শনিবার, ১১ মে ২০২৪

তজুমদ্দিনে স্কুলের ভবন দখল করে প্রধান শিক্ষকের বসবাস

প্রচ্ছদ » অপরাধ » তজুমদ্দিনে স্কুলের ভবন দখল করে প্রধান শিক্ষকের বসবাস
শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১



স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার ফজিলাতুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনের দ্বিতীয় তলা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে করে  বসবাস করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বেল্লাল হোসেন। তিনি কোন টেন্ডার বা নিলাম না ডেকে বিদ্যালয়ের অপর ভবনের একাংশ ভেঙ্গে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক অবশ্য দাবি করেছেন,তৎকালীণ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তিনি।
জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে বিদ্যালয়ের একটি ৩য়তাল ভবনের দ্বিতীয়তলা অবৈধ ভাবে দখল করে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। বিদ্যালয়ের ভবন দখল করায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় অভিভাবকরা। এ ছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠ কোন নিলাম ছাড়াই সরকারি বিধি-বিধান/পরিপত্র অনুসরণ না করে নতুন ভবন নির্মাণের কারণ দেখিয়ে বিদ্যালয়ের  পুরাতন এ ভবনের একাংশ ভেঙ্গে বিক্রি করে বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
বিদ্যালয় সূত্র  জানা যায়, তজুমদ্দিন উপজেলায় অবস্থিত ফজিলাতুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য একটি একতলা, একটি দ্বিতীয় তলা এবং একটি ৩য়তলা ভবন থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অসুবিধা ও বিলম্ব ঘটায় ওই বিদ্যালয়ের জন্য নতুন একটি ৫ম তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণের বরাদ্দ হয়।
ভবনের নির্মাণের কাজপান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এস এমপি। কিন্তু বরাদ্দের পরে ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণের ঝামেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের পাশের খালি স্থানে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে, নতুন ভবনের আরো জায়গার প্রয়োজনীয়তা দেখিয়ে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয়তল ভবনের ছাদ সহ একাংশ ভেঙ্গে বিক্রি করা হয়।
বিদ্যালয়ের ভবনের ২য় তলা দখল করে বসবাস করার বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বেল্লাল হোসেন জানান, আমি ২০১৭ সালে মৌখিক ভাবে তৎকালীণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জালাল আহমেদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি। তার অনুমতিতেই পরিবার নিয়ে বিদ্যালয়ে বসবাস করছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন।
আর বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙ্গে বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, ভোলা জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পরামর্শক্রমে শিক্ষক পরিচালনা কমিটির একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে ভবনের একাংশ ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। সে অনুযায়ী ভবনের একাংশ ভাঙ্গা হয়েছে।
এদিকে তজুমউদ্দিন উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মরিয়ম বেগম জানান, আমি এই উপজেলায় নতুন এসেছি। বিষয়টি আমার জানা ছিলো না, আপনাদের কাছে বিষয়টি জেনেছি। উনি এখনে কিভাবে থাকছেন বিষয়টি খোজ নেবো।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাধব চন্দ্র দাস জানান, প্রধান শিক্ষক কেন ক্লাস রুমে বসবাস করবেন। এ বিষয়ে আমি অবগত নই। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলা হবে।
তিনি আরও বলেন, ভবন ভাঙ্গার বিষয়ে আমাকে অবগত করা হয়নি। সরকারি বিধি বিধান পরিপত্র অনুসরন না করে ভবন ভাঙ্গা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত কাজ। আমি বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৮:৫৬   ৩০৬ বার পঠিত