শনিবার, ১১ মে ২০২৪

ভোলায় শিশুদের নিউমোনিয়া ভয়াবহ আকার ধারন, এক সপ্তাহে আক্রান্ত-৪১৫, মৃত্যু-৪

প্রচ্ছদ » জেলা » ভোলায় শিশুদের নিউমোনিয়া ভয়াবহ আকার ধারন, এক সপ্তাহে আক্রান্ত-৪১৫, মৃত্যু-৪
বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২



ছোটন সাহা ॥
ভোলায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে শিশুদের নিউমোনিয়া। প্রতিদিনিই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ৪১৫জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যাদের মধ্যে মারা গেছে ৪টি শিশু। বর্তমানে এখনও হাসপাতালে ১৩৫ টি শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ৫৭ জন।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংকট থাকায় বাধ্য হয়েই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন শিশুরা। অন্যদিকে চিকিৎসা দিতে গিয়েও নার্স-চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জানা গেছে, দ্বীপজেলা ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পর হঠাৎ করেই তাপমাত্রা পাল্টে যায়। দিনে গরম আর রাতে শীত অনুভূত হওয়ায় শিশুদের জ্বর, সর্দি কাশিসহ নিউমোনিয়ার প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। প্রতিদিনি এসব রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।

---

জেলার উন্নত চিকিৎসার সেবা কেন্দ্র ভোলা সদর হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসা নেয়ার জন্য শয্যা রয়েছে ২৫টি। কিন্তু বর্তমানে রোগী রয়েছে ধারণ ক্ষমতার ৫গুন। তাই বাধ্য হয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হয় শিশুদের। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।
ভোলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের দেয়া তথ্য মতে জানা গেছে, ২৬ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২২৪টি নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ২৬ অক্টোবর ৪৫জন, এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১জনের, ২৭ অক্টোবর ৩৫জন, ২৮ অক্টোবর ২৫জনের মধ্যে ১জনের মৃত্যু, ২৯ অক্টোবর ৪২জন। ৩০ অক্টোবর ৪২জনের মধ্যে ১জন এবং ৩১ অক্টোবর ৩৫জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত ছিলো।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলো ১৩৫টি শিশু। যাদের মধ্যে ৩৫জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত। তবে জেলায় গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্য্যা ৪১৫জন। যাদের মধ্যে ২৪ঘন্টায় ভর্তি ৫৭ জন।
এদিকে হাসপাতালে মাত্র ২৫ বেড থাকলো সেখানে চিকিৎসা নিচেছেন ৫গুন রোগী। যে কারণে শিশুদের মেঝেতেও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা শ্রাবনী ঘোষ বলেন, আমাদের একটি বেডে ৪জন রোগী। এতে আমাদের বাচ্চাদের চিকিৎসা নিতে সমস্যা হচ্ছে। নার্গিস বেগম, শিউলি ও রাবেয়া বলেন, আমরা হাসপাতালে এসে বেড পাইনি, তাই বাধ্য হয়ে সেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচাছে।
হাসপাতালের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শিশুদের চাপ অনেক বেশি। যারা ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগ নিউমোনিয়া আক্রান্ত।
চিকিৎসকরা বলছেন হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ থাকলেও রোগীর চাপ বেশি থাকায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ নিশী পাল বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। তবে চাপ বেশি থাকায় আমাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেকে হচ্ছে। তবুও আমরা সাধ্যমত চিকিখসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে দিন দিন রোগীদের চাপ বেশি থাকায় অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়লের শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের আরও যতœবান হওয়ার আহবান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বাংলাদেশ সময়: ০:৪০:৫০   ৩১৫ বার পঠিত