স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতায় শিক্ষার্থীদের টিকাদানে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। টিকা দিতে না পেরে রবিবার শিক্ষার্থীরা টিকা কেন্দ্রে ভাংচুর চালায় এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঘোষনা অনুযায়ী ১২-১৮ অনুর্ধ্ব বয়সে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার লক্ষে ভোলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্র্থীদের করোনার টিকা দেওয়ার জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর ১ম পর্যায়ে টিকা প্রদানের জন্য জেলা পরিষদ কার্যালয়ে মেয়ে শিক্ষার্থী এবং জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অফিসে ছেলে শিক্ষার্থীর জন্য স্থান ঠিক করা হয়। কিন্তু প্রথম দিনেই টিকাদান কার্যক্রমে হ-য-ব-র-ল অবস্থার দেখা দেখা দেয়।
১৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ৯টায় শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান করার কথা থাকলে ও তা শুরু হয় অনেক পরে। কিন্তু প্রথমদিনেই ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে এসে শিক্ষার্থীদের পরতে হয়েছে অনেক সমস্যার সম্মূখীন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের টিকার সকল তথ্য স্বাস্থ্য বিভাগে প্রেরন করার কথা থাকলেও বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই তা প্রেরণ করেনি। যার ফলে শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিন নিতে এসে জটিলতার কারণে টিকা না দিয়ে ফেরত যেতে দেখা গেছে এমনটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি রবিবার ১৪ সেপ্টেম্বর টিকা দিতে না পেরে জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী অফিসে টিকা কেন্দ্র ভাংচুর চালায় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জেলা শিক্ষা অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যেকসল শিক্ষার্থী টিকা পাবে তাদের তথ্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে প্রেরণ করার কথা রয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠানই এসকল তথ্য স্বাস্থ্য বিভাগে প্রেরন করেননি। এছাড়াও শিক্ষা অফিস থেকে স্বাস্থ্য বিভাগকে বলা হয়েছে শুধুমাত্র এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবার আগে টিকা দেওয়ার জন্য। তারপর অন্যান্য শিক্ষার্থীরা করোনার টিকা পাবে। কিন্তু এরকম কথা থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১২-১৮ অনুর্ধ্ব বয়সের সকল শিক্ষার্থীদের টিকাগ্রহণ করতে পারবে বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘোষণা করলে শিক্ষার্থীরা একত্রে এসে টিকাকেন্দ্র ভীড় করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। যার ফলে যেভাবে টিকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা জানান, এধরনের কোন আমাদেরকে শিক্ষা অফিস থেকে দেওয়া হয়নি এমন কি শিক্ষা অফিস থেকে কোন চিঠি আসেনি বলে অভিযোগ করে।
এদিকে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের অভিভাকরা জানায় জেলা শিক্ষা অফিস ও স্বাস্থ্য বিভাগের খামখেয়ালীপনার কারণে টিকা নিতে আসা ছেলে মেয়েরা চরম ঝূঁকির ভীতরে টিকা দিতে হচ্ছে। এমনকি টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীদের নেই কোন সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক সুরক্ষা সামগ্রী। নেই টিকা দেওয়ার পর বসার পরিবেশ। যার ফলে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য নিরাপদের চেয়ে ঝূঁকির ভীতরে পরতে হচ্ছে।
এদিকে শিক্ষা প্রকৌশলী অফিসে টিকা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ১২-১৮ বছরের শিক্ষার্থীরা টিকা পাবার কথা বলে আমাদের ৯টায় দার করিয়ে রেখে দুপুর ১টার দিকে টিকা কেন্দ্র থেকে ঘোষণা আসে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্য কাউকে টিকা দেওয়া হবে না। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কেন্দ্র ভাংচুর করে।
এব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন জানান, কেন্দ্র ভাংচুর ও বিশৃঙ্খলার কারণে সাময়িকভাবে শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩০:৩৩ ২৮৮ বার পঠিত