স্টাফ রিপোর্টার।।
ভোলা দক্ষিণবঙ্গ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ১০তম ব্যাচের ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জমকালো আয়োজনে বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৫ই জুলাই) দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ইনস্টিটিউটের হলরুমে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লিলুফার ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভোলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ইস্রাফিল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান, পরিবার উন্নয়ন সংস্থার মাইক্রো ফিন্যান্সের পরিচালক জাকির হোসেন, মোহনা টেলিভিশনের ভোলা প্রতিনিধি সাংবাদিক জসিম রানা ও তরুণ উদ্যোক্তা ট্রাস্ট অটোমেশন টেকনোলজির পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার পিয়াস মল্লিক, ভোলা জামিরালতা দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওঃ মফিজুল ইসলাম প্রমূখ৷
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান আরম্ভ করা হয়। এরপর বিদায়ী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মৃতিচারণ, আবেগঘন বক্তব্য ও শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, শিক্ষার্থীদের কবিতা, গান ও নৃত্য পরিবেশন।অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট, শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন অতিথিরা৷ পরে শিক্ষার্থীদের হাসি-কান্না মিলিয়ে অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে এক আবেগঘন স্মৃতিময় দিন।
এসময় প্রধান অতিথি প্রফেসর মো. ইস্রাফিল বলেন, “আমরা এখন এমন এক সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে দেশের অগ্রগতি আর উন্নয়নের চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে কারিগরি শিক্ষা ও দক্ষতা। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের শুধু সাধারণ শিক্ষা নয়, প্রযুক্তিনির্ভর বাস্তবমুখী শিক্ষার দিকেও জোর দিতে হবে। আর সেই জায়গা থেকেই কারিগরি শিক্ষা সবচেয়ে বড় অবদান রাখতে পারে। কারিগরি শিক্ষা মানে কেবল একটি ডিপ্লোমা বা একটি সার্টিফিকেট নয়—এর মানে হলো, একজন শিক্ষার্থী বাস্তব জীবনে কাজ করার মতো যোগ্যতা অর্জন করছেন। তিনি শুধু পুস্তকগত জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ নন, বরং হাতে-কলমে কাজ করতে সক্ষম একজন দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হচ্ছেন। আমরা যদি দেশের উন্নত শিল্পখাত, নির্মাণ খাত, কৃষি বা তথ্য প্রযুক্তির দিকে তাকাই, তাহলে দেখবো—এই সব খাতে সবচেয়ে বেশি চাহিদা দক্ষ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত কর্মীদের। সরকারও আজ শিল্পায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
বিশেষ অতিথি কৃষি কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান বলেন, কারিগরি শিক্ষার সবচেয়ে বড় দিক একজন শিক্ষার্থীকে শুধু চাকুরী পাওয়ার যোগ্য করে তোলে না, এমনকি নিজেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে শেখায়। শুধু চাকুরীর পেছনে না ছুটে, একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে উদ্যোক্তা। এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে আমাদের দেশেই।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ লিলুফার ইয়াসমিন বলেন, “প্রতিটি বিদায় কিছুটা আবেগের, কিছুটা গর্বের। বিদায়ী ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যেমন আমাদের গর্ব, তেমনই তাদের সফলতা আমাদের ভবিষ্যতের প্রেরণা।”
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রাণবন্ত পরিবেশে দিনব্যাপী আয়োজনে ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণ ছিল উৎসবমুখর। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন একাডেমিক ইনচার্জ ইঞ্জিঃ মো. বেল্লাল নাফিজ ও ইন্সট্রাক্টর সমীর চন্দ্র রায়৷
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৩:০৯ ১৪৭ বার পঠিত