শনিবার, ১১ মে ২০২৪

শেষ বয়সে আশ্রয় চান অসহায় নাহার বেগম

প্রচ্ছদ » জেলা » শেষ বয়সে আশ্রয় চান অসহায় নাহার বেগম
বুধবার, ১৪ জুলাই ২০২১



ছোটন সাহা ॥
নেই মাথা গোঁজার ঠাঁই। অন্যের বাড়িতে আশ্রয়, সেখানেই চলে জীবিকা। স্বামী মারা গেছেন ২০ বছর আগে। এরপর থেকে চরম অসহায় দিনযাপন করতে হচ্ছে তাকে। ছোট একটা ঘর ছিলো তাও ঝড়ে ভেঙে গেছে। নতুন করে ঘর তোলার সাধ্য নেই। তাই গৃহহারা হয়ে পথে পথে ঘুরছেন তিনি। এমন অভাব-অনটন আর জীবিকার অনিশ্চয়তায় দিনের পর দিন কাটাচ্ছেন নাহার বেগম।
ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ইলিশাকান্দি গ্রামের গৃহহীন জীবনে নাহারের জীবনের গল্পটা যেন এমনি। বৃদ্ধ নাহারের বয়স এখন ৮০। শরীরের নানা অসুখ-বিসুখ। দেখা শোনারও কেউ নেই। একা জীবন-যাপন করছে তিনি। দুটি মেয়ে থাকলেও তাদের বাড়িয়ে আশ্রয় হয়নি বৃদ্ধা নাহারের। নানা সংকটে দুই মেয়ের পরিবারও। তাই একাই থাকতে হয় নাহার বেগমকে।

---

কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাহার বলেন, বয়স হয়েছে, বুড়ো হয়ে গেছি, আমার দেখা শোনার কেউ নেই। সরকার বয়স্ক ভাতা দেয়, বিধবা ভাতা দেয় শুনছি। কিন্তু আমার ভাগ্যে তা জুটেনি। কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। জনপ্রতিনিধিরা কোনো খোঁজ খবর নেয় না। শেষ বয়সে চাই একটু আশ্রয়-বয়স্ক ভাতা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাহার তার এক আত্মীয়দের বাড়ির জমিতে ছোট্ট ঝুপড়ি ঘর নিয়ে স্বামী নিয়ে থাকতেন। স্বামী দিনমজুর ছিলেন। এক মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর অসুখে তার স্বামী মারা যান। বাকি এক মেয়েকে কষ্ট করে বিয়ে দেন। এরপরেই তার জীবনে নেমে আসে আরো দুর্ভোগ-দুর্দশা।
১০ বছর আগে কোনো এক ঝড়ে নাহারের শেষ আশ্রয় ঝুপড়ি ঘরটা ভেঙে যায়। নতুন করে ঘর তুলতে পারেননি তিনি। তারপর থেকেই তিনি ঠিকানাহারা। ঘুরে বেড়ান রাস্তায়, এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি। আজ এখানে তো কাল আরেক জায়গায়।
নাহার বেগম জানান, এক সময় তাদের অনেক জমি ছিলো। স¤পত্তি ছিল। সুন্দর বাড়িও ছিল। কিন্তু সর্বনাশা নদী সব কেড়ে নিয়েছে। ভোলা সদরের মধুপুর গ্রামের নাহারদের সহায় স¤পত্তি যা ছিলো তা ১০ ভাঙনের শেষ। এতে নিঃস্ব তারা। মাথায় গোঁজার ঠাঁই পেতে ৫০ বছর আগে চলে আসেন লালমোহনে। অন্যের জমিতে গড়ে তোলেন বসতি। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর নাহারের ঘরটাও যেন শেষ হয়ে গেছে। এখন নিঃস্ব নাহার বেগম। শেষ বয়সে একটা ঘর চান তিনি। বয়স্ক ভাতাও পেতে চান।
এ ব্যাপারে পশ্চিম চমেদ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ জানান, এ ধরনের কোনো গরীব মানুষ যদি থাকে, তাহলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা অবশ্যই বিষয়টা দেখবো। চেষ্টা করবো তাকে সহযোগিতা করার।
লালমোহন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল নোমান বলেন, অসহায় নাহার বেগম যাতে বয়স্কভাতা পান, একটা ঘর পান সে ব্যবস্থা করবো। তাকে বয়স্কভাতা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বে সঙ্গে দেখবো।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:১২:২৮   ৪৪৫ বার পঠিত