ভোলায় ‘হোটেল হাবিব’-এর মালিকানা রহস্য! আদালতে জাল জালিয়াতির মামলা, তদন্তে সিআইডি

প্রচ্ছদ » অপরাধ » ভোলায় ‘হোটেল হাবিব’-এর মালিকানা রহস্য! আদালতে জাল জালিয়াতির মামলা, তদন্তে সিআইডি
মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫



---

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ভোলায় আলোচিত ‘হোটেল হাবিব’-এর জমির মালিকানা নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য। পৈতৃক সম্পত্তি দখল ও জাল জালিয়াতির অভিযোগে ভোলা সদর উপজেলার জামিরালতা, মিয়াবাড়ী (বাপ্তা) এলাকার বাসিন্দা মো. শামীম আহমেদ মৃত হাবিব মিয়ার পুত্র ফেরদৌস ওয়াহিদ (সাদি)সহ ঐ পরিবারের ৫ সদস্যকে আসামী করে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ভোলার বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দন্ডবিধির ৪৬৭,৪৬৮,৪৭১ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।

বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বাংলাদেশ সিআইডিকে ঘটনাটির সত্যতা তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীর অভিযোগে বলা হয়, তাঁর পূর্বপুরুষ আব্দুল করিম হাওলাদার ভোলা জেলার চরজংলা মৌজায় মোট ১০.৯৯ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন। পরবর্তীতে উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁর সন্তান গোলাম কাদির এবং গোলাম কাদিরের তিন পুত্র লুৎফুর রহমান, হাবিবুর রহমান ও নাছির আহমেদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ হয়। বাদীর পিতা নাছির আহমেদ আইনানুগভাবে তাঁর অংশ ভোগদখল করলেও আসামীদের পূর্বপুরুষ মৃত হাবিবুর রহমান তালুকদার ১৯৬৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে একটি ভুয়া ও জাল দলিল তৈরি করে উক্ত জমি দখল করেন।

দলিলে উল্লেখ করা হয়, সম্পত্তিটি “হাজী আব্দুল করিম ওয়াকফে স্টেট, ভোলা (ইসি নং১৪১৬)” এর অন্তর্ভুক্ত এবং “মৌলভী কয়ছর আহম্মদ মিয়া” নামে এক ব্যক্তিকে দাতা হিসেবে দেখানো হয়।

দলিলে “ভাক্ত মিস কেস নং ২৫০/৬৭” ও “বিক্রয় অনুমতিপত্র নং ৩৮৪০” এরও উল্লেখ করা হয়, যা পরবর্তীতে সম্পূর্ণ অস্তিত্বহীন প্রমাণিত হয়।

বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসকের কার্যালয় ২০১৬ সালের ২১ জুন স্মারক নং ওঃপ্রঃবহিঃ ৩৫৭ এর মাধ্যমে লিখিতভাবে নিশ্চিত করে যে, উক্ত মিস কেস ও বিক্রয় অনুমতিপত্রের কোনো রেকর্ড বা অস্তিত্ব নেই।

বাদী মো. শামীম আহমেদ বলেন, “আমার পৈতৃক সম্পত্তি মিথ্যা ওয়াকফের নাম দেখিয়ে দখল করা হয়েছে। সেই জায়গাতেই আগে ‘হোটেল হাবিব’ ছিল, যা বর্তমানে ‘হাবিব মার্কেট’ নামে পরিচিত। সরকারি দপ্তরের প্রতিবেদনেও দলিলটি জাল প্রমাণিত হলেও তারা এখনো জায়গা ছাড়ছে না।”

বাদী আরও জানান, প্রভাবশালী আসামিদের কারণে মামলা দায়ের ও নথিপত্র সংগ্রহে সময় লেগেছে। তবে এখন তিনি আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন এবং আইনগতভাবে জমি পুনরুদ্ধারের আশায় রয়েছেন।

আসামি করা হয়েছে ফেরদৌসি বেগম (রুনু), ফেরদৌস ওয়াহিদ (সাদি), উম্মে হাবিবা (সপ্না), আমেনা বেগম (স্বর্ণা) ও এলেমজান বিবি (কনক)কে। সকলেই ভোলা পৌরসভার ইলিশা সড়কের বকুলতলা মসজিদ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা।

আদালতের নির্দেশে এখন সিআইডি ঘটনাটি তদন্ত করছে। স্থানীয়দের মতে, ভোলার অন্যতম পরিচিত ব্যবসাকেন্দ্র হাবিব মার্কেটের জমির প্রকৃত মালিকানা সম্পর্কিত সত্যতা সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরই স্পষ্ট হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২:১৭:৫১   ২৬০ বার পঠিত  







পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


ভোলায় নগদ টাকা-স্বর্ণ অলংকারসহ গৃহবধু উধাও, মামলার হুমকি
ভোলায় জমি নিয়ে বিরোধ: প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে হয়রানির অভিযোগ
ভোলা ও বরগুনায় কোস্টগার্ডের পৃথক অভিযানে ইয়াবা-গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক
ছেলের প্রতারণায় জমি হারালেন মা, ঘরে আগুন বিচার চান মনোয়ারা
চরফ্যাশনে আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামী জসিম গ্রেফতার
চরফ্যাশন লঞ্চঘাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, যাত্রীদের ক্ষোভ
মনপুরার মেঘনায় যৌথ অভিযানে নিষিদ্ধ চাই ও মটকা জব্দ
ভোলা ও পাথরঘাটায় পৃথক অভিযানে ইয়াবা, গাঁজা ও নগদ অর্থসহ ৩ মাদক কারবারি আটক
ভোলায় গাঁজাসহ দুই কারবারীকে আটক
ভোলায় কোস্ট গার্ডের অভিযানে গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক



আর্কাইভ