রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

ভোলায় ইলিশের জন্য হাহাকার, পেশা বদলাচ্ছেন জেলেরা

প্রচ্ছদ » অর্থনীতি » ভোলায় ইলিশের জন্য হাহাকার, পেশা বদলাচ্ছেন জেলেরা
বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২



বিশেষ প্রতিনিধি ॥
চলতি বর্ষা মৌসুমেও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ। নদীতে কাক্সিক্ষত ইলিশ না পেয়ে হতাশ জেলেরা। অনেকে নদীতে যাওয়া ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। বিভিন্ন এনজিওর ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপে অনেক জেলে নৌকা, জাল ও ট্রলার ফেলে রেখে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পালিয়ে গেছেন।
সরেজমিন ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি গ্রামের জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ধনিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতুলি গ্রামের জেলে মো. মিজান ও একই গ্রামের মো. ফরিদ জানান, নদীতে ইলিশ শিকার করে তারা সংসার পরিচালনা করেন। কিন্তু বর্তমানে নদীতে গিয়ে অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। যৎসামান্য যা পাওয়া যাচ্ছে তা বেচে ট্রলারের তেলের খরচই উঠছে না।

---

একই গ্রামের জেলে মো. মুসলেহ উদ্দিন বলেন, গতকাল রাতে আমরা পাঁচজন জেলে নদীতে মাছ শিকারে যাই। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাত্র তিনটি ছোট সাইজের ইলিশ পেয়েছি। ঘাটে নিয়ে তা বিক্রি করে মাত্র ৩০০ টাকা পাওয়া গেছে। এতে ট্রলারের তেল খরচও ওঠেনি। ভাগবাটোয়ারা করে আমরা টাকা নেবো কীভাবে?
দীর্ঘদিন ধরে নদীতে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় অনেক জেলে নদীতে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন বলে জানান জেলে মো. ফারুক।
তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো জেলে এই পেশা ছেড়ে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। বর্তমানে জেলের সংখ্যা কমে গেছে। নদীতে মাছ নেই তাই জেলেরা বিভিন্ন এনজিওর থেকে নেওয়া সমিতির কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। অনেক জেলে কিস্তি পরিশোধের চাপে নৌকা, জাল ও ট্রলার ফেলে রেখে ঢাকা ও চট্টগ্রাম পালিয়ে গেছেন।
ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন বলেন, বর্তমানে নদীতে ইলিশের পরিমাণ খুবই কম। তবে আগামী মাসে ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হবে। তখন জেলেরা নদীতে কাক্সিক্ষত ইলিশ শিকার করতে পারবেন।
ইলিশ গবেষকদের মতে, সারাদেশের বিভিন্ন নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ে তার প্রায় ৩০ ভাগই ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী থেকে শিকার করা। ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় আড়াই লাখ জেলে থাকলেও সরকারিভাবে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা রয়েছে প্রায় দেড় লাখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৩:২৬   ৩০৫ বার পঠিত