বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

মেডিকেল চান্স পাওয়া ইশাদের পাশে ভোলা জেলা প্রশাসক

প্রচ্ছদ » জেলা » মেডিকেল চান্স পাওয়া ইশাদের পাশে ভোলা জেলা প্রশাসক
মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১



আদিল হোসেন তপু ॥
বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চান্স পাওয়া ইশাদ ইসলাম এর পাশে আরো একবার  দাড়াঁলেন ভোলা জেলা প্রশাসন। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভোলা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেডিকেল এর বই প্রস্তুক ও সরঞ্জামাদি কিনার জন্য অর্থিক অনুদান তুলে দেয়া হয় ইশাদের বাবার হাতে। জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী ইশাদের বাবা  ইকবাল হোসেন এর হাতে ২০ হাজার টাকার অর্থিক সহায়ত প্রদান করেন। এরআগে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য তাকে আরো ২০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়। দুই ধাপে ৪০ হাজার টাকার অর্থিক সহয়াত প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।

---

এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মামুন আল ফারুক, সহকারী কমিশনার ও একসিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নেজারত) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ। ইশাদ ইসলাম ভোলার লালমোহন উপজেলার ইকবাল হোসেন এর ছেলে। তার বাবা লালমোহন সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন অফিস সহকারী। তার বাসা লালমোহন পৌর সভার ৫নং ওয়ার্ডের নয়নিগ্রামে। ইশাদ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায়  মেধাক্রমে ১৮২৮তম হয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। অর্থ সঙ্কটে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পথ প্রায় বন্ধ হতে চলেছিল মেধাবী শিক্ষার্থী ইশাদ ইসলাম। তাকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে  অন্ধকার দূর কলে আলো দেখালেন ভোলা জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন ভাইবেনের মধ্যে মেঝো সন্তান ইশাদ। বাবার স্কুলের বেতনের টাকা দিয়েই পড়াশোনার খরচ চলে ইশাদের ভাইবোনদের। অল্প বেতন হওয়ায় অনেকটা আর্থিক দৈন্যতা চেপে বসলেও অদম্য সাহসের কারণে এগিয়ে যায় ইশাদ। মাধ্যমিক পাশ করেছে বাবার চাকরী করা প্রতিষ্ঠান লালমোহন মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। আর এইচএসসি পাশ করেছে ভোলা সরকারি কলেজ থেকে। কলেজে পড়া অবস্থায় ইশাদ এর স্বপ্ন ছিলো ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া। পরবর্তিতে বরিশাল মেডিকেল কলেজে পরীক্ষা দেওয়ার পরে উত্তীর্ণ হওয়য়ার পরে ভোলা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মেডিকেলে ভর্তি হয়।
ইশাদ জানান, মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার আগে অনেকটা টেনশনে ছিলাম। বাবার পক্ষে ভর্তির টাকা দেওয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে বিষন টেনশনে ছিলাম। পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় কিছুটা হতাশায় পড়তে হয় তাকে। একপর্যায়ে বাবার মাধ্যমে ভোলা জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী স্যার সেই অন্ধকার দূর করে দিলেন। মেডিকেলে ভর্তির জন্য সকল দায়িত্ব তিনি নিলেন ডিসি স্যার। এ জন্য জেলা প্রশাসকে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান।
ভোলা জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, আমার যখন শুনলাম অর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ইশাদ মেডিকেলে ভর্তি হতে পারছেনা। তখন আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার পাশে দাড়াঁনোর চেষ্টা করলাম। ইতিমধ্যে তার মেডিকেল এর ভর্তি থেকে শুরু করে বই প্রস্তুক ও সরঞ্জামাদি কিনার জন্য অর্থিক অনুদান হিসাবে দুই ধাপে ৪০ হাজার  তুলে দেয়া হয় তার বাবা ইকবাল হোসেনের কাছে। তবে প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, কোনো মেধাবী মুখ অর্থের অভাবে যেনও ঝরে পড়তে না পারে তার জন্য সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। শিক্ষা প্রসারসহ যে কোনো মানবিক সহায়তা প্রদানে ভোলা জেলা প্রশাসন প্রস্তুত আছে এবং আগামীতেও থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ০:১৭:১৬   ৫৫৬ বার পঠিত