ভোলায় প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে প্রতারণা করে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

প্রচ্ছদ » অপরাধ » ভোলায় প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে প্রতারণা করে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ
বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫



---

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় নারীর উপর হামলা ও মোকাম দৌলতখানের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ছিনতাই ও লুটের মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ মোঃ আবু বক্কর ছিদ্দিক (৩৪) পিতা- মোঃ মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সি.আর কেস নং-১৪৫/২০২৫ (দৌঃ)।

এ বিষয় মামলার প্রধান আসামি করা মোঃ আনোয়ার জানান, আমি বাংলাবাজার মার্কেটে কসমেটিক দোকান করি মসজিদ মার্কেটে একটি দোকানে হৈ-চৈ শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বাজার কমিটির সহসভাপতি সাইফুল তালুকদারের সাথে গিয়ে শুনি এক মহিলা আবু বক্কর সিদ্দিকের দোকানে ঢুকে পাওয়া টাকা চাচ্ছে। মহিলার স্বামী নাকি দোকানদার থেকে ২২ লাখ টাকা পাবে। দোকান্দার ও স্টাফ মিলে মহিলাকে মারধর করে। তার দোকানে সিসি ক্যামেরা আছে সেখানে সব ভিডিও আছে। আমি যদি লুট করি তাহলে তার সিসি ক্যামেরায় সব ভিডিও দেখাক। ঘটনার দিন ফাঁড়ীর পুলিশ এসে মহিলাকে উদ্ধার করে সিদ্দিক কে ফাড়ীতে নিয়ে যায়।পরে শুনি বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেছে।

১ মাস পর এখন শুনি আমি নাকি তার দোকান থেকে ২০ টি শাড়ি চুরি করছি,তাই মামলা দিছে। এটা রীতিমতো হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়। আমি এমন হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার চাই।

মামলার বিষয়ে মামলার ২ নং আসামি করা রিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী সৌদি প্রবাসী মোঃ কামাল হোসেন, বিদেশে থাকাকালীন সময় গত ২০২২ সালে ব্যবসার কাজের জন্য নগদ ৪১,০০,০০০/- (একচল্লিশ লক্ষ) টাকা স্টা¤পমূলে আবুবকর সিদ্দিক কে দেয়। আমার স্বামীর নিকট হইতে টাকা নেওয়ার পর আবুবকর সিদ্দিক আমাদেরকে ব্যবসার কাজে না রেখে বিভিন্নভাবে ঘুরাইতে থাকে। আমি বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের অবগত করিলে তারা বিষয়টি একাধিকবার মিমাংসা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সিদ্দিক তাহাদের কোন কথায় কর্নপাত না করে আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শণ করে আসতেছে। ৩ জুন ২০২৫ মঙ্গলবার সকাল অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় আমি সহ আরো ৩ জন সিদ্দিকের নিকট আমাদের পাওনা টাকা চাইতে গেলে সে আমাকে দেখা মাত্রই গালমন্দ করতে থাকে।

তখন মোঃ আবুবকর সিদ্দিক (৩৮) ও মোঃ মাফুজুল হক (২৫) পিত্য-মফিজুল হক খান, মোঃ মফিজুল হক খান (৬০), পিতা-মৃত আব্দুল হাশিম খান, মোঃ অলিউল্লাহ (২৫)পিতা-মোঃ আব্দুল খালেক,জয়নগর ০৮নং ওয়ার্ড, মোঃ সনজিদ (২৫) মোঃ এনামুল হক (২০) তারা বে-আইনী ভাবে দেশীয় অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া হাতে লোহার রড ও এসএস পাইপসহ আমাদেরকে এলোপাথারী মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা জখম করে। তখন আমরা ডাক চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে আসে সকলের সামনে তারা আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে। পরে বাংলাবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। এবং সিদ্দিক কে নিয়ে আটক রাখে।

পরে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জিল্লুর রহমান উভয় পক্ষ এক করে সমজতা করে দেন। এবং ঈদের ১০ দিন পর আমাদের পাওনা ২২ লাখ টাকা দিবে বলে সিদ্ধান্ত করেন। কিন্তু ২২ লাখ টাকা না দিয়ে ৫ লাখ টাকা দেন সিদ্দিক। বাকি টাকা প্রতি মাসের ২৫ তারিখে ৩ লাখ করে কিস্তিতে দিবে বলে।

এখন আবার শুনি আমাদের নামে মোঃ আবু বক্কর ছিদ্দিক বাদি হয়ে একটি হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা করেন। আমাদের টাকা নিয়ে অংশীদার ব্যবসা করবে বলে ব্যবসায় না রেখে, আমাদের মারধর করে এখন আবার আমাদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা দেন। আমি এর তিব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

