
স্টাফ রিপোর্টার ॥
ইন্ট্রাকো সিএনজি লিমিটেডের কর্মকর্তার নেতৃত্বে শতাধিক দুষ্কৃতিকারী অস্ত্রসস্ত্রসহ ১২টি কাভার ভ্যান যোগে ভোলা থেকে গ্যাস নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ছাত্র-জনতার প্রবল বাঁধার মুখে তাদের গ্যাস নেওয়ার অবৈধ চেষ্টা ব্যার্থ হয়। তাদের এই অবৈধ কার্যক্রমে বাঁধা দিলে ইন্ট্রাকো সিএনজি লিমিটেডের কর্মকর্তা ছাত্র-জনতাকে হুমকি দেন। মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাতে ভোলা সরকারি স্কুলমাঠ ও ইলিশা সড়কের ভোটের ঘর এলাকায় গাড়িগুলো আটক করা হয়। পরে সেগুলো এনে ভোলা সরকাটি স্কুল মাঠে রাখা হয়। বুধবার পর্যন্ত সেগুলো সরকারী স্কুল মাঠে রয়েছে বলে ‘আমরা ভোলাবাসী’ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।
জানা যায়, ভোলার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেয়া, গ্যাস ভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপনসহ ৫ দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন ‘আমরা ভোলাবাসীর’ ব্যানারে ছাত্র-জনতা।
আন্দোলনকারীদের দাবি না মানা পর্যন্ত ভোলার গ্যাস অন্যত্র নিতে দেবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিত কয়েক দফা গাড়ি আটকের পর সর্বশেষ গত ২৪ মে গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং কো¤পানির স্থানীয় ডিপো অফিসে তালা মেরে দেয়া হয়। এর পর গ্যাসবাহী গাড়ি বন্ধ রাখা হয়।
এ দিকে মঙ্গলবার রাতে একযোগে ১২টি গাড়িতে করে গ্যাস ঢাকা নেয়ার পথে ছাত্র-জনতার বাধার মুখে পড়ে। তারা ঢাকাগামী ৭টি গাড়ি সরকারি স্কুলমাঠে ও ৫টি গাড়ি ইলিশা সড়কে আটকে রাখেন।
আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করতে দেবেন না বলে ঘোষণা দেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, গ্যাস সরবরাহের জন্য ভোলা পৌরসভা ও বোরহানউদ্দিন পৌর এলাকায় সুন্দরবন গ্যাস কো¤পানি প্রায় ৫০ কিলোমিটার সংযোগ পাইপ বসিয়েছে। ওই লাইন দিয়ে প্রায় ২০ হাজার পরিবারকে গ্যাস সংযোগ দেয়া সম্ভব। মাত্র ২ হাজার ৩৫ জন গ্রাহককে সংযোগ দেয়ার পর বন্ধ ঘোষণা করে সরকার ভোলার গ্যাস এলপিজি আকারে সিলিন্ডারে করে কম দামে ঢাকা গাজিপুর নিয়ে ব্যবহার করছে।
এ প্রক্রিয়াকে বৈষম্য বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বৈষম্য দূর করে ভোলার গ্যাস দিয়ে ভোলার উন্নয়নের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করছেন এলাকাবাসী। তার ধারাবাহিকতা মঙ্গলবার রাতের গাড়িগুলো আটক করা হয়।
এদিকে, এ ব্যাপারে ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে আমরা ভোলাবাসীর নেতৃবৃন্দ মতবিনিময় করেছেন। বুধবার (২ জুলাই) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, আমরা ভোলাবাসীর আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব গোলাম নবী আলগীর, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক, হেলাল উদ্দিন, মোবাশ্বেরুল হক নাঈম, তরিকুল ইসলাম, এডভোকেট সাহাদাত শাহিন, সদস্য সচিব মীর মোশারেফ অমি, সদস্য মোঃ রাহিম, মেহেদী হাসানসহ ছাত্র নেতৃবৃন্দ।
এসময় আমার ভোলাবাসী নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্র-জনতাকে হুমকি দিয়ে ইন্ট্রাকো কোম্পানির কর্মকর্তারা গ্যাস নেওয়ার চেষ্টা করে। ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উস্কানিমূলক আচরণ প্রতিহিত করে। যার ফলে তারা ভোলা থেকে গ্যাস নিতে ব্যার্থ হয়। ইন্ট্রাকো সিএনজি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর জন্য আত্মঘাতি যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে তার দায় “আমরা ভোলাবাসী” সংগঠনের উপর চাপানোর আশংকা রয়েছে। ভোলাবাসী তাদের দাবী নিয়ে দীর্ঘদিন যে আন্দোলন করেছে তা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ইন্ট্রাকো কোম্পানির গ্যাস যাতে ভোলার বাহিরে না নেওয়া হয় সে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবগত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২:৪৪:৫৫ ৭০ বার পঠিত