শনিবার, ১১ মে ২০২৪

মনপুরায় মার্কেটিং ব্যবসার আড়ালে কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করছে ইনসাফ ॥ আমানত ফিরে পেতে গ্রাহকদের বিক্ষোভ

প্রচ্ছদ » অপরাধ » মনপুরায় মার্কেটিং ব্যবসার আড়ালে কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করছে ইনসাফ ॥ আমানত ফিরে পেতে গ্রাহকদের বিক্ষোভ
শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০



মনপুরা প্রতিনিধি ॥
ভোলার মনপুরায় মার্কেটিং ব্যবসার আড়ালে নি¤œ আয়ের মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি টাকা টাকা আমানত সংগ্রহ করছে ইনসাফ মার্কেটিং কোম্পানী লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। উপজেলার হাজিরহাট, ফকিরহাট ও বাংলাবাজার শাখা অফিস খুলে তিনশত, পাঁচশত ও একহাজার টাকা মাসিক কিস্তিতে দুই বছর ও তিন বছর মেয়াদী ডিপিএস এর নামে আমানতের টাকা সংগ্রহ করেছে ওই মার্কেটিং কোম্পানীটি। যেকোন সময়ে ওই কোম্পানীটি গ্রাহকদের আমানতের টাকা মেরে চলে যেতে পারে বলে আশংকা স্থানীয়দের।

---

নি¤œ আয়ের ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দ্বিগুণ লাভের লোভ দেখিয়ে আমানতের টাকা সংগ্রহ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী শতাধিক নারী ও পুরুষ গ্রাহক। এমনকি গ্রাহকদের ডিপিএস এর মেয়াদ ছয় মাস থেকে বছর পেরিয়ে গেলেও ৮ থেকে ১০ বার ইনসাফের ফকিরহাট অফিসে গিয়ে আমানতের টাকা পাননি শতাধিক গ্রাহক।
পরে গত বুধবার বিকালে গ্রাহকরা আমানতের টাকা ফিরত পেতে বিক্ষোভ করলে অফিস তালাবন্ধ করে অফিসের দায়িত্বে থাকা শামীম মাষ্টার পালিয়ে যায়। পরে নারী গ্রাহকরা ওই অফিসের দায়িত্বে থাকা শামীম মাষ্টারের বাড়িতে গেলে তিনি দেখা করেনি।
তবে মুঠোফোনে শামীম মাষ্টার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বুধবার গ্রাহকদের আমানত ফিরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষ না আসায় টাকা দিতে পারিনি।
এদিকে বুধবার বিকালে বিক্ষোভ চলাকালে গ্রাহক অসুরা খাতুন, তাজরা বেগম, অহিদা বেগম, শাহজাহান, আল-আমিনসহ শতাধিক গ্রাহক জানান, আমরা খাইয়া না খাইয়া ডিপিএস টাকা শামীম মাষ্টারের কাছে দিছি। ডিপিএস এর মেয়াদ ৬ মাস শেষ হইয়া গেছে কিন্তু ওরা কোন টাকা দেয়না। আজ (বুধবার) শেষ তারিখ ছিল কিন্তু অহন অফিসে আইসা দেখি তালা মারা।
জানা যায়, ইনসাফ মার্কেটিং লিমিটেড প্রথমে রিমটাচ্ নামে অফিস খুলে। পরে খেটে খাওয়া মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দ্বিগুণ লাভের লোভ দেখিয়ে ৩ শত, ৫ শত ও একহাজার টাকা ডিপিএস এর নামে আমানত সংগ্রহ করে।  কোম্পানীটি মানুষদের কিস্তিতে ফ্রিজ, জাল, সেলাই মেশিন, খাট বিক্রি নামে ভিতরে ভিতরে ডিপিএস এর নামে আমানত সংগ্রহ করছে।
এই ব্যাপারে হাজিরহাট মডেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, ইনসাফ মার্কেটিং কোম্পানী লিমিটেডের আমানত সংগ্রহ করার সরকারি অনুমতি আছে কিনা। যদি অনুমতি না থাকে তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী, তা নাহলে যে কোন সময় গ্রাহকদের আমানতের টাকা নিয়ে পালিয়ে যেতে পারে কোম্পানীটি। এতে ক্ষতির মুখে পড়বে উপকূলের সাধারন মানুষ। একই দাবী করছেন স্থানীয়রা।
এই ব্যাপারে ইনসাফ মার্কেটিং কোম্পানী লিমিটেডের মনপুরা উপজেলা দায়িত্বরত কর্মকর্তা মাও.মহিবুল্লাহ জানান, আমরা মার্কেটে কিস্তিতে পন্য বিক্রি করেছি। এতে করোনার জন্য টাকা উঠাতে পারেনি। গ্রাহকদের পাওনা টাকা দিয়ে দিবো। কিন্তু মাসিক ৩ শত, ৫ শত ও একহাজার টাকা কিস্তিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করছেন এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।

বাংলাদেশ সময়: ১:০১:৪৯   ৪৩১ বার পঠিত