লালমোহন প্রতিনিধি ॥
সংস্কারের অভাবে ভোলার লালমোহন উপজেলার অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলের প্রায় ৮০ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এসকল রাস্তায় বড় বড় গর্ত আর ইট বালি উঠে গিয়ে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দিন দিন ওই সব রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। এসকল সড়কে প্রতিদিনেই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। প্রতি বছর এসব সড়ক মেরামতের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও কিছু অসাধু ঠিকাদাররা নি¤œমানের ইট, সুরকি ব্যবহার করায় তা স্থায়ী হচ্ছে না।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমোহন উপজেলায় পকা সড়কে পরিমাণ ১৫৪ কি.মি, তার মধ্যে উপজেলা সড়ক ৩৩ কি.মি, ইউনিয়ন সড়ক ৬৯ কি.মি, গ্রামীণ সড়ক এ ৩৭.৫ কিলোমিটার, গ্রামীণ সড়ক বি ১৫ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন মেরামত না করায় প্রায় ৬০ শতাংশ সড়কের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে হরিগঞ্জ বাজার থেকে রায়চাঁদ বাজার সড়ক, ডাক্তার আজাহার উদ্দিন রোড থেকে চতলা বাজার ব্রীজ, আজাহার রোড থেকে পূর্বে কুমার খালী একতা বাজার পর্যান্ত, হাফিজ উদ্দিন বাজার (কবিরের দোকান) থেকে পশ্চিম দিকে পূর্ব-চরউমেদ আহম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসা পর্যান্ত, রায়চাঁদ বাজার থেকে দক্ষিণে তেগাছিয়া ব্রীজ, রায়চাঁদ থেকে লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে উত্তর দিকে নতুন বাজার ও পাটাওয়ারীর হাট যাতায়াত সড়ক, নতুন মুগুরিয়া বাজার থেকে চরভূতা বাংলাবাজার পর্যান্ত, পূর্ব চতলা বাজার থেকে জনতা বাজার যাতায়াত সড়ক, চরভূতা আলমগীর চেয়ারম্যান দরজা থেকে পশ্চিম দিকে কর্তার কাচারী পর্যন্ত এ জনবহুল যাতায়াত সড়কগুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনেই এ আঞ্চলিক সড়কে ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। বর্ষা মৌসুমের প্রায় সময়েই যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে, এ সকল সড়কে, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, কোন সুস্থ স্ববল মানুষ এ সকল সড়কে রিকশা, গাড়ি দিয়ে যাতায়াত করলে অসুস্থ হয়ে ঢাকা-বরিশালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়।
ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক, মো. মিজান, মফিজ, নিরব উদ্দিন, সিরাজ, ইজিবাইক চালক মোঃ ইউসুফ, জামাল, শাহে আলম (রুটি), নেজামল হক (রুটি) সহ হজারো জনসাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, লালমোহন উপজেলার সড়ক গুলো বেহাল দশার কারনে আমাদের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। সচেতন মহলের দাবী এ সকল অবহেলিত সড়ক গুলোর তালিকা করে কর্তৃপক্ষ যেন মেরামতের ব্যবস্থা করেন।
চতলা মোহাম্মদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল হাই বলেন, আমার বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র-ছাত্রী আজহার উদ্দিন রোড সহ অন্নান্য এলাকা থেকে আসেন কিন্তু যাতায়াত সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ার কারনে অনেকেই বিদ্যালয়ে আসতে সমস্যার সম্মূখীন হচ্ছেন।
রমাগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরনবী মিয়া বলেন, এ সরকার উন্নয়ন বান্ধব সরকার, আমাদের এমপি মহোদয় এক জন উন্নয়নের রুপকার তিনি আমাদের লালমোহন তজুমদ্দিনকে উন্নয়নের রোড মডেল হিসাবে পরিনত করেছেন। আমি এমপি মহোদয়কে সকল সড়কের মেড়ামতের জন্য অবগত করব, আশাকরি তার দ্বারা উন্নয়ন সম্ভব।
এব্যাপারে রমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফা মিয়া বলেন, উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের সড়কগুলোর অবস্থা খুবই করুন। এলজিইডি অফিসের ইঞ্জিনিয়ার এসে আমার ইউনিয়নের এ সকল সড়কগুলো মেপে নিয়েছে কয়েক মাস আগে কিন্তু কেন কাজ শুরু হয়নি।
উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রেজাউল করিমের কাছে সড়কগুলোর মেরামতের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেহাল সড়কের তালিকা করা হচ্ছে। আশা করি কিছু দিনের মধ্যে কয়েকটি সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৯:৪৫ ২৬৩ বার পঠিত