটারে চলছে ভাঙন। গত কয়েক বছরে ফসলি জমিসহ সহস্রাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এদিকে এই এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বন্যা-জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণ ও তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণে উদ্যোগ নেই।
ভোলার সদর উপজেলার পশ্চিমে দুটি ইউনিয়ন ভেদুরিয়া ও ভেলুমিয়া। এই এলাকা পশ্চিম ভোলা নামে পরিচিত। আয়তন প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার।
ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ব্যাঙ্কেরহাট বাজারের পাশে টেক্সটাইল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, স্কুল-কলেজ, উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। উত্তর ভেদুরিয়ায় আছে গ্যাসফিল্ড, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাট।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভেদুরিয়ায় অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, ভোলা-বরিশাল সেতু প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অনেক স্থানে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

---

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক দিয়ে খেয়াঘাট সেতু পার হয়ে ভোলার পশ্চিমাংশে যেতে যায়। এ অংশের উত্তর-পূর্বে খেয়াঘাট নদী। আর পশ্চিম-দক্ষিণে তেঁতুলিয়া নদী। উত্তর ভেদুরিয়ার মাঝিরহাটে রয়েছে গ্যাসফিল্ড।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, খেয়াঘাট নদীর ট্যাকেরহাট থেকে ভাঙন শুরু। সেখান থেকে ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট, লঞ্চঘাটের দক্ষিণে চটকিমারা খেয়াঘাট, ব্যাংকেরহাট, আরও দক্ষিণে ভেদুরিয়া শাজাহান বাজারও (তেঁতুলিয়ার তীরে) ভাঙনকবলিত। নদীর তীরেই টেক্সটাইল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটসহ সব প্রতিষ্ঠানের অবস্থান।
ভেদুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, পশ্চিম ভোলা দিনে দিনে জেলার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হয়ে উঠছে। এখানে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। জেলা প্রশাসন আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে। কিন্তু পশ্চিম ভোলা সম্পূর্ণ অরক্ষিত। গত মে মাসে ইয়াসের প্রভাবে জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসে ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডের ফসলি খেত তলিয়ে যায়। রাস্তাঘাট বেহাল হয়ে গেছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ভেদুরিয়া গ্রামের মোল্লাবাড়ির দরজা থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চটকিমারা খেয়াঘাট পর্যন্ত এবং দক্ষিণ ভেদুরিয়া গ্রামে ৬-৭ কিলোমিটার ভাঙনকবলিত।
ভেলুমিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল সালাম বলেন, তাঁর ইউনিয়নের দক্ষিণে কিছু অংশ ভাঙনকবলিত। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতিবছর জোয়ার-বন্যায় লবণপানি উঠে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এতে অনেক মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে এলাকা ছেড়েছে। ইয়াসেও ক্ষতি হয়েছে ঘরবাড়ি, সবজিখেত ও মাছের ঘেরের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পশ্চিম ভোলার ওই অংশে প্রায় সাড়ে আট হাজার হেক্টর জমি কৃষি-আবাদের আওতায়। কিন্তু জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে ওই এলাকা প্লাবিত হয়ে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। চলতি বছর দুই দফায় প্লাবিত হয়ে ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি তাঁরা পশ্চিম ভোলার ইউনিয়নগুলো পরিদর্শন করেছেন। সেখানে বেশ কিছু অংশে ভাঙন চলছে। উত্তর ভেদুরিয়ার মাঝিরহাট থেকে চটকিমারা চর খেয়াঘাট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন রয়েছে। ওই এলাকায় ব্লক বাঁধ নির্মাণে নকশা করতে দেওয়া হয়েছে। এরপর ডিপিপি তৈরি করা হবে। পরে অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। ব্লক বাঁধের সঙ্গে বন্যা-জলোচ্ছ্বাস নিয়ন্ত্রণ বাঁধও নির্মাণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪০:৫৪   ৪৪৭ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


ভোলার গ্যাস উৎপাদন: কূপ খননে আরও চড়া দাম চায় গাজপ্রম
রাজাপুরে উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারেফ হোসেনের উঠান সভা
ভোলায় মাসব্যাপী সাঁতার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের উদ্বোধন
সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুছের সংবাদ সম্মেলন
ভোলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণবিধি নিয়ে আলোচনা সভা
আশরাফ হোসেন লাভু ছিলো আ’লীগের নিবেদিত প্রাণ: তোফায়েল আহমেদ
দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ॥ আহত-৩০
আমাকে মটর সাইকেল প্রতীকে আপনাদের মুল্যবান ভোটটি দিবেন: চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ইউনুছ
নদীতে মিলছে না কাংখিত ইলিশ, হতাশ জেলেরা
সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনুস-পলাশ এর মতবিনিময় সভা



আর্কাইভ