ভোলায় তেঁতুলিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙন, হুমকির মুখে ৩টি গ্রাম

প্রচ্ছদ » জেলা » ভোলায় তেঁতুলিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙন, হুমকির মুখে ৩টি গ্রাম
রবিবার, ১ আগস্ট ২০২১



ছোটন সাহা ॥
বর্ষা মৌসুমে ভয়াল রুপ ধারণ করেছে ভোলার তেঁতুলিয়া নদী। এতে হুমকির মুখে পড়েছেন নদীর তীরবর্তী ৩টি গ্রাম। তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীর পাড়ের মানুষ। ৩ কিলোমিটারের অধিক এলাকা জুড়ে ভাঙনের সৃষ্টি হওয়ায় ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বর্তমানে ভাঙনের মুখে পড়েছে তিনটি গ্রামের অন্তত ২ শতাধিক ঘরবাড়ি। এতে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তেঁতুলিয়া পাড়ে শত শত মানুষ। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। তবে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ভোলা সদরের তেঁতুলিয়া পাড়ের প্রচীনতম ইউনিয়ন ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চর ভেদুরিয়া, মধ্য ভেদুরিয়া এবং চর চটকিমারা এ তিন গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী যেন আরো ভায়াবহ রুপ ধারণ করে। নদীর অগ্রসী ছোবলে প্রতিদিন ভাঙছে বসতভিটা, রাস্তাঘাট-ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। গত এক মাসে এরই মধ্যে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।

---

ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ সহায় সম্বল হারিয়ে চরম সংকটের মধ্যে পড়েছেন। নদীর এমন ভয়াল রপ ধারণ করায় অনেকেই আবার ঘর-বাড়ি অন্যত্র সারিয়ে নিচ্ছেন। নদীর তীরের মানুষগুলো আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ আবার নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
চর ভেদুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মনজু ইসলাম জানান, ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন মোল্লা বাড়ি থেকে শুরু হয়ে ব্যাংকেরহাট বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে ভাঙন চলছে। প্রতিদিন বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি।
তেঁতুলিয়া পাড়ের বাসিন্দা হালান মোল্লা বলেন, নদীতে এ পর্যন্ত ২ ভাঙা দিচ্ছে। এখন কোথায় আশ্রয় নিবো কোনো ঠিকানা পাচ্ছি না।
মমতাজ আক্তার বলেন, আমরা গরীব মানুষ, কয়েকবার নদী ভাঙনের শিকার। নদীদে বসত ঘরটা ভাঙলে কোথায় আশ্রয় নিবো, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ জেলে ও কৃষক। তাদের অনেককের নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ্য নেই।
তেঁতুলিয়া তীর ঘেষে বসবাস করছেন হারুন মোল্লা, আলী হোসেন, মমতাজ বেগম, হাদিস মোল্লা ও নুরুল আমিনসহ একাধিক পরিবার। তারা জানান, তাদের সবাই কমবেশি ভাঙনের শিকার। ভাঙনে সহায় সম্বল বলতে যা ছিল তার সব শেষ হয়ে গেছে, কয়েকবার ভাঙনের পর নতুন করে বসতি গড়ে তুললেও এখন আবার সেই বসতি ভাঙনের মুখে। কিন্তু ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন বলেন, নদীতে ৩ বার ভাঙা দিছে। ৫ কানি জমি ছিল, সব বিলীন হয়ে গেছে। এখন আধা কানি জমিও অবশিষ্ট নেই। নদী ভাঙনে এখন আমরা নিঃস্ব।
এ ব্যপারে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, মধ্য ভেদুরিয়া থেকে চর চটকিমারা পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এলাকা ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রকল্প প্রণয়নের জন্য তেঁতুলিয়া ভাঙন রোধকল্পে ঢাকা থেকে একটি প্রতিনিধি দল সাম্ভ্যবতা যাচাই করে গেছেন। সেটি অনুমোদন হলে ডিপিপি প্রণয়নের মাধ্যমে দীর্ঘ স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, ভাঙনের তীব্রতা বিবেচনায় আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে ৫০০ মিটার এলাকার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি, সেটিও এখন অনুমোদনের অপেক্ষায়। অনুমোদন হলেই জিও ব্যাগ ডা¤িপংয়ের মাধ্যমে ভাঙন রোধ করা হবে। পাশাপাশি স্থায়ীভাবে ভাঙনের প্রকল্প’র কাজও চলমান থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৮:০৫   ৪৫১ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জেলা’র আরও খবর


ভোলা জেলা শ্রমিক লীগের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান মে দিবস পালিত
কাঁচের চুড়ি তৈরিতে ব্যস্ত বোরহানউদ্দিনের শ্রমিকরা
বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত, তবু লোডশেডিং
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ শিকারে প্রস্তুত জেলেরা
লালমোহনে তীব্র গরমে মুরগির খামারিদের বাড়ছে দুশ্চিন্তা
আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন: চেয়ারম্যান প্রার্থী মোশারেফ হোসেন
অটো চেয়ারম্যান হওয়ার দিন শেষ জনগনের ভোট লাগবে: চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ইউনুছ
ভোলায় পৃথক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু
ভোলায় ডিবির অভিযানে অস্ত্রসহ ৩ দস্যু আটক, অপহৃতরা উদ্ধার
আজকের ভোলার স্টাফ রিপোর্টার বাবু কান্তিলাল গাঙ্গুলী আর নেই



আর্কাইভ