মামলায় আবুবকর সিদ্দিক বাদি হয়ে, মোঃ আনোয়ার (৩৫) পিতা- মৃত আবুল কালাম, রিমা বেগম (৩৫) স্বামী- মোঃ কামাল হোসেন, মোসাঃ ছিমিকা (২৫) স্বামী- মোঃ আলাউদ্দিন, বিবি হাওয়া (৫০) স্বামী- সিরাজ সহ রেহেনা বেগম (২৫) পিতা- মোঃ সেলিম মোট ৫ জন কে আসামি করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার ৩ জুন ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাংলাবাজার মসজিদ মার্কেটে এমন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রিমা বেগম বাদী হয়ে দৌলতখান থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার সময় বাংলাবাজার ফাড়িতে ফোন দিলে সেখান থেকে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।

রিমাসহ কয়েকজন দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকসে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে সিদ্দিককে আটকিয়ে থানায় নিয়ে যায়, উভয় মিমাংসা হলে আবার ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে মামলার বাদি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তারা আমার পারিবারিক আপতিও। কামাল আমার খালাতো ভায়রা পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে আমাকে ধাপে ধাপে মোট ৪১ লক্ষ টাকা দেন। আমি ব্যাবসা অনুযায়ী তাদের লভ্যাংশ দিয়ে থাকি। সেদিন ৩ জুন ঈদের কিনা কাটার সময় রিমা বেগম আমার দোকানে এসে টাকা চাইলে আমাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে আমি ঘটনার পর ৫ লাখ টাকা দিয়েছি বাকি টাকা কিস্তিতে দিয়ে দিবো। তাদের সাথে মিমাংসার আগে মামলা করেছি কোন সমন জারি করা হয় নি আমি মামলা তুলার জন্য আবেদন করবো।

মার্কেটের সিসি ক্যামেরা ব্যবসায়ী ও টেকনিশিয়ান ম›জু জানান, ঘটনার পর সিদ্দিক ভাই আমাকে জানায় তার দোকানের সিসি ক্যামেরায় সমস্যা ফরমেটে দেওয়ার জন্য, তাই আমি তার দোকানের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ডিলিট করে দেই।

এ ঘটনায় মার্কেট কমিটির সহ-সভাপতি সাইফুল তালুকদার জানান ঘটনা শুনে আমি এসেছি বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। আবার সিদ্দিক যে মামলা করেন তা তার ভুল বুজাবুজি। সে দিল লুট কিংবা টাকা নেওয়ার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। যদি এমন কোন ঘটনা ঘটতো তাহলে সেদিন সে বলতো।

এ বিষয়ে বাংলাবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক জানান, ঘটনার দিন পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে দোকানদার কে ফাড়িতে নিয়ে আসে পরে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জিল্লুর রহমান উভয় পক্ষকে ডেকে সমাধান করে দেন। তবে ঘটনার দিন লুট বা চুরি এমন কিছু ঘটছে বলে জানা যানা যায় নি।

এই বিষয়ে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, থানায় অভিযোগ পেয়েছি। নতুন করে কোর্টে মামলা হলে তদন্ত আসলে দেখা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২:৪১:২৫   ৫৩ বার পঠিত  







পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

অপরাধ’র আরও খবর


তেতুলিয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: দুইজন আটক, চারটি ড্রেজার জব্দ
ভোলায় ৭ কোটি টাকার কারেন্ট জাল-পলিথিন-সিগারেট জব্দ
তজুমদ্দিনে নেত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, বিএনপি নেতা বহিষ্কার
তজুমদ্দিনে গৃহবধূ ধর্ষণ ছাত্রদল-শ্রমিক দলের তিন নেতা বহিষ্কার, গ্রেপ্তার-১, মির্জা ফখরুলের নিন্দা
ভোলায় প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে প্রতারণা করে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ
মনপুরায় জালের গোডাউনে এক ছাত্রকে বলাৎকার
তজুমদ্দিনে চাঁদার দাবিতে স্বামীকে নির্যাতন ও স্ত্রীকে গণধর্ষণ মামলা দায়ের, আটক-১
ভোলায় জেলেদের ট্রলারে জলদস্যুদের হামলা, আহত ৪
ভোলায় ফিল্ম স্টাইলে ডিম বিক্রেতার উপর হামলা, আটক-৩
নিষেধাজ্ঞা অমান্য: মেঘনার ডেঞ্জার জোনে চলছে নিষিদ্ধ নৌযান



আর্কাইভ