বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

চরফ্যাশনের কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকগুলোতে নেই তদারকি ॥ নতুন ভবনে আবর্জনার মধ্যেই স্বাস্থ্য সহকারী দিচ্ছে করোনার ভ্যাকসিন

প্রচ্ছদ » অপরাধ » চরফ্যাশনের কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকগুলোতে নেই তদারকি ॥ নতুন ভবনে আবর্জনার মধ্যেই স্বাস্থ্য সহকারী দিচ্ছে করোনার ভ্যাকসিন
সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১



চরফ্যাশন প্রতিনিধি ॥
কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, টিকাদান কর্মসূচি, পুষ্টি, স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ পরামর্শ ও বিভিন্ন সেবা প্রদান করার কথা থাকলেও কিছু মানুষের অযতœ, অনিয়ম, অবহেলা ও দুর্নীতির কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে চরফ্যাশন উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশিদের অভিযোগ। চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধীক সেবা প্রত্যাশি অভিযোগ করে বলেন, চরফ্যাশনে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেনা। প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করলেও চরফ্যাশন উপজেলার অধিকাংশ কমিউনিটি ক্লিনিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগী সেবা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একারণে সেবা নিতে আসা রোগীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে সঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় দিনের পর দিন এমন অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়াও উপজেলার মোট ৬৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে একাধীক ক্লিনিক রয়েছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। এসব ক্লিনিকে ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। অনেক ক্লিনিকে শৌচাগার নষ্ট ও অচল এবং অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি চিকিৎসক, লোকবল ও সংস্কারের অভাবে ক্লিনিকগুলোর সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।

---

স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডস্থ ওসমানগঞ্জ কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী আবর্জনার মধ্যে বসেই দিচ্ছেন করোনার ভ্যাকসিন। নবনির্মিত এ নতুন ভবনটির কক্ষগুলোতে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার স্তুপ ও টেবিলের উপর ছাগলের মলমূত্রসহ সব কক্ষই ছিল আবর্জনায় ভরা এবং শৌচাগারগুলোও রয়েছে অপরিচ্ছন্ন অবস্থায়। অস্বাস্থ্যকর এমন পরিবেশেই ক্লিনিকে আগতদের মাঝে দেয়া হয় টিকা কার্যক্রম। সংবাদকর্মীরা অপরিচ্ছন এমন পরিবেশের চিত্র ক্যামেরায় ধারণ কালে ক্লিনিকে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারি মো. গিয়াস উদ্দিন ক্ষেপে গিয়ে তাঁর খুঁটি অনেক শক্ত উল্লেখ করে বলেন, ক্লিনিক পরিস্কার পরিছন্ন রাখা আমার কাজ না। ছবি তুলে কি করবেন, আপনারা লিখে আমার কিছইু করতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, আমরা মাঠে কাজ করি। মাসে একদিন এখানে বসি। পরিবার পরিকল্পনা সহকারি সুলতানা বিউটি জানান, ময়লা আবর্জনা পরিস্কারে জনবল না থাকায় এগুলো পরিস্কার করা হচ্ছেনা। চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকসের পরিসংখ্যানবিদ সাহাবুদ্দিন মিয়া জানান, ওই ক্লিনিকটিতে সিএইচসিপি (কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার) পদে কেউ দায়িত্বে নেই। চরফ্যাশনের জন্য আরও অতিরিক্ত ৩জন সিএইচসিপি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বসাক জানান, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার সপ্তাহে ৬দিন ও স্বাস্থ সহকারী এবং এফডব্লিউএ ৩দিন করে ক্লিনিকে দায়িত্ব পালন ও ৩দিন মাঠে কাজ করবেন। কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ প্রভাইডার পদে ওই ক্লিনিকে কেউ নেই। স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার পরিকল্পনা সহকারি রয়েছে সেখানে। ক্লিনিকগুলো পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকে। ক্লিনিকগুলো পরিচ্ছন্ন না করা হলে দায়িত্ব অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৩:৩২   ৪৬০ বার পঠিত