বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ভাষা শিখনে চয়নিকা বই

প্রচ্ছদ » মুক্তমঞ্চ » ভাষা শিখনে চয়নিকা বই
রবিবার, ১১ এপ্রিল ২০২১



 ---

: মাহাবুবুর রহমান :

সঠিক হিসেব বা দিন তারিখ মনে নাই। আমার বয়োজ্যাষ্ঠ তারাতো বটেই পাশাপাশি আমার সমসাময়িক তাদের অনেকই নিশ্চয়ই ভুলে যাননি। ১৯৮০র দশক থেকে ১৯৯০ দশকের আগ পর্যন্ত পাঠ্য বইয়ের সাথে একটি অতিরিক্ত বাংলা বই বিতরণ করা হতো। বইটির নাম চয়নিকা। যত টুকু মনে পড়ে বাংলা ভাষায় মজাদার শিশুতোষ ছড়া, কবিতা ও ছোট গল্প সম্বলিত বই এটি। সে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শ্রেণিতে এই বইটি পাঠ্যবই হিসেবে তখনকার সময় প্রচলিত ছিল। যদিও পরীক্ষায় এই বই থেকে প্রশ্ন করা হতো না। মজার মজার ছড়া,কবিতা ও গল্প পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থী হিসেবে অন্যদের মত আমিও খুবই আনন্দ লাভ করেছিলাম। ওস্তাদ-শিক্ষকদের বেশি একটা পাঠদান করতে হয়নাই। বই গুলোর গুণগত মানও খুব ভাল ছিল। ছোট ছোট ছড়া, কবিতা আর গল্প। আনন্দ আর উদ্দীপনায় ভরপুর ছিল এই চয়নিকা বই। নিছক আনন্দ দানের জন্য বইটি পাঠ্য হিসেবে ছিল। শিশুমনের কৌতূহল সৃষ্টি ছিল এর মূল কাজ। অনেক দৃষ্টান্তমূলক নীতিকথার আকর্ষণীয় গল্প, হাসির ছড়া কবিতা ছিল। চয়নিকা বই পড়ে ভাষা শিক্ষার চারটি মৌলিক দক্ষতার মধ্যে অন্যতম তিনটি দক্ষতা শোনা  বলা ও পড়ার বেশ উন্নতি ঘটেছে বলে আমার ধারণা। অতিরিক্ত বই হিসেবে বোঝা বলে মনে হয়নি কখনও। বরং ভাষা শিখনের প্রতি আগ্রহ প্রবল ছিল। মাতৃভাষা বাংলা চর্চার একটি মাধ্যম হিসেবে বেশ কাজ করেছে বলে মনে হচ্ছে। হাস্যরস্যের গল্প, কবিতা ও গল্পে মনের আনন্দের খোরাক যুগিয়েছিল। কেবল যে শোনা বলা ও পড়ার দক্ষতার উন্নয়ন হয়েছে তা কিন্তু নয়। পাশাপাশি লেখার দক্ষতা অর্জিত হয়েছিল অনেক। ভাষা শিখনের চারটি মৌলিক দক্ষতা একই মোহনায় মিলিত না হলে ভাষা শিখনের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো অসম্ভব। এ জন্য ভাষা চর্চা বা অনুশীলন অত্যাবশ্যক। মাতৃভাষা বাংলা বেশি বেশি চর্চা বা অনুশীলনের উপায় হিসেবে একটি বাড়তি বই থাকা মন্দের কী আছে? পরীক্ষা বহির্ভূত বই থাকলে শিক্ষার্থীরা তা আর বোঝা হিসেবে না নিয়ে বরং আনন্দ চিত্তে গ্রহণ করবে। বিকাশমান শিশু স্বাভাবিক নিয়মে ভাষা আয়ত্ত করে থাকে। শিশুর কল্পনা ও স্বকীয়তার বিকাশ ঘটানোর জন্য পাঠ্যবই হিসেবে না হোক, অন্তত এস আর এম হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে শিশুদের মাঝে বিতরণ করা যেতে পারে।  বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদেরকে এসআরএম বিতরণ করা হচশিশুতোষ বিভিন্ন বই-পুস্তক সমাহারের মধ্যে চয়নিকা বইটিও স্থান লাভ সময়ের দাবি বলে মনে করি।
লেখকঃ মাহাবুবুর রহমান
সহকারী শিক্ষক, ১৬নং চরপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
ভোলা সদর, ভোলা।
মোবাঃ ০১৭১৪৬৯৬৭১৩

Mahabubbho75@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ২০:০৭:৫৬   ৬১৯ বার পঠিত